বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। প্রশাসনের শত বাঁধা, গ্রেফতারসহ নানান প্রতিবন্ধকতা স্বত্বেও ময়মনসিংহে লাখো মানুষের এই সমাবেশ এটাই প্রমান করে। তাই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। ইনশাল্লাহ জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, সমাবেশের আগে বিএনপি নেতা লিটন আকন্দসহ ময়মনসিংহে প্রত্যেকটি উপজেলা থেকে ১০/১২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের শত বাঁধা উপেক্ষা করে খালেদা জিয়া মুক্তির সমাবেশে লাখো মানুষ উপস্থিত হয়েছে। দেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। বেগম জিয়া শুধু নেত্রী নন, তিনি এদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন, জনগণের প্রতিনিধি। এ সময় সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখতে পারবেন না। বন্দুক পিস্তলের জোরে সব হবে না। ৭১ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে রক্ষি বাহিনী তৈরী করে নির্যাতন চালিয়েছিল। এখন নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে খুন, গুম করা হয়েছে। পায়ে গুলি করা হচ্ছে। তবুও কারো মাঝে ভয় নেই। এটাই বিএনপি। আমাদের সংগ্রাম কোন দলকে ক্ষমতায় বসানো হয়। আমাদের সংগ্রাম গণতন্ত্রের মুক্তির সংগ্রাম, সংবিধান রক্ষার সংগ্রাম। দেশের পতাকা সমোন্নত রাখা, মা-বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সংগ্রাম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর কৃঞ্চচূড়া চত্বরে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
এ সময় মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ভোট ডাকাতি করে নির্বাচনের আগের রাতেই ভোট লুট করে নিয়ে গেছেন। এটা ক্যাসিনো থেকে বড় অপরাধ। জবাব দিতে হবে। ব্যাংক লুট করেছেন, নির্বাচনের আগে ১০ টাকা করে চাল খাওয়াবেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৪০ টাকা দরে চাল খাওয়াচ্ছেন। বিনা পয়সায় সার দেওয়ার কথা বলে প্রত্যারনা করেছে। কৃষকরা এখন ধানের দাম পায় না। ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের জন্য টাকা পাচ্ছে না। সব টাকা পাচার হচ্ছে সুইচ ব্যাংকে। কারা দেশের টাকা লুট করছে। দেশের মানুষ জানে। শুধু কি যুবলীগ-ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ লুটপাট করছে। আর আপনাকি আঙ্গুল চুষেছেন।
এ সময় পুলিশের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশ ভাইদের বলছি, কেন আপনারা অপকর্মের দ্বায়িত্ব নিচ্ছেন। পারলে জনগণের প্রতিপক্ষ না হয়ে লুটপাটকারীদের প্রতিহত করার দ্বায়িত্ব নিন। এসময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, নেত্রীর মুক্তির জন্য আরো ঐক্যবদ্ধ হোন। খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই গণতন্ত্রের মুক্তি। দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন। ইনশাল্লাহ দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
এ সময় ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সাধারন সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ এবং জেলা উত্তর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন, আ: আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মিন্টু, খাইরুল কবীর খোকন, ফজলুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, আ: বারী ড্যানী, আব্দুল্লাহ ফারুক, কৃষিবিদ শামসুল আলশ তোফা, ডা: মাহাবুর রহমান লিটন, নূরজাহান ইয়াসমীন, আরিফা ইয়াসমীন, শাহ শহীদ সারোয়ার, যুবদলের সাধারন সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আ: কাদির ভূইয়া জুয়েল, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর মাহমুদ আলম প্রমূখ।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, সরকারের প্রতিহিংসার কারনে বেগম খালেদা জিয়া জেলে। গায়ের জোরে তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সরকার যখন দেখল দেশের ৮০ ভাগ মানুষ ধানের শীষে ভোট দিবে। তখন ২৯ তারিখ রাতেই প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোট ডাকাতি করে ফেলেছে সরকার। মসজিদের নগরী ঢাকাকে এ সরকার বানিয়েছে ক্যাসিনোর নগরী।
এ সময় মির্জা আব্বাস বলেন, নেত্রীর ভয়ের কিছু নেই। বাঁধা আসলে বাঁধা অতিক্রম করেই সমাবেশ হবে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী জেলে। এতে বিএনপির সমর্থন কমেনি, বরং বেড়েছে। মনে রাখবেন এ সরকারের কর্মকান্ডেই বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবেন। এই সমাবেশ তাই প্রমান করে।
সমাবেশে বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, আর মাতাব্বরী করবেন না। খালেদা জিয়ার মুক্তির সমাবেশ আর অনুমতি নিয়ে হবে না। নেতা-কর্মীদের বলেন, রাজপথে নামুন, আঘাত আসলে পাল্টা আঘাত হবে। এটা সাংবিধানিক অধিকার। মনে রাখবেন খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই গণতন্ত্রের মুক্তি। সমাবেশের আগে লিটন আকন্দসহ অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল লিটন আকন্দ জামিন পেয়েছিল। পরে আরো মামলা দিয়েছেন। মনে রাখবেন আপনারাও মামলা পাবেন। খালেদা জিয়া মুক্তি না পেলে, জেলখানা খালি না হলে আপনারা কোথায় থাকবেন, বলে সরকারের প্রতি প্রশ্ন রাখেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সমাবেশ মাত্র দুই ঘন্টা আগে ৯টি শর্তে লিখিত অনুমতি দেয় স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু দুপুর থেকে বিচ্ছিন্ন মিছিলে মিছিলে সমাবেশস্থলে নেতা-কর্মী ও সাধারন মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে। তবে সমাবেশস্থলে লোক সংকুলন না হওয়ায় সারা শহরেই ছড়িয়ে পড়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি।
তোমরা আছো নির্বাচন নিয়ে,কি বাল ফেলবন শুনি?????
