অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ভালুকের কামড়ে আহত উপজাতি শিশুকে চট্টগ্রাম সিএমএইচে ভর্তি

0
.

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে পাহাড়ী জঙ্গলের বন্য ভালুকের আক্রমনে গুরুত্বর আহত হয়েছে শিশু পণবিকাশ ত্রিপুরা (১০)কে চট্টগ্রামে সম্মিলিত সাময়িক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রবিবার সকালে দুর্গম সীমান্তবর্তী গ্রাম নিওথাংনাং বেটলিং থেকে হেলিকপ্টার যোগে তাকে চট্টগ্রাম আনা হয়।

এর আগে শুক্রবার দুপুরের দিকে বাড়ির পাশের জঙ্গলে খেলতে গিয়ে বন্য ভালুকের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত হয় পণবিকাশ ত্রিপুরা।

আহত পানবিকাশ ত্রিপুরার চাচাত ভাই হরি বিকাশ ত্রিপুরা জানান, গত ১০ মে শুক্রবার সাজেকের দুর্গম পাহাড়ি জমিতে কৃষিকাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন পানবিকাশ ত্রিপুরা। পথিমধ্যে সাজেকের নিওথাংনাং পাড়ায় হঠাৎ ভালুক আক্রমণ করে বসে পনবিকাশকে। ওই সময় ভালুক কামড়ে তার মুখ ও শরীরের একাংশ ক্ষতবিক্ষত করে। উপড়ে ফেলে তিনটি দাঁত। আর্তচিৎকারে কিছু লোক এগিয়ে তাকে উদ্ধার করলেও বিনা চিকিৎসায় মরতে বসে পানবিকাশ। পরে স্বজনরা প্রায় দেড় দিন পায়ে হেঁটে বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আসে। সেখান থেকে খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টাযোগে তাকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

সিএমএইচ সূত্র জানা গেছে, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। যার কারণে বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এ কিশোরকে যেকোনো ভাবে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পেয়েই রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্টে আনা হয়।

আহত পানবিকাশ ত্রিপুরার বাবা অলিনন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর মানবিক কর্মকাণ্ডে পাহাড়ের দুর্গম জনপদের মানুষগুলো নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে।

তিনি বলেন, তারা যেই গ্রামে বসবাস করছেন সেখান থেকে গাড়ী চলে এমন কোনো সড়কে যেতে হলে টানা তিনদিন পায়ে হেঁটে যেতে হয়। নেই কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝিরি-ঝরণা, খাল ও গিরিপথ পাড়ি দিয়েই দিনরাত হেঁটে কোনো বাজারের দেখা পান তারা। তবে জীবিকার তাগিদে ওই পাহাড়ী জনপদে বসবাস করছেন তারা।

জানাগেছে, এর আগে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির যৌথ প্রচেষ্টায় গত ৩১ ডিসেম্বর সোনাপতি চাকমা এবং ২৯ এপ্রিল জতনী তঞ্চংগ্যা নামে দুইজন উপজাতি প্রসূতি নারীকে হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। পরে তারা ফুটফুটে বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফিরেন। বেঁচে যায় নবজাতক ও মায়ের জীবন।