অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

প্লটের আবেদন প্রত্যাহার করলেন রুমিন

5
.

বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা পূর্বাচলে প্লট নেওয়ার আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী বরাবর এক আবেদনের মাধ্যমে তিনি আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) জুয়েল আহম্মেদ বলেন, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্লট চেয়ে করা আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। প্রত্যাহারের আবেদনটি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এখনো মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আসেনি, এলে তা বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপাসনের গণমাধ্যম শাখার সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্লটের আবেদন প্রত্যাহার করে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জন্য তাঁকে বিএনপি ও তৃণমূলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

.

প্রত্যাহারের আবেদনে যা আছে

‘‘আগস্ট ২৭, ২০১৯

বরাবর

মন্ত্রী মহোদয়

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

ঢাকা, বাংলাদেশ

বিষয় : প্লটের আবেদন প্রত্যাহার

জনাব,

আমার দল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রাণ তৃণমূলের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুভূতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা জানিয়ে গত ৩ আগস্ট, ২০১৯ তারিখ সংসদের দাপ্তরিক ফরম্যাটে করা আমাদের পূর্বাচলের প্লটের আবেদনটি আমি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

ধন্যবাদান্তে

রুমিন ফারহানা

সংসদ সদস্য

৩৫০, মহিলা আসন-৫০’’

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ঢাকার পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় ১০ কাঠার প্লট চেয়ে গত ৩ আগস্ট গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিম বরাবর আবেদন করেন। সরকারের কঠোর সমালোচক রুমিন ফারহানার এ আবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সর্বত্র ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। তবে ব্যারিস্টার রুমিন বলেন, আমি সরকারের কাছে নয়, আবেদন করেছি রাষ্ট্রের কাছে। আর মন্ত্রী বলেছেন, বিধি অনুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয় সংসদের প্যাডে গত ৩ আগস্ট প্লটের বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেন ব্যারিস্টার রুমিন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন,

.

“বরাবর,

জনাব, শ. ম রেজউল করিম

মাননীয় মন্ত্রী

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা

বাংলাদেশ

বিষয় : ১০ (দশ) কাঠার প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন।

মহোদয়,

‘আপনার অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জানানো যাচ্ছে যে, ঢাকাস্থ পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় ১০ কাঠার প্লটের প্রয়োজন।

ঢাকা শহরে আমার কোনো জায়গা/ফ্ল্যাট, জমি নাই। ওকালতি ছাড়া আমার অন্য কোনো ব্যবসা/পেশা নাই। আমার নামে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দের জন্য সুব্যবস্থা করে দিতে আপনার মর্জি হয়।’

এমতাস্থায়, আপনার নিকট আমার আবেদন। আমার নামে দশ কাঠা প্লট বরাদ্দ করলে আমি আপনার নিকট চির কৃতজ্ঞ থাকব।

আপনার বিশ্বস্ত,

রুমিন ফারহানা

সংসদ সদস্য

একাদশ জাতীয় সংসদ ৩৫০-মহিলা আসন-৫০

তারিখ ৩-৮-২০১৯”

.

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা গত রোববার বিকেলে বলেন, ‘প্রত্যেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য রাষ্ট্রীয় এ সুবিধা পেয়ে থাকেন। আমি একজন সংসদ সদস্য হিসেবে পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় ১০ কাঠার প্লট চেয়ে আবেদন করেছি। আমি সরকারের কাছে আবেদন করিনি, আবেদন করেছি রাষ্ট্রের কাছে। প্রত্যেক এমপি, মন্ত্রী এ আবেদন করেছেন, কিন্তু কারো আবেদন প্রকাশ করা হয়নি। আমি অবৈধ সরকারকে অবৈধ বলে থাকি শুধু এ কারণেই কী আমার আবেদন প্রকাশ করা হলো?’

ব্যারিস্টার রুমিন আরো বলেন, ‘সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী না হওয়া সত্ত্বেও একজন রাজনীতিবিদ ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি এনেছেন। সে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই আমার এ বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে।’

‘এক মাস ধরে আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে রাখা হয়েছে। আমি থানায় জিডি করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু থানা আমার জিডি নেয়নি’- উল্লেখ করেন রুমিন।

ব্যারিস্টার রুমিনের প্লটের আবেদন প্রসঙ্গে মন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিম সেদিন বলেন, ‘আমি হজের জন্য দেশের বাইরে ছিলাম। চিঠির বিষয়ে আমি শুনেছি। মন্ত্রণালয়ে আমি এখনো যাইনি। মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর এ বিষয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

হলফনামায় ফ্ল্যাট রয়েছে রুমিনের

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীর কাছে গত ৩ আগস্টের আবেদনে ঢাকা শহরে তাঁর কোনো জায়গা, ফ্ল্যাট ও জমি নেই উল্লেখ করেন ব্যারিস্টার রুমিন। কিন্তু জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যে হলফনামা দাখিল করেন, তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ১৮৫০ বর্গ ফুটের একটি ফ্ল্যাট তিনি মায়ের কাছ থেকে পেয়েছেন। রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডের ওই ফ্ল্যাটটি তিনি বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেন হলফনামায়।

