অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

নোয়াখালীতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান, ৩ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা জরিমানা

0
.

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালীর মাইজদী-চৌমুহনী-বেগমগঞ্জ শহরের ১৪টি হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার-প্যাথলজী ও ফার্মেসীকে ১৯টি মামলায় ৩ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃস্পতিবার (২৯ মে) এ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রোকনুজ্জামান খান ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমিন।

.

দন্ডিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নিউ লাইফ কেয়ার হসপিটালকে ৮৫হাজার, ট্রাস্ট ওয়ান হসপিটালকে ৭৫হাজার, জেনারেল ও শিশু হসপিটালকে ২০হাজার, নোয়াখালী মেডিক্যাল সার্ভিসেসকে ৪০হাজার, ইনসাফ হসপিটালকে ২০হাজার, মেট্রো হসপিটালকে ২০হাজার, হলি কেয়ার হসপিটালকে ২০হাজার, ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১০হাজার, কসমো ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১০হাজার, মা ফার্মেসীকে ১০হাজার, পজেটিভ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৮হাজার, চৌমুহনী মেডিক্যাল সার্ভিসেস ৫হাজার, মেট্রো ডির্পাটমেন্টাল স্টোরকে ৫হাজার, রয়েল হসপিটালকে ৪হাজার টাকা সহ মোট ১৪টি হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার-প্যাথলজী ও ফার্মেসীকে ১৯টি মামলায় ৩লক্ষ ৩২ হাজার টাকা জরিমানা দন্ড আরোপ ও আদায় করা হয়।

অভিানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন, ড্রাগ সুপার মাসুদ হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক দেবানন্দ সিনহা ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সেনিটারী ইন্সপেক্টর মোঃ জাহাঙ্গীর।

.

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদ ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে জনস্বার্থে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় দেখা যায়- হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোতে মেডিকেল প্রাকটিস এবং প্রাইভেট ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরীজ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ বিধি অনুযায়ী তফসিল ক, খ ও গ তে বর্ণিত অবকাঠামো, ৩৬ ধরণের উপকরণ, ডিউটি ডাক্তার, নার্স, জীবন রক্ষাকারী ড্রাগ, ইমার্জেন্সী সেবা, অপারেশন থিয়েটার, অক্সিজেন সিলিন্ডার- এমন হাসপাতাল ক্লিনিক পরিচালনার লাইসেন্সও পাওয়া যায়নি। এসবের প্রায়গুলো ছিল অপরিস্কার।

অপারেশন থিয়েটারগুলোর মূল বেডগুলো পাওয়া যায় জং ধরা ও অর্ধ রং বিহীন, যেসব ঔষধ অপারেশন থিয়েটারে যেসব ঔষধ থাকার কথা সেই ধরণের ঔষধগুলো অযাচিতভাবে সংরক্ষণ করা, অপারেশনের জন্য ব্যবহৃত সিজার ও অপর যন্ত্রপাতিগুলোও ছিল জং ধরা, অপারেশনে ব্যবহৃত কাপড় ও বালিশে লেগে ছিল রক্তের দাগ ও তাজা রক্ত। অভিযানের সময় বেশ কয়েকটি হাসপাতলের ডিউটি ডাক্তার লোকিয়ে পালিয়ের বিষয়টিও আদালতের নজরে এসেছে। সর্বোপরি অধিক মূল্য গ্রহণ করে সেবার নিম্নমান প্রদান করা।

ড্রাগ আইন ১৯৪০ অনুযায়ী প্যাথলজি ও ফার্মেসীতে আদালত পরিচালনার সময় দেখা যায়- কোন লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেখে ডিগ্রীবিহীন টেকনিশিয়ান দ্বারা ল্যাবগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে এবং একই সাথে এসব ল্যাবে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা ব্যবহৃত হচ্ছে না। টয়লেট ও বেসিনগুলো ছিল ময়লাযুক্ত ও অপরিচ্ছন্ন এবং কোন প্রতিষ্ঠানের টয়লেটে ও বেসিনে হ্যান্ড ওয়াস বা সাবান পাওয়া যায়নি। ল্যাবগুলোতে প্রচুর পরিমাণে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া গিয়েছে যা দিয়ে প্যাথলজীর টেস্ট কর্যক্রম করা হচ্ছিল এবং এগুলো জব্দ করা হয়েছে।

এসময় ফার্মেসীগুলোতেও পাওয়া যায়নি ফার্মাসিস্ট। ফার্মেসীগুলোতেও বিপুল পরিমান মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া ‍গিয়েছে। এক্স-রে পরীক্ষার অনুমোদনের জন্য পাসহাতালগুলোতে পাওয়া যায়নি আনবিক শক্তি কমিশনের অনুমোদন। ক্লিনিক্যাল বর্জ্র ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও এসব প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়নি। কোন হাসপাতাল-ক্লিনিক-প্যাথলজিকে বর্জ্র ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৯ধারা অনুযায়ী সেবার মূল্য তালিকা সংরক্ষণের বিষয়ে দেখা যায় প্রায় প্রতিষ্ঠানে যেসব সেবা দেওয়া হচ্ছে তার সকল সেবার নাম ও সেবার মূল্য দেওয়া নেই এবং এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠানে সেবার মূল্য তালিকাও দেখা যায়নি।

জনস্বার্থে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান আদালত।