অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

৮ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে গেছে শীর্ষ সন্ত্রাসী বিধান বড়ুয়া

1
.

উত্তর চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসীর বিধান বড়ুয়া মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছেন। ঈদের দুই দিন আগে গত ৩ জুন কুমিল্ল্লা কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

কুমিল্লা কারাগারের জেলার ফোরকান ওয়াহিদ জানান, বিধান বড়ুয়ার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা ছিল। একটি মামলায় সাজা হয়েছিল। সেই সাজাভোগা শেষ হয়েছে। বাকি চারটি মামলায় জামিন থাকায় তাকে কুমিল্লা কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ নাশির আহমেদ বলেন, বিধান বড়ুয়ার জামিননামা কারাগারে আসার পর এগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। বিধান বড়ুয়া চট্টগ্রাম কারাগারে থাকলেও ছয় মাস আগে (২৬ মে) তাঁকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

কুমিল্লা কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায় বিধান বড়ুয়াকে মুক্তির আগে নিয়ম অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেলা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছিল।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল বলেন, সাধারণত স্পর্শকাতর মামলার আসামি কোনো বন্দিকে মুক্তি দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের জানানো হয়। আমরা যাচাই বাছাই করে ক্লিয়ারেন্স দিলে এরপর মুক্তি দেয়া হয়। বিধান বড়ুয়াকে মুক্তি দেয়ার আগে বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছিল। আমরা যাচাইবাছাই করে তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই দেখার পরই তাকে মুক্তি দিতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছি।

.

দক্ষিণ রাউজানের আধারমানিক গ্রামের বড়ুয়া পাড়ার মৃত হিমাংশু বড়ুয়ার তিন ছেলের মধ্যে ছোট বিধান। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারলেও বিধান ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। উপজেলার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আকতার হোসেন ওরফে রাজুর হাত ধরে শুরু হয় তাঁর উত্থান। আকতার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বিধানের বিরুদ্ধে একটি চুরির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে চেয়ারম্যান তাঁকে শাস্তি দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিধান আকতার হোসেনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। নব্বইয়ের দশকে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টি এবং পরে সাকা চৌধুরী ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) গঠন করলে তিনি ওই দলে যোগ দেন।

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মন জয় করতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বিধান বড়ুয়া। এ সময় তিনি নিজের নামে একটি বাহিনী (বিধান বাহিনী) গঠন করে পুরো রাউজান এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে ১৯৯৩ সালে প্রথমেই খুন করেন পূর্ব গুজরার ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর প্রথম রাজনৈতিক গুরু আকতার হোসেনকে।

পরবর্তী এক দশকে তাঁর বাহিনীর হাতে রাউজানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেতা-কর্মী নিহত হন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ মিয়া, মোহাম্মদ নাছিম, কৃষ্ণ দত্ত, ধনা বৈদ্য, ইকবাল, জামিল, মোহরম আলী, সোহেল, লিটন, ইউসুফ মাস্টার, মোহাম্মদ রফিক প্রমুখ।

জানাগেছে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে বিধান বড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছিল র‌্যাব। এরপর ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের একটি মামলায় বিধানের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়।

র‌্যাব-৭ ২০০৯ সালে চট্টগ্রামের শীর্ষ ২৪ সন্ত্রাসীর তালিকা করেছিল। সে তালিকায় চার নম্বরে ছিল বিধান বড়ুয়ার নাম। এছাড়া তালিকায়ভূক্তদের মধ্যে ফটিকছড়ির যুবদলের ওসমান, শিবিরের ফাইভ স্টার জসিম বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। রাউজানের জাফর চেয়ারম্যান ও বোয়ালখালির বাচা চেয়ারম্যানকে র‌্যাব গ্রেফতার করলেও পরবর্তীতে তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

১ টি মন্তব্য
  1. Paiching Mong বলেছেন

    এবার তাইলে বিদেশ চইলা যাবে আর কি।