Hos fokrul
আপনাদের কি আর কোনো কাজ থাকে না যে নির্বাচন চায়ছেন ? নির্বাচনে এসে কি করেন সেটা আমরা ভালো করেই দেখেছি। আর নির্বাচন কি মুখের কথা যে আপনারা চায়বেন আর নির্বাচন হয়ে যাবে ? আর নির্বাচনে জয়ী হওয়ার যোগ্যতা কি আপনাদের আছে ? দেশে কি কখনো কোনো ভালো কাজ করেছেন ? শুধূ ক্ষমতায় আসার জন্যে উঠে পরে লাগেন আপনারা ।
বিএনপি কখনো দেশের উন্নয়নের কথা ভাবেনি।তারা ক্ষমতায় থাকতে ভাবছে তাদের স্বার্থের কথা।এই জন্য দেশের জনগণ এখন বিএনপির কথা ভাবে না।বিএনপি ষড়যন্ত্র, খুন,মিথ্যাচার, চাঁদাবাজি, ঘুষ, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদই বিএনপির রাজনীতির মুল নীতি ।
কিছুদিন হলো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেই নির্বাচনে আপনারা অংশ গ্রহণ করেছিলেন।নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পর নানা ধরনের হুমকি দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন এই নির্বাচনে আপনারা জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসবেন এবং তার জন্য আপনারা অনেকগুলো দলকে একসাথে করে একটি ঐক্যবদ্ধ দল গঠন করেছিলেন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু নির্বাচনের দিন আপনাদেরকে কেন্দ্রের আশপাশে পাওয়া যায়নি এবং ফলস্বরূপ আপনাদের কে কেউ ভোট দিয়ে চোদানোর জন্য কেন্দ্রে আসেনি। নির্বাচনে পরাজিত হবার পর আপনারা বলা শুরু করলেন ভোররাতে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে এবং এই নির্বাচন অবৈধ। এখন আপনারা আবারও নির্বাচন চাইছে তাই আপনাদের কাছে প্রশ্ন রইল নির্বাচন কি বললেই হয়ে যায় নাকি তার জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা লাগে সরকারকে সেদিকেই আপনারা প্রদান করবেন?
আপনাদের কথা অনুযায়ী বুঝতে পারলাম সেটি হলো আপনারা প্রমাণ করতে চাইছেন গত নির্বাচন অবশ্যই অবৈধ নির্বাচন ছিল। ধরে নিলাম এই নির্বাচন অবৈধ ছিল যার কারণে আপনারা এখন আবার নতুন করে নির্বাচন চাইছেন। এখন প্রশ্ন হলো এই অবৈধ নির্বাচনে আপনারা কি লড়াই করতে পেরেছিলেন? যদি লড়াই করার মাধ্যমে এই অবৈধ নির্বাচনে আপনারা টিকে থাকার চেষ্টা করতেন তাহলে বলতাম ,না আপনারা নির্বাচন করার মতো মেন্টালিটি কিংবা ক্ষমতা রাখেন। তাই আপনাদের এই অবস্থা দেখে বলতে পারি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মতো যোগ্যতা এবং ক্ষমতা আপনাদের নেই ,তাই আর কোনো নির্বাচন না চাওয়াই আপনাদের জন্য মঙ্গলকর।
দেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। প্রশাসনের শত বাঁধা, গ্রেফতারসহ নানান প্রতিবন্ধকতা স্বত্বেও ময়মনসিংহে লাখো মানুষের এই সমাবেশ এটাই প্রমান করে।এখন প্রশ্ন হলো আপনারা সেখানে জনগণ বলতে কাদেরকে বুঝাচ্ছেন ? বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা তো অবশ্যই আপনারা যে প্রোগ্রাম আয়োজন করেছেন সেখানে অংশগ্রহণ করবে আর তারাও জনগণ। তার মানে এই নয় যে সাধারণ জনগণ আপনাদের সাথে আছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে এ ধরনের কথা চিন্তা করা যেমন স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয় ঠিক সেইভাবে সংসদ ভেঙে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দাবি করাটাও ভিত্তিহীন কথা ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ ডিসেম্বরে 30 তারিখ যে নির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচনে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনা করছে এবং আওয়ামীলীগের সঠিকভাবে সম্পূর্ণ সফলতা ও দক্ষতার সাথে দেশ পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে সেটা আমরা সকলেই বিশ্বাস করি। তাই আপনার কথার সাথে আমরা কোনোভাবেই একমত নই।
আপনাদের দিন দিন চাওয়া বেড়ে যাচ্ছে। প্রথমে আপনারা সভা-সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চাইতেন আর সেই অনুমতি দেওয়ার পর এখন আপনারা নতুন নির্বাচন দাবি করছেন। এগুলো দেখে বুঝতে পারছি আপনারা খালেদা জিয়ার মুক্তি হোক সেটা নিয়ে যতটা আগ্রহী না। তার থেকে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন ক্ষমতায় আসার জন্য। কিন্তু দেশের জনগণ কখনো কোন জঙ্গী দলকে দেশ পরিচালনা করার অধিকার দিবে না সে কথাটা আপনাদের বুঝতে হবে। আর আপনারা যে জঙ্গী সমর্থন একটি দল সেটা আমরা তো ভালোভাবেই জানি।