অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সিএমপি কমিশনারকে চিঠি দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করল ইসকন

3
.

নগরীর বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে জম্মাষ্টমি উপলক্ষে হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসকনের পক্ষ থেকে শিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক এবং ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টির প্রেক্ষিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারের বরাবরে চিঠি দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

চিঠিতে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ ভবিষ্যতে আরও সতর্কতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করারও অঙ্গীকার করেছেন।।

সিএমপি কমিশনার মাহাবুবর রহমানকে লেখা ওই চিঠিটি ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক দারুব্রহ্ম জগন্নাথ দাস স্বাক্ষরিত চিঠির একটি কপি পাঠক ডট নিউজের কাছে এসেছে।

এছাড়া সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) আবু বক্কর সিদ্দিক চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

.

চিঠিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে ইসকন ফুড ফর লাইফের খাবার বিতরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচার চালানো হচ্ছে তার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বসাধারণের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রথযাত্রা অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মহানগরীর ১০টি স্কুলে ইসকনের পক্ষ থেকে হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। রথযাত্রার শুভেচ্ছা হিসেবে প্রতিবছর এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে যে, এই সেবামূলক মহৎ কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মানসে এ কার্যক্রম সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে মঠ, মন্দিরে হুমকি প্রদান ও সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু কিছু নেতিবাচক সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে। এখানে একটি স্কুলের খাবার গ্রহণের ভিডিও ধারন করে অন্য একটি স্কুলের সাইবোর্ড ব্যবহার করে ধর্মপরায়ন মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।’

এই কার্যক্রমে শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্রছাত্রীদের মাঝে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বিতরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার শুধুমাত্র একটি স্কুলে হিন্দু ছাত্রছাত্রীরা হরে কৃষ্ণ মন্ত্র বলেছে।’

নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে ওই চিঠিতে ইসকন বলেছে, সংগঠনটি বাংলাদেশে শুধুমাত্র হিন্দুদের মাঝে ধর্মীয় প্রচারমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। পাশাপাশি সব ধর্মমতের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল। অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া বা তাদের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করা ইসকনের ভাবদর্শের পরিপন্থী বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে প্রচলিত সাংবিধানিক রীতিনীতি, আইনকানুন এবং সকল ধর্মের প্রতি বাংলাদেশ ইসকন সর্বদা শ্রদ্ধাশীল ও আন্তরিক। আবহমান বাংলার চিরায়ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য আমরা ধারন করি এবং দলমত নির্বিশেষে সকলের সহাবস্থানের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ গঠনে আমরা বদ্ধ পরিকর। সকলকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হলো।’

এরপরেও কেউ যদি ইসকনের আচরণে দুঃখ পেয়ে থাকেন বা কারও মনে আঘাত লেগে থাকে তবে সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে ইসকন। চিঠিতে বলা হয়, ‘তথাপি আমাদের আচরণে অনভিপ্রেতভাবে যদি কেউ দুঃখ পেয়ে থাকেন বা কারো মনে আঘাত লেগে থাকে সেজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ভবিষ্যতে আরও সতর্কতার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করবো। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করছি।’

উল্লেখ্য গত কয়েকদিন ধরে এই ইস্যূতে সামাজিক যোগাযোগ ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারে গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন।

ইতোমধ্যে যে ১০টি বিদ্যালয়ের নাম এসেছে এসব বিদ্যালয় এবং ইসকন কার্যালয়ে যান গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।  ডিচিএফআই’র একজন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানিয়েছেন কয়েকটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি তাদের অজান্তে হয়েছে জানিয়েছে কেউ কেউ স্বীকার করেছে।  তাছাড়া কিছু তথ্য প্রমান পাওয়ার পর সেগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানা।

এদিকে অপর একটি সুত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইসকন কার্যালয়ে গিয়ে তাদের চলমান ফুট ফর লাইফ কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।

৩ মন্তব্য
  1. Maruf Uddin Nirub বলেছেন

    ইসকন নামক সংগঠনটি নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে একটা বিরাট বিরূপ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।

    এক্ষেত্রে আমার মনে হয়, বাংলাদেশের হিন্দু নেতা ও সংগঠনগুলোর পরিস্থিতি সমাধানে এগিয়ে আসা উচিত। তাদের অবস্থান পরিস্কার করে বলা উচিত, “ইসকন যে কাজ করেছে তার দায় বাংলাদেশের হিন্দুরা বহন করবে না এবং ইসকনের কাজ অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর পায়তারা”, প্রয়োজনে সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র করার জন্য হিন্দুনেতাদের উচিত ইসকনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া।

