অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পতেঙ্গায় রোগী সেজে ভুয়া ডাক্তার বিকরন গ্রেফতার করেছে ভ্রাম্যমান আদালত

2
.

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় রোগী সেজে ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে এক ভুয়া ডাক্তারকে হাতেনাতে করেছে জেলা প্রশাসকের ভ্রাম্যমান আদালত।

ভূয়া এমবিএস পাস বিকরন বড়ুয়া নামে এই কথিত ডাক্তারকে ছয় মাসের কারাদন্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। একই সাথে তার চেম্বার আয়শা মেডিকেল নামে একটি ফার্মেসী থেকে তল্লাশী চালিয়ে চার বস্তা অননুমোদিত অবৈধ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ ঔষধ উদ্ধার করা হয়। এ জন্য ফার্মেসী মালিক ফরিদুল আলমকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমান ও তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

গতকাল সোমবার রাতে পতেঙ্গা বিজয় নগর এলাকায় এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন পতেঙ্গা সার্কেল এর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান। অভিযানে অংশ নেয় র‌্যাব-৭ ও চট্টগ্রাম সিভিল সার্জেন অফিসের কর্মকর্তারা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পাঠানে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযানের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়।

.

এতে বলা হয় মহানগরীর দক্ষিন পতেঙ্গা এলাকার বিজয় নগরে বিকিরন বড়ুয়া নামে এক ভুয়া ডাক্তারকে এ সময় আয়েশা মেডিকেল নামে এক ফার্মেসিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ঔষধ বিক্রির দায়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা ও এর মালিক ফরিদুল আলমকে তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডাঃ মোহাঃ ওয়েজেদ চৌধুরী অভি এবং র‍্যাব ৭ এর সিনিয়র পুলিশ সুপার জনাব মিমতানূর সহ অন্যান্য র‍্যাব সদস্যবৃন্দ।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান জানান, কথিত ডাক্তার বিকিরন বড়ুয়াকে ধরার জন্য তার কাছে রোগী সেজে এক র‍্যাব সদস্যের মাধ্যমে সিরিয়াল নেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬ টায় চেম্বারে আসতে বলা হয় তাকে। দক্ষিন পতেঙ্গার বিজয়নগরের আয়েশা মেডিকেলে তার চেম্বারে গিয়ে দেখা যায় বাইরে অসংখ্যা রোগীর ভীড়। নিজেকে ডায়েবেটিস, মেডিসিন ও শিশু রোগের চিকিৎসক দাবি করা বিকিরনের চেম্বারের বাইরে বেশ কয়েকজন অন্তঃস্বত্তা মহিলা ও কয়েকটি শিশুকে দেখতে পাওয়া যায়। প্রথমে র‍্যাবের সিনিয়র এএসপি মিমতানূর রোগী সেজে তার সাথে কথা বলেন এবং এক পর্যায়ে তার ডিগ্রী সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় বিকিরন তার কাছে সার্টিফিকেট ঢাকায় রয়েছে বলে উল্লেখ করে তা আনার জন্য দুই দিন সময় চান।

.

এ সময় বাইরে অপেক্ষা করা পতেঙ্গা সার্কেল এর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমি এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডাঃ মোহাঃ ওয়েজেদ চৌধুরী অভি তার চেম্বারে প্রবেশ করি এবং তার বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার কিনা জানতে চাই। তিনি তার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৯১১১৩ বলে উল্লেখ করেন। এ নাম্বার দিয়ে www.bmdc.org.bd ওয়েব সাইটে সার্চ করে এ নাম্বারের বিপরীতে কোন ব্যাক্তির অস্তিত্ত্ব পাওয়া যায়নি এমনকি ওয়েব সাইট থেকে জানা যায় এখন পর্যন্ত এমবিবিএস ডাক্তারদের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৯০০০০ পর্যন্ত তালিকাবদ্ধ।

তখন ভ্রাম্যমান আদালত জানতে চাইলে তিনি গত মাসে তার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এবং এ জন্যই তা ওয়েব সাইটে নেই বলে ব্যাখ্যা প্রদান করেন। কোথা থেকে এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জণ করেছেন জানতে চাইলে তিনি ভারতের একটি মেডিকেল কলেজের নাম বলেন। এবং সে মেডিকেল কলেজের বেশ কিছু ভুয়া প্রিন্ট করা সার্টিফিকেট প্রদর্শন করেন। বিকিরন বড়ুয়ার প্রেসক্রিপসন প্যাডে তিনি কাস্টমস হাউজের মেডিকেল অফিসার বলে উল্লেখ করেছেন। কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে এ নামে কোন সেখানে ডাক্তার কাজ করেন না বলে জানানো হয়। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি ঢাকায় মন্ত্রনালয়ে যোগদান করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র এএসপি মিমতানূর জানান, যে আয়েশা মেডিকেল ফার্মেসিতে তিনি চেম্বার করতেন সে ফার্মেসিকে লাইসেন্স দেখাতে বললে তার কোন লাইসেন্স নেই বলে জানান। তার আচরনে সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদে সে এবং বিকিরন বড়ুয়া যৌথভাবে ভুয়া চিকিৎসা ব্যবসা করার কাহিনী বেরিয়া আসে। পরে ফার্মেসিতে তল্লাসি চালিয়ে চার বস্তা অননুমোদিত ও অবৈধ, ব্যবহার নিষিদ্ধ ঔষধ পাওয়া যায়। ২০১৩ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া যায়, পাওয়া যায় জমে যাওয়া আইভি সেলাইন সহ নষ্ট ও গলে যাওয়া ঔষধ। এ সময় ফার্মেসির মালিক ফরিদুল আলমকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমান ও তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

২ মন্তব্য
  1. Hossain Jamshed বলেছেন

    Rakib Hossain

  2. Subash Chakma বলেছেন

    Ekbar bolteshen chakma r ekbar barua ?sotik vabe bolen