এ ফ্ল্যাট প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এ ফ্ল্যাট আমার নানি আমার মাকে দিয়েছিলেন। পরে মা সেটি আমার নামে লিখে দেন।’

একাদশ সংসদে আনুপাতিক হারে বিএনপি একটি সংরক্ষিত আসন পায়। সেই আসনে ব্যারিস্টার রুমিনকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। তিনি বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। গত ৯ জুন একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য হিসেবে শপথ নেন রুমিন ফারহানা।

শপথ শেষে রুমিন বলেছিলেন, ‘এই সংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। গঠিত হওয়ার পর আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই সংসদকে অবৈধ বলেছি। আমি এখনো তা বলছি। শুধু নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পক্ষে কথা বলতেই সংসদে যোগ দিয়েছে বিএনপি।’

টেলিভিশন টকশোর পরিচিত মুখ ব্যারিস্টার রুমিন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কাছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে মনোনয়ন চান। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে উকিল আবদুস সাত্তারকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি।  সুত্রঃ এনটিভি অনলাইন

৫ মন্তব্য
  1. Fahim khan বলেছেন

    খাওয়া জন্যে মুখ তো খুলেছেন এখন আর এইসব করে কোনো লাভ নেই । আপনার মত বিএনপির নেত্রীরা যে ক্ষমতায়র আসেন এইসব এর জন্যে সেটা দেশের জনগনের ভালো করেই জানে । বিএনপির এই নেত্রী এমন শেষ মেষ নিজের আসল রুপ দেখিয়ে দিল জনগনকে । এখন আর এইসব প্রত্যাহারের নাটক করে কোনো লাভ হবে না ।

  2. Nojrul Islam বলেছেন

    রুমিন ফারহানা এখন কেন প্লটের আবেদন প্রত্যাহার করলেন সেটি আমরা বুঝতে পেরেছি কারণ যখন তার নামে সমালোচনা শুরু হয়েছে এবং নিজ দলের নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তখনই তিনি এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।ক্ষমতার প্রতি এবং সরকারি সাহায্য গ্রহণ করার জন্য তার যে আকুল আবেদন ছিল সেটি আমরা দেখেছি এবং তার যে পরিমাণ রয়েছে সেটিও এই ধরনের কাজে প্রমাণিত হয়েছে। মজার বিষয় হলো সংসদকে এবং নির্বাচনকে অবৈধ বলার পরেও সংসদে এসে বড় বড় কথা বলা এবং সংসদীয় সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি যতটা কথা বলেছেন সব ছিল লোক দেখানো কথা।

  3. Ovi Das বলেছেন

    মিথ্যা তথ্য প্লটের আবেদন বাতিল হওয়ার ভয়ে আবেদনই প্রত্যাহার করে নিলেন রুমিন ফারহানা এটা কারো অজানা নয়। কারন সবার আগে তার প্রয়োজন ক্ষমতা। তাই তার এই পদ টিকিয়ে রাখার জন্য, সে প্লটের আবেদন প্রত্যাহার করেছে। কারণ তিনি ভেবে রেখেছে ক্ষমতা থাকলে এরকম হাজার প্লট দখল করে নিতে পারবে।

  4. Shahriyar Khan বলেছেন

    রুমিন ফারহানা চেয়েচিলেন গোপনে সরকারের কাছ থেকে প্লট নিয়ে, আরাম-আয়েশ করবে। কিন্তু তার চাওয়াটা যখন ভাইরাল হয়ে গিয়েছে, তখন তারেক জিয়ার চাপে দিনে আবেদনপত্র করে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ রুমিন ফারহানা হল তারেকের তৈরি করা এজেন্ট। তাই তার পথ গেলে তাদের সম্মানের ক্ষতি হবে এই ভেবে, রুমিনকে দিয়ে আবেদন প্রত্যাহার করে নিলেন।

  5. Rahul Sen বলেছেন

    নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের চাপে এবং সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের নানা ধরনের কথায় এখন রুমিন ফারহানা এর আবেদন বাতিল চেয়েছেন। কিন্তু ভালো করে যদি আমরা লক্ষ করি না হলে দেখতে পাব এই যে মহিলা প্রথম দিকে সংসদকে অবৈধ বললেও যখন তাকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হতে বলা হলো তখন তিনি আর না করলেন না। সংসদ যেহেতু অবৈধ তাহলে সংসদীয় সদস্য হিসেবে কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করাও অবৈধ এমনটাই কিন্তু আমরা বুঝি কিন্তু তিনি তা জেনেও কিংবা নিজে বলেও এখন কিভাবে আবার এই সুবিধা গ্রহণ করতে চাইলেন? সুযোগগুলো কাজে লাগাতে গিয়ে যখন প্রশ্নের সম্মুখীন হলেন তখনই তিনি এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।