তরমুজ, পেঁপে আর সুশি
এক টুকরো তরমুজ। ঝিনুকের খোলায়, নিচে বরফ। এর নাম ‘অ্যামিউজ বুশে’। লেমন গ্রাস আর চিলি বেসিলে ডুবিয়ে রাখা তরমুজ মুখে দিলেই স্বাদকোরক খুলে যাবে। অতশত জানা ছিল না বাপু, গ্রীষ্মের তরমুজ আমরা হামলে পড়ে খাই, হাতে–মুখে–গায়ে মেখে, টুকরোয় কি মন ভরে! অ্যামিউজ কিন্তু অ্যামেজিং, দিব্যি চনচনে খিদে। এল ক্রিসপি লোটাস স্টেম। পদ্ম নিয়ে, সত্যি বলছি, বাঙালিদের কস্মিনকালেও কোনও বাড়াবাড়ি নেই। পদ্ম–শাখের রান্নাবান্নাও বা কই? কাশ্মীরিরা ‘নদরু’ বলতে অজ্ঞান। ওই তরকারি তেমন আহামরি কিছু না। ‘ক্রিসপি লোটাস স্টেম’ কুড়মুড়ে, ওপরে টক চাটনির পরত। ঘোর আমিষাশী, গ্রিলড চিকেন অ্যাভোক্যাডো ট্যাকোজ আসতে নোলা জুড়োল। মেক্সিক্যান ট্যাকোজ আমাদের পাপড়ই বলতে পারেন, তার মধ্যে মুরগির পুর। বেশ ফিউশন। ‘পা পা য়া’–র আয়োজন ‘সানডে ব্রাঞ্চ’– কাচের ওপারে কলকাতা আশরীর বসন্ত মেখে সবুজ হয়ে আছে। ঝিকোচ্ছে পার্ক ম্যানসন–এর ওপরে সোনালি গম্বুজ। পার্ক স্ট্রিটের শীর্ষবিন্দু, ঈর্ষাবিন্দুও বটে। প্যান এশিয়ান হলেও মন পড়ে আছে জাপানিতে।
ভাতে মোড়া মাছ– ওই তো সুশি! আলটিমেট জাপানিজ। ওঁরা টেবিলে লিখে রেখেছেন সুশি–ভক্ষণ–বিধি। মোদ্দা এই, ‘মশায়, সুশি হাতে ধরে খান। ঈষৎ সয় সস নিতে পারেন। টাকনায় সবুজ ওয়াসাবি, আমাদের কাঁচালঙ্কা বাটার মতো, খবরদার, যৎসামান্য নেবেন, বেশি গালে পড়লেই ঝাঁঝে–ঝালে ব্রহ্মতালু পর্যন্ত ঝাঁকিয়ে দেবে।’ যথা আজ্ঞা। টুনা দিয়ে চমৎকার সুশি। ‘পা পা য়া’ যখন, পেঁপে তখন পিছিয়ে থাকে কেন, থাইল্যান্ডের কাঁচা পেঁপের স্যালাড সম তম চমৎকার। সমে পড়ল এইবার। এবি টেমপুরা। তারপর চিকেন গোয়জা ডিমসাম। প্রথমে ভাপানো, তারপর অল্প ভাজা। সবচেয়ে ভাল চিলি হইসিন ডাক ডগ। হট–ডগের নামান্তর। হইসিম সসে চমৎকার। তার সঙ্গে ‘পাইন জিঞ্জার প্যাশন’— সহজ। আনারসের শরবতে আদার স্বাদ। এত টুকিটাকির পর ভাত–নুডলের জায়গা থাকে না পেটে। তবু চেখে দেখতে ক্ষতি কী! ইয়াকি উডন নুডল খাঁটি জাপানি, তার সঙ্গে চীনেদের ওক ফ্রায়েড সিচুয়ান চিকেন– যুগলবন্দি চমৎকার। শেষ পাতের আশ্চর্য মুখমিষ্টির জন্য তৈরি থাকুন– চকোলেট বল ইন ফায়ার। ফাঁপানো চকোলেটের বল উষ্ণতায় বিস্ফোরিত, তার পেটে কত কিছু! চমকটা তোলা রইল।