অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

দেশপ্রেমিক নাগরিককে যারা হত্যা করে তারা দেশদ্রোহী-খসরু

4
.

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গুম, খুন হত্যার বিরুদ্ধে দেশের মানুষ অবস্থান নিয়েছে। প্রতিবাদের এই জোয়ারকে ভয়ভীতির মাধ্যমে থামিয়ে দেয়া সম্ভব না। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা করেছে, শুধুমাত্র সেইজন্য তাকে সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের হাতে জীবন দিতে হয়েছে। দেশপ্রেমিক নাগরিককে যারা হত্যা করে তারা দেশদ্রোহী।

তিনি আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকালে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, দেশবিরোধী চুক্তি ও আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

নগরীর নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।

সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ. এম নাজিম উদ্দিন।

বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুর হাশেম বক্কর, সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, সমাবেশে আসতে দেখলাম, পুলিশ যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, মনে হচ্ছে দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শান্তিপূর্ণ এই জনসভায় কেন এই যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব। এখানে এত পুলিশ কেন? দেশের সংবিধান কি বাতিল হয়ে গেল? যারা জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কথা, যারা দেশ বিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কথা, যারা দেশপ্রেমিক নাগরিকদের পক্ষে থাকার কথা তাদের এই অবস্থা কেন?

প্রশাসনের উদ্দেশ্যে আমির খসরু আরো বলেন, যারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে খুন করে, অবৈধ ব্যবসা করে, জনগণের অধিকার কেড়ে নেয় তাদের পাশে আপনাদের থাকার কথা নয়। আইনশৃংখলা বাহিনী আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করার কথা, শ্রদ্ধা করার কথা। আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে নাগরিকদের একটি সুসম্পর্ক থাকার সময় এসেছে, এটা বিবেচনা করতে হবে।

তিনি বলেন, বুয়েটের ভিসি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও পুলিশ সাথে নিয়ে আবরার ফাহাদের বাড়ীতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের অপদস্ত করতে সাহস পায় কিভাবে? যে স্ট্যাটাসের কারণে আবরার ফাহাদকে জীবন দিতে হয়েছে, সেই স্ট্যাটাস সারাদেশের মানুষকে বার বার দিতে হবে। এই স্ট্যাটাস ইতহাসের অংশ হয়ে থাকবে। শেয়ার বাজার, ব্যাংক লুট, বিশ্বজিত হত্যা, আবিদ হত্যার বিচার হয়নি, আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারও হবে কি না সন্দেহ। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশ বিরোধী চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছে এই সরকার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও অবৈধভাবে আটকে রেখেছে সরকার। কিন্তু ক্ষমতার মালিক দেশের জনগণ।

আমির খসরু বলেন, লুটেরেরা ধরা পড়ছে, সেই ভয়ে তাদের মধ্যে নার্ভাসনেস কাজ করছে। তাদের আচরণে সেটা প্রকাশ পাচ্ছে। ভারতের এনআরসি নিয়ে মন্ত্রীরা বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণে নেই বললেও যৌথ বিবৃতিতে এই বিষয়ে কোন কথা নেই। সীমান্তে হত্যা, রোহিঙ্গা সমস্যা, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি চুক্তি নিয়ে যৌথ বিবৃতিতে কিছুই নেই।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ভারতের সাথে দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এই অবৈধ সরকার। এই অসম চুক্তি দেশের মানুষ মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি আলোচনার টেবিলে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে, এটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা না, বাংলাদেশের মানুষের লজ্জা। তিনি বলেন, ক্যাসিনো দুর্নীতির মাধ্যমে যুবলীগ ছাত্রলীগ থেকে এখন দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। সম্রাটকে জিজ্ঞাসাবাদের যখন দেশের রাঘব বোয়ালদের নাম বেরিয়ে আসছিল ঠিক তখনি দেশপ্রেমিক বুয়েট মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করলো। দেশের মানুষ একদিন এ হত্যাকারীদের জনতার আদালতে বিচার করবে।

