অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ডবলমুরিং-এ মাদক ব্যবসায়ী ভুল টার্গেটে খুন হন রিকশা চালক রাজু আহমদ

0
.

মাদক ব্যবসায়ীদের ভুল টার্গেটে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার হাজিপাড়ায় নিরীহ রিকশা চালক রাজু আহম্মদ (২০) খুন হয়েছে। হত্যাকা-ের পর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া খুনি চক্রের ৮ সদস্য চাঞ্চল্যকর এই তথ্য দিয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

আজ বৃহস্পতিবার সিএমপির দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে রাজু আহমেদ হত্যার রহস্য উৎঘটনের এই তথ্য জানান সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।

গ্রেফতারকৃতরা হল- শিমুল দাশ (২০), তানভির হোসেন প্রকাশ সিফাত (১৮), মো. সুজন প্রকাশ মধু (১৮), মো. রাকিব হোসেন প্রকাশ শাহ রাকিব (১৮), মো. নুর নবী (১৮), মেহেদী হাসান রুবেল (১৮), ওসমান হায়দার কিরন (১৮) ও সেলিনা আক্তার সেলি (৪৫)।

গত ১৪ মে ভোরে ডবলমুরিং থানাধীন হাজীপাড়া এলাকায় রিকশা চালক রাজু আহমদকে বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজু।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ছগির হোসেন নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গত ২৭ এপ্রিল পুলিশ ইয়াবা ও অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। এ জন্য ছগির তার সহযোগী মফিজকে সন্দেহ করেন এবং পুলিশকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য প্রতিশোধ নিতে চট্টগ্রাম কারাগারে বসে পরিকল্পনা নেয়।

গ্রেফতার হওয়ার ৫ দিন পর কারাগারে দেখা করতে যান ছগিরের স্ত্রী, ছেলে কিরনসহ কয়েকজন। তখন মফিজকে চিরতরে শেষ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন ছগির হোসেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৩ মে খুনের খরচ বাবদ ছগিরের স্ত্রী সেলিনা আক্তার সেলী শুক্কুর নামে একজনকে ১ হাজার টাকা ও ছগিরের ছেলে ওসমান হায়দার কিরন একটি কিরিচ দেন।

পরের দিন (১৪ মে) সবাই হাড্ডি কোম্পানীর মোড়ে রুবেলের টং দোকানের সামনে জড়ো হন ছগিরের ছেলে কিরন, শুক্কুর, শিমুল, রাকিব, সিফাত। সেখারে খুনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। এ সময় কিরন ব্যাগে করে নিয়ে আসা চাইনিজ কুড়াল রাকিবকে দেয় ও ছুরি সিফাতকে দেয়। পরে রাত ১১টার দিকে কিরন বাসায় চলে যায়। অন্যরা ওখানে অবস্থান নেয়।

ভাড়া ঘরে মফিজের রুম মনে করে পাশের রুমে (রিকশাচালক রাজু যে রুমে থাকতেন) প্রবেশ করে হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা। ঘুমন্ত অবস্থায় রাজুকে মফিজ মনে করে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে আহত করে তারা। পরে লোকজনের চিৎকারে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ওই সময় টার্গেট হওয়া মফিজও তার রুমে ছিলেন।

সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম বলেন, ছগির হোসেন একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ছগিরের বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানায় মোট সাতটি মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) কামরুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) আশিকুর রহমান, ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহির হোসেনসহ অভিযান পরিচালনাকারী টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতার আসামিদের দেওয়া তথ্যে খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।