অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সিএমপির থানাগুলোতে কেরানির কাজ ছাড়া অন্য কোন পদ নেই নারী পুলিশের!

0
ফাইল ছবি।

জালালউদ্দিন সাগর:

আজ চট্টগ্রামে খুব জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক (বিপিডবি¬উএএন) অ্যাওয়ার্ড-২০১৯।

এবার মেধা আর যোগ্যতার মাপকাঠিতে যাঁরা ঈর্ষনীয়-তাঁদের মধ্যে ৯জন নারী ও একজন পুরুষ পুলিশ কর্মকর্তাকে দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত নারী পুলিশের প্রেস্টিজিয়াস এই পুরস্কার।

বন্দর নগরীতে এবার প্রথম আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য মঈনুদ্দিন খান বাদল ও এম এ লতিফ, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল জাবেদ পাটোয়ারী।

আজ ২৭ জুন, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিট পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে দেয়া হবে দেয়া হবে লালগালিচা অভ্যর্থনাও।

যোগ্যতার মাপকাঠিতে ভালোকাজের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ১০ নারী পুলিশ কর্মকর্তা বিপিডবিউএএন অ্যাওয়ার্ড এর মতো প্রেস্টিজিয়াস পুরস্কার পেলেও সিএমপির ১৬টি থানার মধ্যে কোনো থানাতেই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে পদায়ন নেই কোনো নারী পুলিশ কর্মকর্তার! এমন কি থানাগুলোতে পোস্টিং হওয়া নারী পুলিশ কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক (কেরানী) কাজ ছাড়া দেয়া হয় না অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও মামলা তদন্ত করার দায়িত্বভারও।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন (সিএমপি) পুলিশে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, উপ পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার এবং সহকারি পুলিশ কমিশনারসহ প্রায় চারশ নারী পুলিশ কর্মরত থাকলেও সিএমপিতে নারী ওসির সংখ্যা শুন্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিএমপিতে কর্মরত দুই-একজন উর্দ্ধতন নারী পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়া বাকি সবাইকে দাপ্তরিক কাজে পোস্টিং দেয়া হয়। কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও যোগ্যতা থাকার পরও থানাগুলোতে মাঠ পর্যায়ের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পোস্টিং নেই কেনো নারী পুলিশ সদস্যের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সিএমপির ১৬টি থানার মধ্যে কোনো থানাতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদে নেই কোনো নারী পুলিশ সদস্য। এছাড়া উপ-পরিদর্শক (এসআই) সহকারি উপ-পরিদর্শক(এএসআই) ও কনেস্টেবল পদে নারী পুলিশ সদস্যদের পোস্টিং থাকলেও তাদের দেয়া হয় না মামলা তদন্ত বা মাঠ পর্যায়ের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের কাজ। থানাগুলোতে জিডি লিখা ও সেবাপ্রার্থীদের অভ্যর্থনা জানানো ছাড়া প্রকৃত পুলিশিং দায়িত্ব নেই নারী পুলিশ সদস্যদের।

সিএমপিতে কর্মরত নারী পুলিশ সদস্যরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আক্ষেপের সাথে জোড় দাবী জানান, সিএমপির ১৬টি থানার মধ্যে যে কোনো একটি থানায় একজন নারী পুলিশ পরিদর্শককে ওসি হিসেবে পাদায়ন করা হলে নীচের পদে থাকা নারী পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালনে আরও বেশি উৎসাহিত হবে।  এছাড়া নারী পুলিশ সদস্যদের দিয়ে শুধুমাত্র দাপ্তরিক কাজ না করিয়ে থানাগুলোতে মামলা তদন্তের সুযোগও চান তারা।

পুলিশিং ব্যবস্থায় নারী পুলিশের কাজ করার অনেক বেশি সুযোগ রয়েছে জানিয়ে নগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান বলেন, আমিও চাই মামলা তদন্তসহ,ঝুকিপূর্ণ সব কাজে নারী পুলিশের অংশ গ্রহন নিশ্চিত হোক। চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে নারীরা এগিয়ে আসুক। আগামীতে থানাগুলোতে তদন্তসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণমূলক কাজ করার সুযোগ আরও বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল সিএমপির সদরঘাট থানাতে পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে পদায়ন হয় নারী পুলিশ পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার মর্জু’র। নিজ কর্মগুণ ও যোগ্যতার বলে একই থানাতে ২০১৬ সালের ২৬ মার্চ দেশের তৃতীয় ও সিএমপির একমাত্র নারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদায়ন হয় তার। পরে তাকে নিয়মিত বদলী করা হয়।