প্রধান বক্তা মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, সরকারের শত বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে আজকে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশ জনতার দখলে। চট্টগ্রামের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আবরার হত্যার প্রতিবাদে রাজপথ আজ উত্তাল। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রেখেছে সরকার। দেশনেত্রী শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। তাকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে। সরকার তার জামিন প্রক্রিয়ায় বাঁধাগ্রস্ত করে তার মুক্তিতে বাঁধা দিচ্ছে।

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষকে ক্ষমতাসীনরা হত্যা করছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ২৯ তারিখ রাতে করেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশবিরোধী চুক্তি করা হয়েছে। সেই চুক্তির প্রতিবাদ করায় আবরারকে প্রাণ দিতে হয়েছে। শহীদ জেহাদের রক্ত দানের মাধ্যমে যেমন স্বৈরাচারী এরশাদের পতন হয়েছিল, তেমনি ভাবে আবরারের রক্ত বৃথা যাবে না। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এ জন্য দেশ প্রেমিক জনতাকে ঐক্য গড়তে হবে।

এ. এম নাজিম উদ্দিন বলেন, আবরার হত্যার বিচারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কথা বিশ্বাস করা যায় না। কারণ সাগর-রুনি, বিশ্বজিত ও চট্টগ্রামের আবিদ হত্যার বিচার এ পর্যন্ত হয়নি। আওয়ামীলীগের এ বিচার করার ক্ষমতাও নেই।

আবু সুফিয়ান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মা হিসেবে আবরার হত্যার বিচার করবেন বলে যে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী হিসেবে তা জাতির সাথে প্রতারণা। আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীদের বিচার হয় না। খুনীদেরকে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দেন।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতা এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সামশুল আলম, হাজী মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদীন জিয়া, নাজিমুর রহমান, আশরাফ চৌধুরী, মাহবুবুল আলম, এডভোকেট মফিজুল হক ভুঁইয়, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, অধ্যাপক নুরুল আমিন রাজু, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আবদুল মান্নান, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গির আলম দুলাল, কাউন্সিলর আবুল হাসেম, মনজুর আলম মঞ্জু, আনোয়ার হোসেন লিপু, শাহেদ বক্স, সামশুল হক,মো. সালাহ উদ্দিন, সামশুল আলম, ইসহাক চৌধুরী আলিম, আবু জহুর, প্রচার সম্পাদক শিহাব উদ্দিন মুবিন, সম্পাদকবৃন্দ মোহাম্মদ আলী মিঠু, এড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, এম আই চৌধুরী মামুন, ফাতেমা বাদশা, এইচ এম রাশেদ খান, হামিদ হোসেন, নুরুল আকবর কাজল, মোহাম্মদ আলী, অধ্যাপক ঝন্টু কুমার বড়ুয়া, শহিদুল ইসলাম শহীদ, জিয়া উদ্দিন খালেদ চৌধুরী, আবদুল বাতেন, আবদুল মান্নান রানা, মনজুর রহমন চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, হাজী হানিফ সওদাগর, ডা. নুরুল আবছার, মো. সেকান্দর, সরফরাজা কাদের রাসেল, আবদুল্লাহ আল হারুন, সালাহ উদ্দিন কায়সার লাবু, রফিকুল ইসলাম মো. ইদ্রিস আলী, অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম, খোরশেদ আলম কুতুবী, এড. নেজাম উদ্দিন খান, এড. সেলিম উদ্দিন শাহীন, অধ্যাপক রনজিত বড়ুয়া, জেলী চৌধুরী, বেলায়েত হোসেন বুলু, আজাদ বাঙালী, আবু মুসা, সফিক আহমেদ, আবুল খায়ের মেম্বার, আবদুল হাই, আলী আজম, সালাহ উদ্দিন লাতু, জাকির হোসেন, আফতাবুর রহমান শাহীন, হাজী বাদশা মিয়া, মনির আহমেদ চৌধুরী, মো. শাহাব উদ্দিন, জাহিদুল হাসান, হাবিবুর রহমান, নূর হোসাইন, মাঈন উদ্দিন চৌধুরী মাঈনু, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, জাহাঙ্গির আলম, আবদুল কাদের জসিম, ইউসুফ সিকদার, জাকির হোসেন, আলী ইউসুফ, জমির আহমদ, কাউন্সিলর জেসমিনা খানম, আতিকুর রহমান, রেজিয়া বেগম মুন্নি, মেজবাহ উদ্দিন রাজু, কামাল পাশা নিজামী, সখিনা বেগম, খোরশেদ আলম, তাহের আহমদ, হাজী নুরুল হক, মনিরুজ্জামান টিটু, শাহনেওয়াজ চৌধুরী মিনু, গাজী আলা উদ্দিন, এড. আবদুল আজিজ, মনিরুজ্জামান মুরাদ, মনিরুল ইসলাম মনু।

