অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

টিএসসিতে ইভটিজিং এর অভিযোগে পিটুনীর শিকার বাশঁখালীর ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল

0
.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে (টিএসসি) ছাত্রীদের ইভটিজিং এর অভিযোগে পিটুনির শিকার হয়েছেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও স্থানীয় বাহারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম।

আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে দুই ছাত্রীকে দেখে ইভটিজিং এর অভিযোগে তাজুল ইসলামকে মারধর করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন লোকজন নিয়ে এসে তাজুল ইসলামকে রক্ষা করেন এবং  উল্টো ইভটিজিং এর শিকার ২ ছাত্রীসহ ৩ শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা সহযোগিতা করেন। সুমনের বাড়িও বাঁশখালী উপজেলায়।

.

তাজুল ইসলাম বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর একান্ত সচিবের (পিএস) দায়িত্বপালন করছেন।

অভিযোগকারী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই তিন শিক্ষার্থী ছুটির দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরতে এসেছেন। প্রায় এই ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে আসা হয় তাদের।

টিএসসিতে বসে আড্ডা দেয়ার সময় চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তার প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে লক্ষ্য অনেকক্ষণ যাবত গোপন অঙ্গ নাড়তে থাকে। পরে তাদের মধ্যে ফারিহা বিষয়টি বুঝতে পারলে তার পাশের বান্ধবীর সাথে বিষয়টি শেয়ার করেন। পরে তারা তিন বন্ধু-বান্ধবী বসা থেকে দাঁড়ালে ওই লোক আস্তে আস্তে টিএসসির গেইটের দিকে হাঁটতে থাকেন।

এরপর তাজুলকে থামাতে ওই তিন শিক্ষার্থী টিএসসির গেইটম্যান কিরণকে ইশারা দিয়ে তাকে থামাতে বলেন। ওই লোক তখন টিএসসির মেইন গেইটের সামনে চলে আসেন। সেখানে তারা তিনজনই অভিযুক্ত তাজুল ইসলামকে মারধর করেন।

পরে ঘটনাটি তাজুল ইসলাম তার এলাকার পরিচিত ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমনকে জানান। এর কিছুক্ষণ পর সুমন কিছু লোক নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।

এর আগে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা এসে উপস্থিত হন। তারা তাজুল ইসলাম এবং ঔই শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। পরে রিয়াজ উদ্দিন সুমনও ওই দুই ছাত্রীর থেকে ঘটনাটি শুনেন।

ঘটনাটি শুনে তিনি ওই তিন শিক্ষার্থীকে থানায় দিতে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যদের নির্দেশ দেন। এরপর প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুভাস্কর্যের সামনে নিয়ে যান। সেখানে সুমনের নিদের্শে ওই তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেন প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। তখন সুমন সাথে করে অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাাম সাংবাদিকদের বললে তিনি বলেন, ‘আমি টিএসসিতে দাঁড়িয়ে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে ফোনে কথা বলতেছি। কথা শেষে আমি টিএসসির বাইরের দিকে আগালে তারা পিছন থেকে আমাকে ডেকে মারধর করেন। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তা সত্য নয় ।

ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমনের ওই লোক আমার এলাকার। তিনি একজন চেয়ারম্যান, সম্মানিত ব্যক্তি। তার নামে তিন শিক্ষার্থী যে অভিযোগ করেছে তা সত্য-মিথ্যা কতটুকু জানিনা। তারা তাঁকে ব্যাপক মারধর করেছে। এটা খুবই খারাপ করেছে তারা। এজন্যই তাদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সরকারী মোবাইলে ফোন করলে আরিফুল ইসলাম নামে একজন সাব ইন্সপেক্টক বলেন, স্যার ছুটিতে আছেন।

ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় ঢাবির প্রক্টর একজন ছাত্রসহ দু’জন ছাত্রীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তবে তাদের বিষয়ে কোন অভিযোগ না দেয়ায় এবং প্রক্টরের অনুরোধে আমরা তাদের অভিভাবক ডেকে তাকেকে ছেড়ে দিয়েছি।  এই শিক্ষার্থীরা কোন ধরণের ইভটিজিং এর অভিযোগ করেন নি।