অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

প্রবাসীর স্ত্রীকে মোবাইলে উত্যক্ত করায় মা-ছেলের পরিকল্পনায় চা দোকানীকে হত্যা

0
.

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালীর চাটখিলের মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কুলশ্রী গ্রামের চা দোকানদার শাহ আলম (৬০), হত্যাকাণ্ডে ১২ ঘন্টার মধ্যে এ খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

মুঠোফোনের কলের সূত্র ধরে কুলশ্রী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহ আলম’র স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (৩৮), ও তার ছেলে ইয়াছির আরাফাত শাক্ত (১৯), কে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে রহস্য উন্মোচিত হয়।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) গ্রেফতারকৃত ইয়াছমিন ও শান্ত নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শোয়েব উদ্দিন খান ও মুশফিকুল হক’র আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে নোয়াখালী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন নোয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আরো জানান,আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের চিহ্নিত করি। একই সাথে হত্যার সাথে সম্পৃক্ত লাঠিটি ও উদ্ধার করি। ইয়াসমিন আক্তার(৩৫)মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কুলশ্রী গ্রামের শাহ আলমের স্ত্রী। তার স্বামী কুয়েত প্রবাসী।

নিহতের মেয়ে শারমিন আক্তার সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, ওই দিন মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে নিহত শাহ আলমের মোবাইলে একাধিকবার কল আসে। এর কিছুক্ষণ পর তিনি ঘরের দরজা বাহির থেকে লাগিয়ে দিয়ে চলে যান। পরে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তিনি আর বাড়ীতে ফিরেন নি। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রযুক্তি সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত চাটখিল উপজেলার কুলশ্রী গ্রামের শাহ আলম’র স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (৩৮), ও তার ছেলে ইয়াছির আরাফাত শাক্ত (১৯), কে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ইয়াছমিনের বাবার বাড়ি থেকে গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে। পরবর্তিতে আসামীরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছমিন আক্তার জানায়, ভিকটিম শাহ আলম মোবাইলে ফোন দিয়ে প্রায় তাকে বিরক্ত করত এবং গভীর রাতে বসত ঘরের দরজা জানালায় টোকা দিত।

এ বিষয়ে ইয়াছমিনের ছেলে ভিকটিম শাহ আলমকে মুঠোফোনে শাসিয়ে দিলেও শাহ আলম ইয়াছমিনকে উত্যক্ত অব্যাহত রাখে।

পরে ইয়াছমিন তার ছেলে শান্ত’র সাথে আলাপ করে শাহ আলমকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াছমিন (৪ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক রাত একটার দিকে মোবাইল ফোনে শাহ আলমকে তার বাসায় ডাকে। এ সময় ইয়াছমিনের ছেলে এবং তার বন্ধুরা শাহ আলমের যাওয়ার পথে ওঁৎপেতে থাকে।

ইয়াছমিনের ফোন পেয়ে ভিকটিম শাহ আলম ইয়াছমিনের বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে কুলশ্রী গ্রামের আবুল কালামের দোকানের সামনে আসলে, ইয়াছমিনের ছেলে শান্তও তার বন্ধু শাহ আলমকে আটক করে, দোকান ঘরের পিছনে নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক ইয়াছমিনের ছেলে শান্ত ও তার এক বন্ধু মিলে কাঠের টুকরা দিয়ে শাহ আলমের ঘাঁড়ে আঘাত করে। পরে শাহ আলম উপুড় হয়ে পড়ে গেলে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। হত্যাকান্ডে জড়িত অপর আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।