অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

স্বাস্থ্য, ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় টমেটো

0
.

কারো ভালো স্বাস্থ্য দেখে যখন আমরা প্রশংসা করি তখন বলে উঠি ‘তোমার গালগুলো টমেটোর মত গোল’। ভালো স্বাস্থ্যের জন্য পাকা ও সরস টমেটোর জুড়ি নেই। কিন্তু আপনি কি কখনো কল্পনা করেছেন যে টমেটোর উপকারিতা এতো বেশি শক্তিধর? আসুন দেখে নেওয়া যাক-

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টমেটো:

টমেটো একটি ভরা খাবার
টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে পানীয় উপাদান আছে। ফলে এটি একটি ভারি খাবার হিসেবে কাজ করে। টমেটোতে বিদ্যমান পানীয় উপাদান ত্বকে আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে ও ত্বক উজ্জ্বল করে।

ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান
এটি শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ২০শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসআইডি) তথ্য অনুযায়ী মানুষের শরীরের যথাযথ কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি টমেটোতে বিদ্যমান।

হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করে
টমেটো প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। এটি প্রায় ২৩৭ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম দিতে পারে যা হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করে ও স্ট্রোক প্রতিরোধে সাহায্য করে।

চোখের রোগ প্রতিরোধে
টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স ও নিয়াসিন ইত্যাদি যা ত্বক ও চোখের রোগের প্রতিকার করে।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়
টমেটোতে প্রচুর খনিজ ও পুষ্টি থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরল থেকে আমাদের শরীরকে সুরক্ষা দেয়।

হাঁড় ও দাঁতের যত্নে
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় টমেটো হাঁড় শক্তিশালী করে ও হাঁড়ের গঠন উন্নত করে। এটি সুস্থ দাঁতের জন্যেও উপকারি।

ক্যান্সার প্রতিরোধে
এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করে বলে ফুসফুস, কোলন ও স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে। টমেটোর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের গুলো কারসিনোজেনিক প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করে ক্যান্সারের চিকিৎসায় সহায়তা করে।

কোষ ও পেশি ঠিক করে
এটি প্রোটিন সমৃদ্ধ উৎস। যা কোষ পুনরুদ্ধার ও পেশি গঠনে সাহায্য করে।

ত্বকের সুরক্ষায় টমেটো:

উজ্জ্বল ত্বক
টমেটোর রস ও পেস্ট ত্বক পরিস্কার করে ও ত্বকের ক্ষতিকারক উপাদান বের করে দেয়। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতার জন্য প্রসিদ্ধ।

বয়সের চিহ্ন কমায়
টমেটো ও এর উপাদান ত্বকের অক্সিজেন শোষণে সাহায্য করে ও বয়সের ছাপ কমায়। এটি প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের জন্য আশ্চর্যভাবে কাজ করে ফলে ত্বক তরুণ ও স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠে।

প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন
কিছু গবেষণায় বলা হয়, টমেটোতে লাইকোপেন নামক এক ধরণের প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা ত্বককে ক্ষতিকারক আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে।

কোষের ক্ষতিরোধ করে
প্রতিদিন অন্তত ১৬মিলিগ্রাম লাইকোপেন গ্রহণ করলে ত্বকের ক্ষতি কমে ও ত্বক সজিব হয়ে ওঠে। এটি কোষের ক্ষতি প্রতিহত করে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে ও বলিরেখা পড়তে দেয় না।

রোদে পোড়া থেকে সুরক্ষা
প্রিভেনশন ম্যাগাজিনের তথ্যমতে যারা টানা তিন মাস ধরে দিনে পাঁচ টেবিল চামচ টমেটো খান, তারা প্রাকৃতিকভাবেই সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা পান।

চুলের যত্নে টমেটো

চুল পড়া কমায়
চুল পড়া রোধে টমেটোকে একটি চমৎকার প্রতিকার হিসেবে ধরা হয়। টমেটোর রস মাথার ত্বকে লাগালে চুল পড়া কমে যায়।

প্রাকৃতিক কন্ডিশনার
টমেটো হলো একটি আশ্চর্য রকমের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার, যা রান্না ঘরেই পাওয়া যায়। এটি চুলকে প্রাকৃতি উজ্জ্বলতা দেয় ও চুলকে নরম করে।

চুলের দাগ কমায়
প্রতিনিয়ত সাঁতার কাটলে পুলের পানিতে থাকা ক্লোরিন চুলে লেগে যায় ও চুলের রঙ পরিবর্তন করে। এক্ষেত্রে চুলের দাগ তুলতে টমেটো খুব ভালো সাহায্য করতে পারে।

খুশকি দূর করে
টমেটো ফাটা ত্বক ও খুশকি যুক্ত ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। ফাটা ত্বক ও খুশকি যুক্ত ত্বক একজিমা ও সোরিয়াসিস রোগের কারণ হতে পারে। টমেটোতে থাকা ভিটামিন ‘সি’ এসবের বিরুদ্ধে সরাসরি কাজ করে।

চুলের গন্ধ দূর করে
টমেটোর রস চুলে গন্ধ কমাতে সাহায্য করে। টমেটোর রস আলতোভাবে মাথায় লাগিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য ম্যাসাজ করুন ও ৩০মিনিটের জন্য রেখে দিন।