বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ভারতের সঙ্গে অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে বন্যপ্রাণীর মতো পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ।
এই বিবেকশূন্য ক্যাডারদের মগজ ধোলাই করল কারা? রোববার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
বিএনপির এ নেতা বলেন, কী অপরাধ ছিল ‘শহীদ’ আবরার ফাহাদের? আবরার ফাহাদ তো বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছিল। লিখেছিল বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে।
তা হলে ছাত্রলীগের যেসব অস্ত্রধারী আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছে, তারা কোন দেশের স্বার্থরক্ষা করেছে, কোন অপশক্তির স্বার্থরক্ষা করেছে?
সরকার দলের এ ক্যাডারদের মগজ ধোলাই করল কারা? সুতরাং আবরার ফাহাদের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন, এটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ার আন্দোলনই নয়।
বরং আবরার ফাহাদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভারতের সঙ্গে করা অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যে যৌক্তিক সাহসী প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, তার সেই দাবির বাস্তবায়নই হচ্ছে চলমান আন্দোলনের মূলমন্ত্র।
তাই শুধু বুয়েটের শিক্ষার্থীদের ১০ দফা মানলেই পার পাওয়া যাবে না। দেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ অসম এবং অধীনতামূলক ও সার্বভৌমত্ব বিপন্নকারী চুক্তির বাতিল চায়।
দেশের জনগণ গত একদশকে ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তির বিস্তারিত জানতে চায়। এ দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
হুমকি-ধমকি দিয়ে আন্দোলন দমন করা যাবে না। এই আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের গোলামির জিঞ্জির ছিঁড়তে স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন।
আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে বলেছেন- ‘ছাত্রদের ১০ দফা মেনে নেয়া হয়েছে আবার কীসের আন্দোলন?
প্রথম কথা হচ্ছে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ দফা শেখ হাসিনা কিংবা তাদের নিয়োগকৃত উপাচার্য এমনিতেই মেনে নেয়নি, তাদের ১০ দফা দাবি মেনে নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
আবরার ফাহাদের মতো আর কোনো অসীম সম্ভাবনাময় জীবন যাতে ঝরে না যায়, সে জন্য বুয়েটের শিক্ষার্থীদের এই ১০ দফা। সুতরাং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এই ১০ দফা মানার ঘোষণা দিলেই সরকারের সব অপরাধ মাফ হয়ে যায় না।
আবরার ফাহাদ এর হত্যার ঘটনাকে বিভিন্ন মহল রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে, তার মধ্যে বিশেষ ভূমিকা রাখছে জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি। যেখানে আবরারের বাবা নিজে বলেছেন তার সন্তানের হত্যা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে সেটা থেকে আমরা পরিষ্কার করে বুঝতে পারি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য জামায়াত-শিবির এবং বিএনপির এই হত্যা ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তাছাড়া ছাত্রলীগের যারা ঘটিয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে। যদি তাদের শাস্তি দেওয়া না হতো তাহলে অন্য বিষয় হতো। কিন্তু এমন করা হয় নাই, তারপরও এ ধরনের ভিত্তিহীন কথার কোন মানে থাকে না।
ছাত্রলীগ আবরার হত্যা ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে আপনারা এত কথা বলছেন। কিন্তু বুয়েটের মধ্যে যে খালেদার সরকার থাকা অবস্থায় সানি হত্যা হয়েছিল সেই বিষয় নিয়ে আপনারা কোন কথা বলতে পারেন নাই। এমন আরও অনেক হত্যা ঘটনা ঘটেছিল বিএনপির সময় যার বিচার তো দূরের কথা একজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয় নাই। সে জায়গায় ছাত্রলীগের প্রত্যেকে আটক করে শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার দেশের মধ্যে ন্যায় বিচার স্থাপন করতে সফল হয়েছেন।
রিজভী সাহেব একবার চিন্তা করে দেখুন আসলে ভারতের সঙ্গে অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হতো তাহলে তো আপনারা বাংলাদেশ-ভারত নিয়ে যেসব কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।সেই জন্য আপনাদের ও হত্যা করা হতো।আবরার কে স্ট্যাটাসের জন্য হত্যা করা হয়েছে বলে আমি মনে করি না।তাদের মধ্যে ব্যাক্তিগত দন্ধের জেরে আবরারকে হত্যা করা হতে পারে।তবে আবরার হত্যাকান্ডের বিচারের দাবির নামে বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছেন
ছাত্রলীগ অস্ত্র ধরে আর ছাত্রদল-ছাত্র শিবির কি ফুল ধরেন নাকি? আবরার হত্যাকারীদের বিচার হোক এটা আমিও চাই।তবে হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে নানান ধরনের মিথ্যাচার মেনে নেওয়া যায় না।ইতোমধ্যে আবরার হত্যাকান্ডের জড়িতদের গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।যখন ছাত্রদল-ছাত্র শিবিরের হাতে বুয়েট শিক্ষার্থী সনি ও দ্বীপ মারা যায়, তখন কি বিএনপি সাংগঠনিক এবং আইনী কোন পদক্ষেপ কি তারা নিয়েছিল?
এখন যখন আবরার হত্যায় ছাত্রলীগ নেতারা আসামি এখন আপনাদের গলাবাজি বের হয়ে গিয়েছে । এমনটা তো না যে বর্তমান সরকার ছাত্রলীগকে দিয়ে এই কাজ করিয়েছে বর্তমান এমনটা করলে কখনো তো আর আবরার হত্যার আসামিদের শাস্তি দিত না। বিএনপি আর জামায়াত শিবির এর মত আসামিদের ছেড়ে দিতে ।
বিএনপির নেতাদের এইসব গলাবাজি তখন কোথায় ছিল যখন বিএনপি ক্ষমতায় থাকা কালিন এমন আরবার এর মত অনেক ছাত্রকে তারা মেরে ছিলেন যার কোনো বিচার তারা তখন করেন নি । আর এখন যখণ বর্তমান সরকার যখন আরবার হত্যা কারীদের শাস্তি দিচ্ছে তাহলে কেন এইসব কথা আপনারা বলছেন ।
অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা কখনো দলের পরিচয় বহন করেনা। অপরাধী সব সময় অপরাধী তাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ দলের সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ নেতাদেরকে বহিষ্কারসহ তাদেরকে বিচারের আওতায় এনেছেন। কিন্তু আপনাদের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রদলের নেতারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে মানুষ খুন করত তাদের কতটুকু বিচার আপনারা করেছেন? বরং তাদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে আপনারা দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন ও বর্বরতা চালিয়েছে।