৪ মন্তব্য
  1. Ripon Khan বলেছেন

    যারা দেশপ্রেমিক নাগরিককে হত্যা করে তারা দেশদ্রোহী সেটি না হয় মেনে নিলাম, কিন্তু যারা আবরার হত্যাকান্ডের সাথে ছাত্রলীগের গুটিকয়েক নেতাকর্মী জড়িত বলে এই কথা বলছে তাদের কাছে প্রশ্ন রইল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের নেতারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধ করা ব্যক্তিদের কে হত্যা করার সাথে সরাসরি ভাবে জড়িত ছিল সেই দেশদ্রোহীদের সাথে আপনারা কিভাবে কাজ করছেন? কাউকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধরলাম তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিন্তু যাদের দলটাই মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষ হিসেবে কাজ করেছে তাদের সাথে কিভাবে আপনারা এখন রাজনীতি করছেন?

  2. Fahim sultan বলেছেন

    আবরার হত্যার বিষয়ে কেউ আসামিদের পক্ষে নেই। দেশের জনগণ, প্রশাসন এবং সরকার প্রত্যেকেই চাই জড়িতরা শাস্তি পাক। কিন্তু আপনারা যে এটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি শুরু করে দিয়েছেন সেটা কখনোই দেশের জনগণ মেনে নিবে না। আপনারা মূলত আবরার হত্যার ঘটনা দিয়ে সরকারকে বিব্রত করে জনগণকে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দেশের জনগণ জানে কোন সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশ এবং দেশের জনগণের উন্নয়ন হবে। তাই একথা বলে কোন লাভ নেই।

  3. Afsar uddin বলেছেন

    ছাত্রলীগের কিছু অতি উৎসাহী ছেলেদের জন্য ছাত্রলীগ আজ সকলের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই ছেলেদেরকে সরকার অথবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সমর্থন দেওয়া হয় নাই। উক্ত কাজের জন্য একজন আসামি ধরনের কাজ করলে যে শাস্তি পেত ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীদেরকে সেই শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু আপনারা তারপরেও ছাত্রলীগের নাম জড়িয়ে নানান মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছেন, এ ধরনের মিথ্যাচার কখনোই মেনে নেওয়ার মতো নয়। সেটা আপনাদের বুঝতে হবে।

  4. Md Abu বলেছেন

    আবরার হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসসহ বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। অপরাধের কোন পরিচয় নেই তাই বর্তমান সরকার যে ধরনের উদ্যোগগুলো নিয়েছে তা আপনারা ক্ষমতায় থাকলে কখনো নিতেন না যদি খুনিরা আপনাদের দলের কর্মী হতো। তাই আপনাদেরকে অনুরোধ করব আমরা হত্যা নিয়ে অপরাজনীতি না করার জন্য আর আপনাদের মা নিজেই এই নোংরামী না করতে অনুরোধ করেছেন।