অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

টিংকু দাশকে নিয়ে হাসান মনসুরের ফেসবুক ষ্ট্যাটাসঃ রাজনীতিতে সৌহাদ্যের বন্ধন

3
.

এক সময়ের আলোচিত তুখোড় ছাত্রদল নেতা ও নগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক টিংকু দাশ আকালে মারা গেলে মঙ্গলবার ভোরে।  তার মৃত্যুতে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

কিন্তু সাবেক ছাত্রদল নেতা টিংকু দাশের মৃত্যুতে স্মৃতিচারণ করে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন একজন আওয়ামী লীগ নেতা।  নগর আওয়ামী লীগ নেতা ও কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান মনসুরের এই স্ট্যাটাস অনেককে অবাক করেছে। দলীয় সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতার এই স্মৃতিচারণ রাজনীতিতে সৌহাদ্য এবং সহমর্মিতার চিত্রফুটে উঠেছে।

টিংকু দাশকে নিয়ে হাসান মনসুরের সে স্ট্যাটাসটি পাঠক ডট নিউজে পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল।

.

“১৯৯০ দশকের শুরুতেই তার সাথে পরিচয়। টিংকু দাশ মহানগর ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন সেই সময়, তার দল বি,এন,পি সরকারে। ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরের ২৮ তারিখ আওয়ামীলীগ আহুত ৪৮ ঘন্টার হরতালের এক মামলায় আমি গ্রেফতার হই। সেই সময় চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে বিভিন্ন মামলায় আটক ছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা- দল ক্ষমতায় তাই তারা কিছুটা সুযোগ সুবিধা পেতেন, দলবেঁধে তারা সবাই থাকতেন “জে ওয়ার্ড”। ছাত্রদলের আরেক নেতা ছিলেন অরুপ বড়ুয়া – তিনি ছিলেন টিংকু দাশ এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমি থাকতাম মেডিকেল ২ ইউনিট। একবার জেলে কি এক সমস্যায় – কারারুদ্ধ আমাদের ছাত্রলীগের ১৩ জনকে নোয়াখালী, কুমিল্লা, মাইজদী কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর ছাত্রলীগের সিনিয়র যাদের মামলা ছিল অথচ সাজা হয়নাই তাদের মধ্য বেছে বেছে বেশ কয়েকজনকে পাঠানো হয় কনডেম সেলে। আমাকে মেডিকেল থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সেলে। যেহেতু ডিটেনশন ছিল তাই মাসে একবার ভিজিটর Allow ছিল – ১০/১২ দিন পর ভিজিটর রুমে গিয়ে দেখলাম টিংকু দাশ সহকর্মীদের সাথে দেখা করতে এসেছেন। আমাকে মেডিকেল থেকে সেলে পাঠানো হয়েছে এই কথা শুনে বললেন – চিন্তা করবেননা, আমি এখান থেকে বের হতেই কারা চিকিৎসককে বলে দেব – দরকার হলে নোমান ভাইকে দিয়ে কল করাবো। পরদিনই আমাকে অফিস কল দিয়ে জানালো হল – কারা মেডিক্যালে আমার সিট বরাদ্দ হয়েছে।  সে একটিভ রাজনীতি করতো, দলের শীর্ষ নেতা ও তৎকালীন মন্ত্রীদের খুব কাছের ছিলেন – নিজেও প্রভাবশালী নেতা ছিলেন তবে পরে জেনেছি সে অর্থবিত্ত, টাকা পয়সা কিছুই করতে পারেনি। মামলা আর জেলেই তার সাম্প্রতিক বছরগুলো কেটেছিল।  এর পরেও আরেকবার কারাগারে ছিলাম সেবার আমরা একসাথেই S ওয়ার্ডে ছিলাম। কারামুক্তির পর নিজের বাসায় দাওয়াত দিয়েছিলেন রাতের খাবারের। ষোলশহরের আশেপাশেই তার বাসা – তার বাবা সম্ভবত ডাক্তার ছিলেন, যতক্ষন খাবার টেবিলে ছিলাম তার বাবা মামা ও তিনি চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, খাবার পাতে তুলে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে রাজনীতি নিয়ে সংকীর্ণতা ছিলনা – খুব মিশুক ছিলেন।  আদর্শে ভিন্নতা ও রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও তার সাথে রাস্তা ঘাটে সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা হলে হাত মেলাতেন, সালাম দিতেন, কথা বলতেন। ২০১৬ সালে নগর বিএনপি অফিসের সামনে রিক্সা করে যাচ্ছিলাম- আমাকে দেখেই রিক্সা থেকে নামিয়ে ফেললেন, রাস্তার টং দোকান থেকে জোর করে চা আর পিয়াজু খাওয়ালেন। এটাই সম্ভবত তার সাথে শেষ দেখা। আজ ভোরে বুকে ব্যাথা অনুভব করেছিলেন টিংকু, মেডিকেলে নেওয়া হলে সেখানেই তার অকাল ও আকস্মিক মৃত্যু হয়। তার আত্মার শান্তি কামনা করি।

৩ মন্তব্য
  1. Tanvir Ahmed বলেছেন

    ” Late Mr Bongo Bondhu Sheikh Mujibur Rahman & Late Mr Fojlul Quader Chowdhury. r Moddhau political understanding & Sroddhabod Chilo…… Ja Shobayi Jana.. .. At Present politics a shayta nay…but Mr Hasan Monsur Vai Shayta kora Dekhyachan.. . Salute Una k.

  2. Tanvir Ahmed বলেছেন

    ” Late Mr Bongo Bondhu Sheikh Mujibur Rahman & Late Mr Fojlul Quader Chowdhury. r Moddhau political understanding & Sroddhabod Chilo…… Ja Shobayi Jana.. .. At Present politics a shayta nay…but Mr Hasan Monsur Vai Shayta kora Dekhyachan.. . Salute Una k.

  3. Kajal Boinik বলেছেন

    তার মৃত্যু তে আমরা শোকাহত