অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

হাটহাজারীতে শ্বশুরবাড়ির লোকদের ফাঁসাতে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা, খুনি আটক

0
.

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে আরিফ নামে এক কিশোরকে হত্যা করে তার লাশ ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের তদন্তে বের হয়ে আসে হত্যাকারীর পরিচয়।

গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হাটহাজারী পৌর এলাকার কাঁচাবাজার থেকে হত্যাকারী মোঃ কোরবান আলি প্রকাশ বেলাল (২৮) কে আটক করে পুলিশ। বেলাল ফটিকছড়ি থানার মানিকপুর এলাকার মাইজপাড়া গ্রামের বদিউল মেম্বারের বাড়ির বদিউল আলমের পুত্র। সে ফতেয়াবাদ এলাকার চৌধুরীহাটের পশ্চিমে কুতুব চৌধুরী বাড়ির জামসেদের ভাড়া বাসায় ভাড়ায় থাকত বলে জানা গেছে। নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার আরিফের বাড়ী ফটিকছড়ি বলে জানা গেলেও বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকান্ডের দায়ে আটক বেলালের স্ত্রী স্বামীর অত্যাচারের কারনে দীর্ঘদিন ধরে তার পিত্রালয়ে অবস্থান করছেন। বেলালের ভয়াবহ অত্যাচারের কারনে তার স্ত্রী স্বামীর বাসায় ফেরৎ আসতে রাজি ছিলনা। স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে আসামী বেলাল অনেক চেষ্টার পরও ব্যর্থ হয়। অবশেষে সে কিশোর আরিফকে হত্যা করে তার দায় শ্বশুরবাড়ির লোকদের অর্থাৎ স্ত্রী, শ্বশুর ও অন্যদের উপর চাপানোর পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনামতে সে কিশোর আরিফকে শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে ফুসলিয়ে শ্বশুরবাড়ির সন্নিকটে ধলই ইউনিয়নের সফিনগর এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটা বিলের মাঝে আরিফকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে ফেলে রাখে। গত ২১ সেপ্টেম্বর গরুর জন্য ঘাস কাটতে গেলে এক ব্যক্তি লাশটি দেখতে পেয়ে স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি মর্গে পাঠিয়ে দেয়। লাশ অর্ধগলিত এবং মুখমন্ডল বিকৃত ছিল। তবে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল তৈরী করার সময় পুলিশ ধারনা করেছিল এটি হত্যাকান্ড।

পুলিশ বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করে থানায়। ঘটনার তদন্তে কাজ করতে থাকে পুলিশের একটি টিম। অবশেষে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে হাটহাজারী পৌর এলাকার কাঁচাবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অাটক করা হয় হত্যাকারী বেলালকে। জিজ্ঞাসাবাদে জব্দ করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো দা।

অভিযানে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল, পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) রাজিব শর্মা, পরিদর্শক (মিডিয়া) তৌহিদুল আলম ও উপ পরিদর্শক আবেদ অংশ নেন।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, আটককৃত আসামী হত্যার দায় স্বীকার করেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতেই সে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। লাশের পরিচয় সনাক্তে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে তার বাড়ি ফটিকছড়ি ভুজপর এতটুকু জানতে পেরেছি।

গতকাল দুপুরে আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামীর পিতাও হত্যার দায়ে জেল হাজতে আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।