অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ফেনীতে নুসরাতের কবর জেয়ারত করলেন ব্যারিস্টার সুমন (ভিডিও)

1
.

ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে দিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির কবর জিয়ারত করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচিত ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

আজ শনিবার বিকাল ৪টার দিকে সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়ায় নুসরাতের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।

এর আগে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন নিহত নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে শোকার্ত পরিবারের অপরাপর সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘যে মেয়েটার হাতে মেহেদি দিয়ে মা-বাবা ও ভাইদের সঙ্গে ঈদ করার কথা ছিল সে মেয়েটা আজকে কবরে শুয়ে আছে। আমি আজকে এখানে এসেছি নুসরাতের কাছে ক্ষমা চাইতে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নুসরাতকে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিতে পারি নাই এটা আমাদের ব্যর্থতা। নুসরাতের মতো মানুষরা যদি আমাদের মাফ না করেন তবে এ বাংলাদেশ আগাবে না।’

সুমন বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজে মামলার তদারকি করছেন। ওসি মোয়াজ্জেমও খুব শিগগিরই আইনের আওতায় চলে আসবেন। বিচারের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত নুসরাতকে আমরা ভুলব না।’

এ সময় ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘অনেকেই নুসরাতের নাম ভুলে গেছেন হয়তো। যাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই নুসরাতের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বলার ভাষা আমার নাই। নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তার কবর জিয়ারত করতে আসছি সেই সিলেট থেকে ফেনীতে।’

তিনি বলেন, ‘এ জায়গাতে নুসরাত ঘুমিয়ে আছে। নুসরাতের কবরে লাগানো গাছগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। নুসরাত যে মাটিতে ঘুমিয়ে আছে এমন হাজারো নুসরাত বাংলাদেশের মাটিতে ঘুমিয়ে আছে। অনেকে বিচার পাচ্ছেন, হয়তো অনেকে বিচার পাচ্ছেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমি সারা বাংলাদেশের মানুষের উদ্দেশে বলতে চাই – যারা ভেবেছিলেন নুসরাতের নিউজটা মাটিচাপা পড়ে গেছে, তা মনে করার কোনো কারণ নাই। নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত যতজন আসামি আছে সবাই জেলে আছেন। শুধুমাত্র সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মেয়াজ্জেম হোসেন ছাড়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘নুসরাতের কবরের সামনে এসে বলে যাচ্ছি, যত বাধা আসুক না কেন নুসরাতের যারা আসামি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করাই হবে আমাদের প্রথম এবং প্রধান কাজ।’

এ সময় নুসরাতের বাবা একেএম মুসা, বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান, ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান ও এলাকার গণমান্য ব্যক্তিসহ বিপুল পরিমাণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

পরে ব্যারিস্টার সুমন সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা ও নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও সেখানে দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনা তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। ১০ এপ্রিল মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দেয়া হয়। মামলার এজহারভূক্ত ৮ আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।

দায়িত্বে অবহেলার দায়ে দুই এসআই আবু ইউছুপ, ইকবাল আহম্মদ এবং সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে বদলি করা হয়। পরে ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এছাড়া পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে পুলিশ সদর দফতরে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

১ টি মন্তব্য
  1. Samian Sadly বলেছেন

    AMIN