অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সীতাকুণ্ডে কিশোরী মেয়েকে হত্যার পর লাশ গুম

0

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:

a-4
কিশোরী মনি (১৩)কে হত্যার পর এই পাহাড়ি জঙ্গলে লাশ মাটি চাপা দেয়া হয়।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বৃদ্ধকে বিয়ে করতে রাজী না হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা এক স্কুল ছাত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে পাহাড়ে লাশ গুম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে সাংবাদিক ও এলাকাসীর অনুরোধে পুলিশ ৪ দিন পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও রহস্যজনক কারণে লাশ উদ্ধার করে নি।

সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ ইফতেখার হাসান বলেন- মেয়েটির মৃত্যু অস্বাভাবিক কিনা সেটি আমার জানা নেই, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় সামাজিকভাবে নিহতের কবর দেওয়া হয়েছে ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের বাসিন্দা জেবল হোসেনের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে মনি আক্তার (১৩) কে একই ইউনিয়নের লোহারপুল এলাকার বাসিন্দা মৃত জাকির হোসেন এর পুত্র প্রভাবশালী বৃদ্ধ হেলু উদ্দিন (৫০) এর সাথে বিয়ের কথাবার্তা ঠিক করে মেয়ের পরিবারের সদস্যরা।

কিন্তু স্কুলছাত্রী মনি এ বিয়েতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই তাকে মারধর করত। সর্বশেষ গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে আবারও মারধর করে চরম নির্যাতন চালায় মেয়েটির মা-বাবা ও ভাই মিলে। এক পর্যায়ে মেয়েটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মৃত্যু নিশ্চিত জেনে পরিবারের সদস্যরা ওইদিন রাতেই নিহত মনির দেহ কুমিরা টিবি হাসপাতাল সংলগ্ন (ডালচাল মিয়ার মাজার এলাকায়) পাহাড়ের উপরে গর্ত করে মাটি চাপা দিয়ে লাশ গুম করে রাখে।

এ ঘটনার পর এলাকার লোকজন সাংবাদিকদের বিষয়টি জানালে শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকরা। ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, পাহাড়ে জঙ্গল পরিবেষ্টিত এলাকায় মেয়েটিকে গর্ত করে মাটি চাপা দেয়া হয়। কেউ যাতে বুঝতে না পারে সেজন্য দেয়া হয় কলাপাতা।

স্থানীয় যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর আমরা এসে দেখি মেয়েটির হাত ও চুল বের হয়ে আছে। পরবর্তীতে লোকজন মাটি দিয়ে তা ঘুরে দেয়।

যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান ও ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াছসহ অনেকে জানান, ধনপতি বৃদ্ধ হেলু দীর্ঘদিন ধরে মনিদের বাড়ীতে আসা-যাওয়া করত। এতে মনির দিকে কু-নজর পড়ে তার। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে শিশু কন্যা মনিকে বৃদ্ধার সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায়। মনি কুমিরা বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীতে পড়ালেখা করত। পাষান্ড পিতা জেবল হোসেন প্রায় ৪ বছর পূর্বে তার প্রথম ঘরের কন্যা হালিমা আক্তারকেও মেরে ফেলে।

এদিকে মেয়েটির পিতা জেবল হোসেন জানান, ডায়রিয়া আক্রাত হয়ে তার মেয়ে মারা গেছে। পাহাড়ে মাটি চাপা, জানাজা না পরানো, কবর না দেওয়া, কাপনের কাপড় না পড়ানো সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন সুদুত্তর দিতে পারেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা বিবি খাদিজা বলেন, পরিবারের সদস্যরা তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখে।

অন্যদিকে স্থানীয় মেম্বার আলাউদ্দিন জানান, মেয়েটির মৃত্যু সম্পর্কে তিনি অবগত নন। এলাকাবাসীর কাছ থেকে শুনেই তিনি ঘটনাস্থলে এসেছেন।