অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামবাসির দুর্ভোগ বাড়ছে: নগর উন্নয়নে সমন্বিত পরিকল্পনার অভাব

0
CAB PHOTO-01
দুপুরে সার্কিট হাউজে বন্দর-পতেঙ্গা এলাকার যানজট ও জলাবদ্ধতা শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে অংশ নেন নাগরিক সমাজ।

নগর উন্নয়নে সমন্বিত পরিকল্পনা না থাকায় চট্টগ্রামবাসি দুর্ভোগ বাড়ছে। বিশ্বমানের নগরী গড়ে তুলতে হলে বিশ্বমানের চিন্তাও থাকতে হবে। নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা টিম না থাকায় প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে অপরিকল্পিত নগরী। ফলে বাড়ছে যানজট, জলাবদ্ধতাসহ নাগরিক দুর্ভোগ।

এসব দুর্ভোগ থেকে পরিত্রান পেতে হলে সমন্বিত নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা টিম গঠন করতে হবে। এতে সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, সিএমপি পুলিশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বন্দর পতেঙ্গা এলাকার যানজট ও জলাবদ্ধতা শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও ক্যাব আয়োজিত এ নাগরিক সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ভূইয়া নজরুল। প্রবন্ধে তিনি নগরীর উল্লেখিত এলাকাটির যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮ টি প্রস্তাবনা পেশ করেন।

নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, সময় থাকতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহন না করলে এমন এক সময় আসবে চট্টগ্রাম বসবাসের জন্য অচল হয়ে পড়বে।

জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, যানজট ও জলাবদ্ধতা নগরবাসির নিত্যদিনের দুর্ভোগ। এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ সিএমপি পুলিশকে এক হয়ে সমন্বিতভাবে উন্নয়ন কাজ করতে হবে।

পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে দুর্বল উল্লেখ করে তিনি বলেন, উর্ধতন কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা থাকলেও সার্জেন্ট বা তাঁর নীচের পর্যায়ের লোকজনের অনিয়মের কারণে পুলিশের এ বিভাগটি অনেকটা অকেজো।

পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে আরো শক্তিশালি করে কাজে লাগাতে হবে। তিনি নাগরিক সংলাপে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সিএমপি’র কোন প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ ছাড়া যানজট নিরসনে যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং, সড়কের পাশে কন্টেইনার টার্মিনাল গুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ এবং সিটি কর্পোরেশন একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। বন্দও এলাকায় মহেশখালের উপর বাঁধ নির্মাণ জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।  তিনি বলেন এ বাঁধটি নির্মানের আগে বন্দও কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দা এবং নগর পরিকল্পনাবিধসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের সাথে পরামর্শ করতে পারতেন।

অপরিকল্পিতভাবে এ বাঁধটি নির্মানের ফলে একদিকে যেমন জনদুর্ভোগ বেড়েছে তেমনি অপচয় হয়েছে সরকারী বিপুল পরিমাণ অর্থ।

ক্যাব সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বন্দর পতেঙ্গা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি হাজী ইকবাল আলী।

সংলাপে প্যানেল আলোচক ছিলেন প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া, সনাক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, প্রকৌশলী জেরিনা হোসেন, কাউন্সিলর সৈয়দ গোলাম হায়দার মিন্টু, এড.জানে আলম, সাংবাদিক নাসিরুল হক।

প্যানেল আলোচকগন বলেন, নগর উন্নয়নে আমরা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছিনা। পরিকল্পিত এবং বিশ^মানের নগরী হিসেবে চট্টগ্রামকে সাজাতে হলে আলাদা চট্টগ্রাম পরিকল্পনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নামে একটি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যার মাধ্যমে আগামী পাঁচশত বছর পর কি ধরনের নগর হবে তার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করা যায়।

প্যানেল আলোচকগন বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কারো কাছে আলাদা পরিকল্পনা বিভাগ নাই।

তাঁরা বলেন ,চট্টগ্রামের শুধুমাত্র বন্দর পতেঙ্গা নয় পুরো শহরই এখন যানজট আর জলাবদ্ধতার নগরীতে পরিণত হয়েছে। নগর ট্রাফিক বিভাগকে আরো কাযকর করতে হবে। নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে জনসাধারনের অংশগ্রহন বাড়াতে হবে। কর্ণফূলীর নদীর ক্যাপিটেল ড্রেজিং বাস্তবায়ন কতে হবে। এবং নগরীর খাল গুলোকে অবৈধ দখলমুক্ত করতে হবে।