অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

স্বামীর মাথা কেটে ছেলেধরা বলে চালানোর পরিকল্পনা প্রবাসী স্ত্রীর, আটক ৪

0
.

স্বামীর মাথা কেটে আলাদা করে এটি ছেলেধরার কাজ বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন তানিয়া খাতুন নামে এক নারী। সৌদি আরব প্রবাসী এই নারী তার পরকীয়া প্রেমের জন্য এমন পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে তার সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।

রাজশাহীর পুলিশ ইতিমধ্যে তানিয়ার পরকীয়া প্রেমিকসহ চারজনকে আটক করেছে।

তানিয়া বাগেরহাটের মোল্লাহাট থানার গোড়ফা গ্রামের কাঞ্চু শিকদার ওরফে কাঞ্চনের স্ত্রী। কাঞ্চনের বাবার নাম জালাল শিকদার।

একই গ্রামের রবিউল শেখের ছেলে রাসেল শেখের (২৪) সঙ্গে তানিয়ার পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে রাসেলকে আটক করা হয়েছে।

আটক অন্য তিনজন হলেন-নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে মো. সজীব (১৯), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকার মো. পারভেজ ওরফে মোশাররফ হোসেনের ছেলে মিরাজ হোসেন (১৯) এবং পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগি গ্রামের মজিব মৃধার ছেলে মো.কাওসার (২০)। কাওসার ভাড়া থাকেন ফতুল্লা এলাকায়। এই তিন যুবক তানিয়ার প্রেমিক রাসেলের বন্ধু।

তাদের আটকের পর রবিবার দুপুরে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, রাসেলের পরকীয়া সম্পর্কে তানিয়ার বাঁধা’তার স্বামী কাঞ্চন। তাই তানিয়া ও রাসেল কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা রাজশাহীতে কাঞ্চনকে গলা কেটে হত্যার পর সাম্প্রতিক সময়ের গুজব এটি ছেলেধরাদের কাজ বলে চালিয়ে দেয়ার ছক কষেন।

পরিকল্পনা মতো পাসপোর্ট করানোর নাম করে রাসেল তার তিন বন্ধুর সহায়তায় কাঞ্চনকে রাজশাহী নিয়েও আসেন। কিন্তু এখানে আসার পর পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

এসপি জানান,শনিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে কাঞ্চনকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বাসুদেবপুর ফুলতলা বাজারে নিয়ে যান মিরাজ ও কাওসার। সেখানে কাঞ্চনের মনে সন্দেহ জাগে। তাই তখনই তিনি চিৎকার করতে করতে দৌড় মারেন। এ সময় বাজারের লোকজন মিরাজ ও কাওসারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ছুরি ও চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করেছে।

থানায় নেয়ার পর পুলিশের জেরার মুখে আটক দুইজন জানান, আসলে তারা ছেলেধরা নন। তবে কাঞ্চনকে অচেতন করে তার মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তারা। পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে কাঞ্চন খুন হতেন বলেও জানান তারা।

পরে মিরাজ ও কাওসারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে রাসেল ও সজীবকে আটক করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।

এসপি মো.শহিদুল্লাহ বলেন,কাঞ্চনকে হত্যার পরিকল্পনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আটক চারজনের মধ্যে মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তায় হওয়া কথোপকথন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সৌদি আরব প্রবাসী তানিয়া তার স্বামীকে হত্যার জন্য ২০ হাজার টাকাও পাঠিয়েছিলেন। তবে সাধারণ মানুষের সচেতনতার কারণে কাঞ্চন প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাজশাহীর চারঘাট থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান,ঘটনার পর কাঞ্চন ভয়ে বাগেরহাট পালিয়ে গেছেন। তবে তাকে ডাকা হচ্ছে। তিনি আসছেন। আর তার আসতে দেরি হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকেই আটক চারজন ও প্রবাসী তানিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

চারঘাট থানার এসআই বজলুর রহমান মামলার বাদী হচ্ছেন। সোমবার সকালে ওই চার যুবককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলেও জানান ওসি।