    আমার জানা মতে, ইসকন হিন্দু ধর্ম থেকে আগত কোন সংগঠন না এবং সংগঠনটি তৈরী হয়েছে আমেরিকা নিউইয়র্কে এবং সংগঠনটির প্রধানও খ্রিস্টান চার্চ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা এক ব্যক্তি। এই সংগঠনটি বাংলাদেশে সনাতন হিন্দুদের কাছে আতঙ্কস্বরূপ, কারণ এই সংগঠনটি যেখানেই যায়, সেখানেই সনাতন হিন্দুদের মন্দির দখল করতে উঠেপড়ে লাগে।

    ঢাকার স্বামীবাগের ইসকন মন্দিরটি আগে একটি সনাতন হিন্দু মন্দির। সেই মন্দিরের জমির মালিক সনাতন হিন্দু ব্যক্তিকে মামলা মোকাদ্দমা দিয়ে সেখানে তারা ইসকন মন্দির গড়ে তুলেছে। একইভাবে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকায় শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দিরে সনাতনদের উপর অত্যাচার করে আসছে ইসকনীরা। ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রশিক রায় জিউ মন্দিরে দুর্গাপূজা নিয়ে ইসকনপন্থি ও সনাতন ধর্মালম্বীদের সংঘর্ষ হয়। এসময় ইসকন ভক্তদের হামলায় ফুলবাবু নামে একজন সনাতন নিহত হয়। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা প্রশাসন মন্দির সিলগালা করে কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। তারপর থেকে ওই মন্দিরে পূজার সময় সংঘর্ষের আশঙ্কায় স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। (https://bit.ly/30BPTVV)

    ইসকন সংগঠনটি উগ্র ধরনের সংগঠন। বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজ করে, সেটা ভাঙ্গার জন্য বার বার চেষ্টা করে এই সংগঠনটি। যেহেতু পার্শ্ববর্তী ভারতে উগ্র হিন্দুরা সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর নির্যাতন করছে, সেহেতু বাংলাদেশে সেই সাম্প্রদায়িকতার উল্টা রেশ আনার জন্য প্রয়োজন এ অঞ্চলে মুসলিমবিরোধী বিভিন্ন কাজে ইন্ধন দেয়া, যেন মুসলমানরা সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর ক্ষেপে যায়। এ কাজটি বিভিন্ন সময় রুটিনওয়ার্ক হিসেবে দিয়ে থাকে ইসকন। যেমন-
    ১) ২০১৪ সালে স্বামীবাগে তারাবীর নামাজে বাধা দেয় ইসকন । সে সময় হিন্দু-মুসিলম সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়। পুরো দেশে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি বিরাজ করে। (https://bit.ly/2JKBWy4)
    ২) ২০১৬ সালে সিলেটে ইসকন মন্দির থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদের মুসল্লীদের উপর গুলি বর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ইসকনীদের হামলায় ডজনখানেক মুসল্লী গুরতর আহত হয়। (https://bit.ly/2y1GVaq)
    ৩) ইসকনের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়ায় ২০১৬ সালে খুন হয় সিলেটের এক মসজিদের ইমাম।(https://bit.ly/2YZXBsu)

    বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এখানে হিন্দু-মুসলিম একত্রে শান্তিতে বাস করে, কিন্তু ইসকন নামক উড়ে এসে জুড়ে বসা সংগঠনটি সেই সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করে মুসলিম-হিন্দুর মধ্যে বড় ধরনের দাঙ্গা বাধাতে চায়, যার পরবর্তী সুবিধা নিবে ভারতের উগ্র বিজেপি ও রামভক্তরা। আর এটা মেনে নিতেই হবে, বাংলাদেশে দাঙ্গা হলে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে সখ্যালঘু সনাতন হিন্দুরা। তাই ভবিষ্যতে হিন্দুদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের স্বার্থেই বাংলাদেশে ইসকন নামক ভুইফোর সংগঠনটি নিষিদ্ধ করা উচিত।

  2. Momor Baap বলেছেন

    শুধু সতর্কতা নয়,এ ধরনের কর্মকাণ্ড একেবারেই বন্ধ করা হউক|

  3. Jakir Hossen Ziku বলেছেন

    ইসকন একটি উগ্রবাদী সংগঠন। এরা দেশের মধ্যে সামপ্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পায়তারা করছে, অবিলম্বে ইসকনের কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করা হোক। প্রতিটি মুসলমানের মনে তারা আগুন জ্বলিয়েছে, এই সূত্র ধরে অশুভ শক্তি সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। তার আগেই এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করুন।