অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

৮ ঘণ্টার কম ঘুমালে যেসব বিপদ!

0
.

অনেকেই আছেন, যারা কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে গিয়ে রাতে দেরিতে ঘুমাতে যান। আবার সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ছুট দেন কর্মক্ষেত্রে। এসব কারণে নিয়মিতভাবে কম ঘুমান তারা। এরপরও শরীরের সব কিছু ঠিক আছে বলে মনে করেন। ভাবছেন, পুরোপুরি সুস্থ আছেন! তাহলে ভুল করছেন। কারণ কাজের চাপ ও কম ঘুমানোর ফলে ভেতরে ভেতরে আপনি জটিল অসুখের শিকার হতে পারেন।

প্রতিদিন অন্তত আট ঘন্টা ঘুমানো জরুরী। এর চেয়ে কম ঘুম হলে শারীরবৃত্তীয় ও মানসিক সমস্যা হতে পারে। আসুন, দেখে নিই, কম ঘুমের কারণে কি ধরনের জটিল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

বিষণ্ণতা

কম ঘুমোচ্ছেন অথচ শরীর তো সুস্থই আছে। কিন্তু কাজে সবসময় মন বসছে না। হাজারো আবোলতাবোল কথা বনবন করে পাক খাচ্ছে মাথার মধ্যে। কোনো কিছুর প্রতি ইচ্ছাশক্তি কমে যাচ্ছে । এরপরেও বলবেন আপনি সুস্থ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম ঘুম সবচেয়ে আগে প্রভাব ফেলে মনে। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে কম ঘুমের ফলে ডিপ্রেশন বা বিষণ্তায় ডুবে যেতে পারেন আপনি।

কের বয়স বৃদ্ধি

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বেড়ে যায় ত্বকের বয়স। ঘুম ঠিকমত না হলে কর্টিসল নামের হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এটি নষ্ট করে দেয় ত্বকের কোলাজেনকে। এদিকে কোলাজেনের কাজ হল ত্বকের টানটান বাঁধন ধরে রাখা। তাই কোলাজেন গেল তো ত্বকের যৌবনও গেল। শুধু তাই নয়, চোখের নীচে কালি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডার্ক সার্কেলে’র সংখ্যাও বেড়ে যাবে।

সেক্সের ইচ্ছা হ্রাস

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম ঘুমের ফলে শরীরে সেক্স হরমোনের ক্ষরণ কমতে থাকে। শুধু তাই নয় , কমে যায় উত্তেজনা সৃষ্টিকারী হরমোন। এটি কমিয়ে দেয় সেক্স করার ইচ্ছাও। রিল্যাক্স করার সময়ই যদি না মেলে তবে সেক্সের ইচ্ছাই বা আসবে কী করে? ফলে যখন সত্যি সেক্সের প্রয়োজন, তখন আগ্ৰহই মিলবে না কিছুতেই।

হৃদরোগ

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, কম ঘুম বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের সম্ভাবনা। কম ঘুম হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনে ব্যাঘাত ঘটায়। দীর্ঘদিন কম সময় ঘুমোলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা তো কম নয়ই বরং হার্ট ফেইলিওরও হতে পারে। এ ছাড়াও ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস এর মত বিপজ্জনক রোগগুলোও চিরসঙ্গীর মতো আপনার শরীর বাসা বাঁধবে।

স্থূলতা

লোকে বলে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মোটা হচ্ছে। অথচ কম ঘুমোনো সত্ত্বেও আপনি আগের তুলনায় মোটা হয়ে যাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর জন্য দায়ী পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া। পর্যাপ্ত না ঘুমোলে খিদে বেশি পায়, এমনটাও দেখা গেছে বিভিন্ন গবেষণায়। বেশি খাচ্ছেন অথচ কম ঘুমের জন্য বিএমআর রেট সঠিক নয়। ফলে শরীরে জমছে অতিরিক্ত ফ্যাট যা স্থূলতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

ভুলে যাওয়ার প্রবণতা

মস্তিস্কের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশ্রামও দরকার। নয়তো সে ধীরে ধীরে হারাতে থাকে বিভিন্ন ভাগের শক্তিগুলো। ঘুম পর্যাপ্ত না হলে মস্তিস্কের স্মৃতির অংশটি দুর্বল হতে থাকে যা ভুলিয়ে দিতে থাকে আপনার অতি প্রয়োজনীয় ঘটনা বা কথাগুলোও।

দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়ায়

কম ঘুমের ফলে মস্তিস্ক ঠিকঠাক নির্দেশ দেওয়া-নেওয়া করতে পারে না। ফলে যা করতে চান, তা না হয়ে অন্য একটা ভুল কাজ হয়ে যায়। এই সমস্যা অত্যন্ত বিপদের। যেমন রাস্তায় বেরিয়ে ঠিকঠাক গাড়ি চালাতে গেলেও মস্তিস্কের ভুলের জন্য হয়ে যেতে পারে বড়সড় ভুল। কম ঘুমিয়ে হয়তো অনেক কাজ সেরে ফেলা যায়। কিন্তু তাতে শরীরের প্রতি অন্যায় করা হয়। শরীর ঠিক না থাকলে কাজগুলোই বা তখন হবে কী করে। তাই সবার আগে নজর দিন নিজের শরীরে।