অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ডায়াবেটিস নিয়ে যেসব তথ্য সবার জানা প্রয়োজন

0
.

আমাদের দেশে বর্তমানে কতজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তার সুনির্দিষ্ট কোনও উপাত্ত নেই। সচেতন মানুষের হিসাবে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা।

আমরা চাকরিজীবী হই বা ব্যবসায়ী, আমাদের কারও আসলে নিজের বা পরিবারের জন্য আলাদা স্বাস্থ্য বাজেট নেই।

ফলে শরীর যখন চলতে পারে না তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে রোগ মুক্তির আশা করি। আবার অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, এক রোগের সন্ধান করতে গিয়ে আরেকটি রোগ খুঁজে পাওয়া যায়। এর মাঝে সবচেয়ে কমন রোগটি হল ডায়াবেটিস।

পারিবারিকভাবে ডায়াবেটিস হয়তো আমরা অনেকেই পেয়ে থাকি কিন্তু আধুনিক সমাজে যান্ত্রিকতার মাঝে কায়িক শ্রমের অভাবে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

সুখে থাকলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে মানে যখন আমরা যা যতটুকু ক্যালোরি গ্রহণ করি তা খরচ করতে না পারলে তাই আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের ফলে কী কী ঘটে তা আমরা অনেকেই জানি, তাই সেদিকের আলোচনায় যেতে চাচ্ছি না। এর ফলে আমাদের শরীরে যেসব ক্ষতিকর পরিবর্তন হয় তার মাঝে একটি হলো- এটি আমাদের শরীরের রক্তসঞ্চালনকারী শিরাধমনীর ক্ষতি করে। ফলে স্বাভাবিক কাজের ব্যাতয় ঘটে। সৃষ্টি হয় নানাবিধ সমস্যা।

হার্টের, ব্রেইনের, কিডনির সমস্যার পাশাপাশি সমস্যা হয় পায়ের অনুভূতির। প্রাথমিক পর্যায়ে পায়ের জ্বালাপোড়া, শিরশির করা, ব্যাথা করা ইত্যাদি হয়ে থাকে। রক্তের সুগারের মাত্রা ঠিক না থাকলে আসতে আসতে পায়ে ঘায়ের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় ছোটখাটো কাঁটাছেড়া সহজে ভালো হয়না। ছোট থেকে বড় ক্ষতের সৃষ্টি হয়।

ডায়াবেটিস হলে করণীয়-

১। নিয়মিতভাবে ভালো করে ক্ষতস্থানের যত্ন নেওয়া,

২। ক্ষতস্থান যুক্ত পায়ের ওপর চাপ কমানো,

৩। রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ,

৪। সুষম পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া,

৫। পায়ের শিরাধমনীর রক্ত সঞ্চালন ঠিক আছে কিনা তা নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষা করা,

৬। সঠিক এন্টিবায়োটিক সঠিকভাবে ব্যবহার করা।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে করণীয়

১। পা পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখা।

২। সঠিক মাপের জুতা ব্যবহার করা,

৩। নিজে হোক বা অন্যের সহযোগিতায় নিয়মিত পা পরীক্ষা করে দেখা।

৪। খালি পায়ে হাঁটাচলা না করা।

৫। পায়ে শক্ত কিছু হলে, ছোটখাটো আঘাত পেলে, নখের ভেতরের দিকে সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া,

৬। রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ রাখা

৭। ধূমপান পরিহার করা।

পায়ের ক্ষত না সারলে কী করা যায়?
অনেক সময় দেখা যায়, দিনের পর দিন ড্রেসিং করে, এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করেও ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে রোগীকে নিয়মিত হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয় অথবা ভর্তি থাকতে হয়। এতে পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।

অনেক কিছুর পরও দেখা যায়, রোগীর পায়ের আঙুল বা আরও খারাপ হলে পায়ের বড় অংশ কেটে ফেলা লাগে। রোগী নিজে পঙ্গু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে পরিবার পঙ্গু হয়ে যায়।

এসব ক্ষেত্রে রোগীর নিজের রক্ত থেকে পিআরপি নামক একটি জিনিস তৈরি করে সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে চমৎকার ফল পাওয়া যায়।

গবেষণায় যেমন প্রমাণিত সেই সাথে আমাদের দেশেও এর ব্যবহার হচ্ছে নিয়মিত।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেন্টার ফর মেডিকেল বায়টেকনলজি (মহাখালী জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে অবস্থিত) থেকে এখন পর্যন্ত বিনামূল্যে এসব রোগীকে পিআরপি দেওয়া হচ্ছে।এছাড়া বিএসএমএমইউতেও এটি চালু রয়েছে। একেবারে স্বল্পমূল্যে তৈরি সম্ভব বলে এর সঙ্গে ধনী গরিবের ফারাক নেই।

আমাদের দেশের ভেতরেই অনেক চিকিৎসা সম্ভব, অনেক ক্ষেত্রে সঠিক প্রচারের অভাবে আমরা অনেকেই সেটি জানতে পারি না।