অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চমেক হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে দগ্ধ মেধাবী ছাত্রী লিমা

1
lima-pic-01
চমেক হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন কিশোরী লীমা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে দগ্ধ দরিদ্র মেধাবী ছাত্রী শাহিদা আক্তার লিমা। তার শরীরে ২০ শতাংশ দগ্ধ হলেও তা পরিমাণে গভীর এবং রক্তের সাথে জীবাণু মিশে যাওয়ায় লিমার অবস্থা আশংকাজনক।

গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া এলাকায় বৈদ্যুতিক তাঁরে জড়িয়ে দগ্ধ হয় লিমা।

বর্তমানে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে লিমা। অর্থের অভাবে তাঁর উন্নত চিকিৎসা করাও সম্ভব হচ্ছেনা দিনমজুর হত দরিদ্র পিতার। বর্তমানে লিমা চমেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের ৩০ নং বেডে চিকিৎসাধীন।

বুধবার বিকালে চমেক হাসপাতালে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায় লিমার অবস্থা। হাসপাতালে সাথে থাকা লিমার খালা জয়নাব এ প্রতিবেদকের কাছে তুলে ধরেন লিমা দগ্ধ হওয়ার সেই করুন চিত্র।

হাসপাতালে কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় লিমা তার আরো তিন বান্ধবীসহ পাশের চাচার বাড়ীর ছাদে উঠেছিল কাপড় শুকাতে দিতে। কিন্তু সেখানে যে তার মৃত্যু অপেক্ষা করছিল হয়তো জানতোনা লিমা। ছাদের একপাশে বৈদ্যুতিক তার সেঁত সেঁতে পানির সাথে আর্থিং হয়ে পড়েছিল আগ থেকেই।

lima-pic-03
আপনাদের একটু সহযোগিতা আর সহানুভূতি ফিরে পেতে পারে তার স্বাভাবিক জীবন।

তিন বান্ধবীসহ ছবিও তোলেন লিমা সেখানে। এসময় তাদেরকে কিছুটা বৈদ্যুতিক শট করে। বৈদ্যুতিক শটে আঘাত পেয়ে অপর তিন বান্ধবী নিজেদের জীব বাঁচাতে সক্ষম হলেও লিমা সেখানেই অচেতন হয়ে মুহুর্তেই লুটিয়ে পড়ে । তার তিন বান্ধবীর চিৎকার শুনে বাড়ীর লোকজন ছুটে আসলেও ততক্ষনে লিমার শরীরের ২০শতাংশ বিদ্যুতের আগুনে দগ্ধ হয়ে যায়।

লিমার মামা জসিম জানান, দগ্ধাবস্থায় লিমাকে প্রথমে পদুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার ও রাতেই চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে লিমা চমেক হাসপাতালে বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন ।

বার্ণ ইউনিটে কর্তব্যরত নার্স সিমা জানান, লিমার ডান পা, ডান হাত,কোমড়সহ শরীরের পুরো ডান পাশ বৈদ্যুতিক আগুনে ঝলসে গেছে। পা থেকে মাংস গুলো খসে পড়ছে। ডান বাহুর নীচে পচন ধরেছে। কোন ধরনের খাবারও খাওয়ানো যাচ্ছেনা তাকে। নাক দিয়ে তরল পানীয় খাবার দেওয়া হচ্ছে। নি:শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে তার। অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে।

চমেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আবদুল্লাহ আল কাউছার জাগোনিউজকে বলেন,লিমার শরীরের ২০ শতাংশ দগ্ধ হলেও তার শরীরের গভীরে পৌছে গেছে।

শরীরের পচন ধরা ক্ষত থেকে তার শরীরের রক্তের সাথে জীবানু মিশে গেছে। তার বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক উল্লেখ করে তিনি বলেন তাঁকে বাচানো অনেক কষ্ট হতে পারে।

lima-pic-02
কিশোরী লিমা আবার সুস্থ্ হয়ে স্বাভাবিত জীবনে ফিরে আসবে এমন কামনা তার পরিবারের।

লিমার মামা জসিম জানান এ ঘটনার সময় তার মেয়ে সোনিয়াও দগ্ধ হন। তার বাম হাতের একাংশ বৈদ্যুতিক আগুনে ঝলসে গেছে। বর্তমানে সোনিয়া পদুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তিনি জানান, এ ঘটনার পর লিমার চিকিৎসা করাতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। লিমার পিতা আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় চিকিৎসার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছেনা। তবে গ্রামের দু একজন আর্থিক সাহায্য করলেও তা একেবারেই অপর্যাপ্ত। অর্থের অভাবে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া প্রয়োজন হলেও তা সম্ভব হচ্ছেনা।

লোহাগাড়া পদুয়া সুফি ফতেহ আলী ওয়াইসী মহিলা মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী লিমা। পদুয়া মৌলবী পাড়ার দিনমজুর সৈয়দ আহমদের ২ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে লিমা দ্বিতীয়।

১ টি মন্তব্য
  1. Shahidul Islam বলেছেন

    মেয়েটি মারা গেছে।