অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সারাদেশে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যু

0
images
বিভিন্ন ঘটনায় দুর্ঘটনায় সারাদেশে ১৩ জন নিহত।

সোমবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনা, নৌকা ডুবি ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মোট ১৩ ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আমাদের বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোরে রংপুরের পীরগঞ্জ এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ৪ জন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- দিনাজপুর সদর উপজেলার মোস্তফা (২৫) ও একই এলাকার দুখু মিয়া (৩০) এবং বীরগঞ্জ উপজেলার আজাহার (২৮) ও আলামিন (২৬)।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার জানান, হৃদয় পরিবহন নামে ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পীরগঞ্জ এলাকায় একটি ব্রিজের নিচে পড়ে যায়। ভোর ছয়টার দিকে ঘটা এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন বাসের দুই যাত্রী। এ ছাড়া আহত হন ২০ জন। তাদের মধ্যে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২ জনকে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজন মারা যান।

গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একটি নৈশকোচ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেলে দুখু মিয়া (২৭) ও মোরশেদা বেগম (২২) নামে দুইজন নিহত হন। এ সময় আহত হয়েছেন শিশুসহ আরও ১৫ যাত্রী।

গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের পলাশবাড়ী উপজেলার ডাকঘর এলাকায় সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুখু মিয়া ফুলছড়ি উপজেলার আহম্মেদ আলীর ছেলে ও মোরশেদা বেগম সদর উপজেলার খামারপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়ার স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে একটি রিজার্ভ নৈশকোচ নিয়ে ৫০-৬০ জন যাত্রী গাইবান্ধায় আসছিলেন। সোমবার ভোররাতে কোচটি ডাকঘর এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ করে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে কোচটি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মোরশেদা ও হাসপাতালে নেওয়া পথে দুখু মিয়ার মৃত্যু হয়।

এদিকে, বাসে থাকা যাত্রীদের অভিযোগ কোচের চালক ঘুমিয়ে পড়ার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

পলাশবাড়ী থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নবিউল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কোচটি উদ্ধার হেফাজতে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সার ধাক্কায় মো. সাব্বির হোসেন (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সাব্বির বীরগঞ্জের শতগ্রাম ইউনিয়নের পুর্ব ধুলাউড়ি গ্রামের মো. আব্দুল গণির ছেলে।

সোমবার বিকেল ৫টার দিকে বীরগঞ্জ-দেবীগঞ্জ সড়কের পুর্ব ধুলাউড়ি গ্রামের মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আককাছ আহম্মদ জানান, শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ী বাজার থেকে দুইটি ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা যাত্রী নিয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা সদরে যাচ্ছিল। পথে ওভারটেকিংয়ের সময় একটি অটোরিক্সা নিন্ত্রয়ণ হারিয়ে শিশু সাব্বিরকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। তারপর তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

মাদারীপুরে বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, বরিশাল সিটি কর্পরেশনের ১০নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা খাদেম সরদারের ছেলে শাহীন সরদার (৩০) ও মোটরসাইকেল চালক মাদারীপুর সদরের খোঁয়াজপুর এলাকার আয়উব আলী শেখের ছেলে সোহাগ মাতুব্বর।

মাদারীপুরের সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার অখিল সরকার জানান, বরিশাল থেকে ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহনের সাথে কালকিনি উপজেলার পান্তাপাড়া এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল চালক সোহাগের মৃত্যু হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় শাহীনকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত তাকে ঘোষণা করে। এ ঘটনায় ঘাতক বাসটিকে জব্দ করেছে পুলিশ।

মেহেরপুরের গাংনীর তেরাইল কলেজের সামনে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসের ধাক্কায় গরু বোঝাই নসিমন উল্টে রফিকুল ইসলাম(৩৫) নামের এক গরু ব্যবসায়ি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নসিমন চালকসহ আরো ৪ জন। আহতদের মধ্যে ২ জনকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত রফিকুল ইসলাম মেহেরপুর সদর উপজেলার গভীপুর গ্রামের বাসিন্দা।

গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, রফিকুলসহ ৩ গরু ব্যবসায়ি মেহেরপুর থেকে নসিমন যোগে গরু নিয়ে বামন্দি হাটে যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নসিমনটি তেরাইল ডিগ্রি কলেজের সামনে মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়াগামী একটি যাত্রিবাহী বাসটি পেছন থেকে থাক্কা দেয়। এতে গরুসহ নসিমনটি উল্টে গেলে ঘটনাস্থলে নিহত হন রফিকুল ইসলাম। আহত হন চালকসহ ৪ জন। আহতদের মধ্যে হরিরামপুরের কাবিদুল ও গভীপুরের ইয়াসিনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

সুনামগঞ্জের তাহরিপুর উপজেলার বৌলাই নদীর দক্ষিণকূল এলাকায় নৌকা ডুবেতৌহিদ (২০) ও সঞ্জিব দাস (২০) নামের ২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তৌহিদুল উপজেলার দক্ষিণকূল গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ও সঞ্জিব দাস একই গ্রামের রবি দাসের ছেলে।

তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, রবিবার রাতে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা বালি ও পাথর বোঝাই করে তারা নদীর ঘাটে নৌকায় ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে তাদের বাড়ি ফিরতে দেরী দেখে স্বজনরা ঘাটে এসে দেখে নৌকাটি ডুবে রয়েছে। পরে তাহিরপুর থানা পুলিশের সহায়তায় ডুবন্ত নৌকা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো জানান, ধারণা করা হচ্ছে পানি উঠে নৌকাটি ডুবে গেছে। কিন্তু ওই দুই শ্রমিক ঘুমন্ত থাকায় নৌকার সাথে ডুবে মারা যায়। তবে নিহতদের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ও জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ছাড়া হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বৈদ্যার বাজার এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মালেক মিয়া (৬৫) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। সকালে উপজেলার বনগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মালেক মিয়া বনগাঁও গ্রামের ইলেকট্রিশিয়ান কবিরের পিতা।

হবিগঞ্জ সদরি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক জানান, সোমবার ভোরে বাড়ির পাশে জমিতে কৃষিকাজ করতে গিয়ে সেখানে পড়ে থাকা বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাৎক্ষণিক লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।