অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বরিশালে লঞ্চডুবি: ১৩ লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ অর্ধশত

0
b
বরিশালে লঞ্চ ডুবির পর উদ্ধার তৎপরতা।

বরিশালের জেলার বানারীপাড়া উপজেলার সন্ধ্যা নদীর সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের মসজিদবাড়ির দাসের হাট এলাকায় এমএল ঐশি-২ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবির ঘটনায় চারজন নারী ও দুইজন শিশুসহ ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী।

বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ভাঙনের কবলে পরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল স্থানীয়দের সহায়তায় চেষ্ঠা চালিয়ে ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সনাক্ত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর থেকেই নদীর তীরে নিখোঁজদের স্বজনদের আহাজারিতে ওই এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।

খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি, প্যানেল স্পীকার এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস এমপি, জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামানসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশালের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার জানান, লঞ্চ ডুবির ঘটনায় বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত উজিরপুরের হারতা গ্রামের সুকদেব মল্লিক (৩০), রাবেয়া বেগম (৫০), মোজাম্মেল মোল্লা (৬০), রুপা বেগম (২৫), সাগর মীর (২৪), জিরাকাঠী গ্রামের মিলন ঘরামী (৩৫), মশাং গ্রামের শান্তা (৮) সহ ১০ জন এবং দুপুর একটার দিকে রহিমা বেগম (৬৫), অজ্ঞাত (৮) এক শিশু, বরিশাল শহরের কহিনুর বেগম (৪৫) সহ মোট ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চ ও নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল দুপুর দুইটা থেকে কাজ শুরু করেছেন।

ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন ১৫জন যাত্রী। এরমধ্যে সিদ্দিকুর রহমান ও তার স্ত্রী রোকসানা বেগম বলেন, বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে সন্ধা নদীর বানারীপাড়া লঞ্চ ঘাট থেকে ৭০ জন যাত্রী নিয়ে এমএল ঐশি-২ নামের একতলা লঞ্চটি উজিরপুরের হাবিবপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। বেলা বারোটার দিকে সন্ধ্যা নদীর সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের মজিদবাড়ি এলাকার দাসের হাট উত্তর পাড়ে যাত্রী ওঠানোর সময় নদীর পাড়ের বিশাল অংশ ভেঙ্গে লঞ্চের ওপর পরে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। এসময় যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে এক পাশে আসলে লঞ্চটি কাঁত হয়ে মুহুর্তের মধ্যে ডুবে যায়। পরবর্তীতে তারা প্রায় ১৫ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় অন্যান্য যাত্রীরা ডুবে যাওয়া লঞ্চের সাথে নিখোঁজ হন।

দুর্ঘটনায় কবলিত লঞ্চটির যাত্রী আলেয়া বেগম বিলাপ করে বলেন, আমি সাঁতরে পারে উঠলেও আমার স্বামী জয়নাল হাওলাদারসহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন। দুর্ঘটনার সময় বৃষ্টি হওয়ায় লঞ্চের সকল জানালা বন্ধ ছিলো। ফলে বেশির ভাগ যাত্রীরা লঞ্চের মধ্যেই আটকা পরে আছেন।

বানারীপাড়া থানার ওসি জিয়াউল আহসান বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বলেন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ২০ জনের নামের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার কাজ শুরু করে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চটির স্থান সনাক্ত করে লাশ উদ্ধারের চেষ্ঠা করছেন। তিনি আরও জানান, নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলছে।