অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পটিয়া শ্রীমাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপরেঃ বাড়ী ঘর নদীতে বিলীন

0
.

সনজয় সেন.পটিয়া প্রতিনিধি:

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের একটি গ্রামীণ সড়ক শ্রীমাই খালে বিলীন হয়ে গেছে। যার ফলে এলাকার লোকজন দুর্ভোগের কবলে ভোগান্তিতে। বৃষ্টিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন পটিয়ার সবজি ক্ষেত, মাছের পোনা পুকুর, মাটির ঘর। বর্তমানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানি শ্রীমাই খালের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় পানির ঢলে হাইদগাঁও, কচুয়াই, ভাটিখাইন, ছনহরা এলাকার ফসলি জমি সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। শনিবার ভোরে হাইদগাঁও ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের অন্নদা দত্ত সড়কের বেশির অংশ খালে বিলীন হয়ে গেছে।

শ্রীমাই খালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দুই পাশে যেসব ফসলি জমি রয়েছে তাও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বালুতে ভরাট হয়ে গেছে ফসলসহ জমি। ক্ষমতাশীন দলের অনেক নেতাকর্মী ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। খালের ভাঙন জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে আশপাশের এলাকায় আরো ক্ষতি হওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

এদিকে পটিয়ার পাহাড়ে লেবু বাগান পরিচর্যা করতে যাওয়ার সময় শ্রীমাই খালের পড়ে পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছেন আব্দুন নবী ৫৫ নামে একজন। ৪ দিন ধরে তিনি নিখোঁজ বলে জানান তার নিকট আত্মীয় মো. মহিউদ্দিন।

জানা গেছে, প্রবল বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন ও একটি পৌরএলাকায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পটে হাঁটু পরিমান পানি জমে রয়েছে। যার কারণে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে। অতি বৃষ্টির কারণে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে। এদিকে, উপজেলার ছনহরা, কচুয়াই ও ভাটিখাইন এলাকায় শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে অসংখ্য মানুষের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন আশপাশের মানুষের বসতঘরে গিয়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে চাল, শুূকনা খাবার বিতরণ শুরু হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে অনুদান প্রদান করেছেন।

গত ৭ জুলাই শুরু হওয়া টানা ৭ দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার ১৭ ইউনিয়নে বেশ কিছু রাস্তা এখনো ডুবে রয়েছে। উপজেলার পাচুরিয়া এলাকায় সড়ক জনপথ বিভাগের উদ্যোগে খালের উপর একটি ব্রীজ নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের ধীরগতির কারণে ও খালের মূখ মাটি দিয়ে ভরাট করে রাখার কারণে ওই এলাকায় বৃষ্টির পানি আটকে রয়েছে। ফলে মনসা, হুলাইন, পাইরোল, বড়লিয়া, কুসুমপুরা, মেহেরআর্টি, হাবিলাসদ্বীপ এলাকার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কচুয়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক জসিম জানিয়েছেন, প্রবল বর্ষনে তাদের এলাকার আজিমপুর গ্রামীণ একটি সড়কসহ কয়েকটি সড়কের বেহাল অবস্থা হয়েছে। শ্রীমাই খালের পাড় ভাঙনের কারণে তাদের এলাকাসহ কিছু বসত ঘর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গ্রামবাসীর উদ্যোগে বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাঙন রোধে সরকারিভাবে উদ্যোগ না নিলে যে কোন মুহুর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙে আরো বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা।

বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শকালে জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী বলেন, পটিয়ায় বন্যায় দুর্গতদের পাশে অতীতেও ছিলেন, এখনো আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে শেখ হাসিনার সরকার মোকাবেলা করার সকল উদ্যেগ গ্রহণ করেছেন বলে তিনি জানান।