দেড় কোটি টাকা নিয়ে পটিয়া থেকে উধাও হয়েছে ঋনদান ও সমবায় সমিতি ‘নিউ স্টার’। গ্রাহকের প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার পর পৌর সদরের বিওসি রোডের অফিসটি বর্তমানে গ্রাহকরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
সোমবার সকালেও বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা অফিসে বাইরে অবস্থান ও বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তবে অফিসের বাইরে তালা লাগানোর কারণে কেউ ভিতরে ঢুকতে পারেনি। অবশ্যই এর আগে বৃহস্পতিবার শেয়ার হোল্ডার এবং আমানতকারীর টাকা ফেরত চেয়েছিল। টাকা ফেরত দেওয়ার আগেই চম্পট দিয়েছে সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ সেকান্দও আলী নাছির (৩৬) ও সহোদও মোহাম্মদ আলী সেলিম (২৮)। তারা উভয়ে পটিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডস্থ ফজর আলী মুন্সির বাড়ির ফৌজ্জ্যারপুলের দক্ষিণ পাশের মৃত আনু মিয়ার পুত্র।
শেয়ার হোল্ডার ও আমানতকারী পশ্চিম হাইদগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মৃত হাজী এখলাছুর রহমানের পুত্র হুমায়ুনুর রশিদ বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১১ সালে দুই সহোদর মোহাম্মদ সেকান্দর আলী নাছির (৩৬) ও মোহাম্মদ আলী সেলিম (২৮) পটিয়া ‘নিউ স্টার সঞ্চয় ও ঋনদান সমবায় সমিতি লিঃ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান (রেজি- ১১০৪৬) গড়ে তোলে। এর অফিসের ঠিকানা দেখানো হয় পটিয়া বিওসি রোড়স্থ বজল সওদাগরের বিল্ডিংয়ের ২য় তলায়। ২০১৩ সালে অভিযোগকারীকে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মাধ্যম তথা চুক্তিপত্র, চেক ও সংগঠনের বইয়ের মাধ্যমে প্রায় ৫৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে। এসব টাকার বিপরীতে লভ্যাংশ দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়নি। গত দুই বছর ধরে সমিতি থেকে অভিযোগকারী সংগঠন থেকে অব্যাহতি এবং টাকা ফেরত চাইলে কালক্ষেপন করতে থাকে।
সর্বশেষ গত ১০ সেপ্টেম্বর অভিযোগকারীর সহ সদস্যদের টাকা ফেরত দেবে বলে জানায় এবং মোবাইল ফোনে একটি ম্যাসেজ প্রেরণ করে। গত বৃহস্পতিবার সকালে অফিসে গেলে সেখানে তালাবদ্ধ এবং মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ঘরের দরজা তালাবদ্ধ। এরপর গ্রাহকরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠে। স্থানীয়রা জানান, ওই সংগঠন বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার উপর আমানত সংগ্রহ করেছে। এরপর তারা লাপাত্তা হয়ে গেছে। বিওসি রোড়স্থ বিল্ডিংয়ের দোতলায় অবস্থিত সংগঠনের কার্যালয়ে তালা দেয়া রয়েছে।
স্থানীয়রা সংগঠনের কর্মকর্তাদের ব্যাপারে কোন তথ্য দিতে পারেনি। লাপাত্তা দুই সহোদরের বাড়িতে গিয়েও তাদের কাউকে পাওয়া যায় নি। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জাব্বারুল ইসলাম জানান, ওই ঘটনায় এক লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই সংগঠনের কার্যক্রমের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। সংগঠনের সভাপতিসহ লাপাত্তা দুই সহোদরকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। নিউ স্টার সঞ্চয় ও ঋনদান সমবায় সমিতিতে যারা সম্পৃক্ত ছিল তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সত্যতা পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।