অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত

0
.

আজ পবিত্র শবে বরাত। আরবিতে এ রাতকে বলা হয় লাইলাতুল বারাত বা মুক্তির রজনী। সারা বিশ্বে ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত। নিজ নিজ গুনাহ মাফের আশায় আল্লার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও বিশ্ব মুসলিম উম্মার শান্তি-সমৃদ্ধি কামনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে সৌভাগ্যের রজনী পবিত্র শবে বরাত।

এ রাতে ইবাদত ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মুসলমানরা পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে আকুতি জানায়। সারা রাত ইবাদতে মগ্ন থাকে। আল্লাহর রহমত, বরকত ও মাগফিরাত কামনা করে। দুঃখ-বঞ্চনা, ব্যথা-বেদনা থেকে মুক্তির জন্য সৃষ্টিকর্তার অনুকম্পা চায়।

নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। পাপকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে গুনাহ থেকে মুক্তিলাভ ও ভবিষ্যতের সৌভাগ্যময় প্রস্তুতি, উভয়ের জন্যই এ রাত প্রত্যেক মুসলমানের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ। মহিমান্বিত এই রজনীকে মুক্তির রাত, সৌভাগ্যের রাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ রাত ধর্মপ্রাণ মানুষকে এক নতুন মানুষে পরিণত করে। মানুষ শুভচিন্তা, সত্কর্মের আদর্শ গ্রহণের মাধ্যমে এক নতুন জীবন লাভ করে। শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয়, জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবনেও সব কিছু শুভ ও সুন্দর হোক, আল্লাহর দরবারে এমন প্রার্থনা করা হয়। সমাজে থাকা অন্যায়-অবিচার-অনাচার, সাধারণ মানুষের কষ্ট-দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে আকুতি জানানো হয়। শবেবরাতের নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত ও আমল নেই, তবে বিশেষ কিছু আমল করা যায়। আর বিশুদ্ধ মতানুসারে শবেবরাত ও শবেকদরের নফল আমলগুলো একাকী করণীয়।

শবেবরাতের ইবাদতের মধ্যে আছে, বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, দরুদ শরিফ পাঠ, জিকির-আজকারে মশগুল থাকা। তাওবা-ইস্তিগফার করা, সব মুমিন মুসলমানের ইহকালীন-পরকালীন কল্যাণ ও ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে কান্নাকাটি করে রাত কাটিয়ে দেওয়া। হিজরি সন অনুসারে শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটিকেই শবেবরাত বা মুক্তির রাত হিসেবে গণ্য করা হয়। রমজান মাসের আগের মাস শাবান। রমজানের সিয়াম সাধনার প্রস্তুতি হিসেবে শাবান মাসকেও বরকতময় মাস বলে অভিহিত করা হয়েছে।

.

শবেবরাতের মূল করণীয় একান্তে ও নীরবে ইবাদত করা। তাৎপর্যপূর্ণ এ রাতের বিশেষ বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায় রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আজকার, মিলাদ মাহফিল, নফল নামাজ আদায় ও কোরআন তিলাওয়াতে মশগুল থাকে। বরকতময় এই রজনীতে মুমিনদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ বর্ষিত হয়। এ রাতে যারা আল্লাহর কাছে রহমত ও বরকত প্রার্থনা করে তারা তা পায়, তারা সৌভাগ্য লাভ করে। মহান আল্লাহ চান, মানুষ পাপ-তাপ থেকে মুক্ত হয়ে সুখ-সমৃদ্ধিতে জীবন যাপন করুক, মানুষ সৌভাগ্য লাভ করুক।

বন্ধুত্ব, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনেও আমাদের দুঃখ ও দুর্ভোগ লাঘব হোক। সবার জীবনে মুক্তি ও সৌভাগ্যের অপূর্ব সুযোগ এনে দিক পবিত্র শবেবরাত। এটাই হোক আজকের বিশেষ প্রার্থনা।