অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সীতাকুণ্ডে সংরক্ষণ করতে না পেরে অনেক ইলিশ ফেলে দিচ্ছে জেলেরা

10
6863be698c69e8de6a76e53c24171d9b-27
কুমিরা ঘাটগড় এলাকায় জেলেদের ফেলে দেয়া ইলিশ মাছ এলাকায় ব্যাপক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। লবণ ও বরফের দাম বেড়ে যাওয়ায় সব মাছ সংরক্ষণ করতে না পারায় ইলিশ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলেরা। অনেকেই তরতাজা মাছগুলো রেখে বাসি-পচা মাছ ফেলে দিচ্ছেন।

জেলেরা জানিয়েছেন, ১৯৯১ সালের পর এবারই সর্বোচ্চ পরিমাণে ধরা পড়ছে ইলিশ। এতে প্রথমে তাঁরা বেজায় খুশি হলেও এখন সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও বিক্রি করতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।

উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের কুমিরাঘাট, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকুল, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ফকিরহাট সাগরপাড়ে সরেজমিনে দেখা যায়, যেখানে-সেখানে পচে যাওয়া ইলিশ পড়ে আছে। এতে পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। খালের পানিতেও প্রচুর পচা ইলিশ ভাসতে দেখা গেছে। জেলেরা তরতাজা ইলিশগুলো রেখে বাকি মাছ ফেলে দিচ্ছেন।

কয়েকটি আড়তে গিয়ে দেখা যায়, মাছ কাটার শ্রমিকদের দম ফেলার সময় নেই। কেউ মাছ কাটছেন, কেউ মুগুর ও মেশিন দিয়ে বরফ ভাঙছেন। কেউবা আবার লবণ ও বরফ দিয়ে টুকরিতে ভরে রাখছেন।

জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্দ্বীপ চ্যানেলে যাওয়া এক একটি ছোট নৌকায় মাঝিসহ চারজন জেলে থাকে। প্রত্যেক জেলে শ্রমিকের বেতন দিনে ৫০০ টাকা। জ্বালানির খরচ পড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। যে নৌকা বঙ্গোপসাগরে যায়, তাদের খরচ আরও অনেক বেশি হয়। এ বছর ‘জো’তে (ভরা কটালে) প্রতি নৌকায় চার থেকে ১৪ মণ পর্যন্ত ইলিশ পাওয়া গেছে। গত পাঁচ দিনে প্রতি মণ ছোট ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। বড় (৭০০ গ্রামের বেশি) ইলিশ বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ১২ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

photo-1474881107
সীতাকুণ্ডে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ।

কুমিরার জেলে নিতাই দাশ বলেন, গত তিন দিন এত বেশি মাছ পড়েছে যে অনেকে জালের কিছু অংশ কেটে সাগরে ফেলে দিয়ে এসেছেন। অনেকে জাল থেকে মাছ খুলতে না পারায় জাল-মাছ একসঙ্গে তীরে নিয়ে এসেছেন। এ সময় পচে যাওয়ায় অনেক মাছ ফেলে দিতে হয়েছে। বাঁশবাড়িয়া এলাকার জেলে হীরালাল দাশ বলেন, নৌকা কূলে আসার পর বরফ দিতে না পারায় রোদে অনেক মাছ পচে যাচ্ছে। গতকাল রোববার এক নৌকায় খরচ বাদ দিয়ে তাঁর লাভ হয়েছে ছয় হাজার টাকা।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছরের জন্য ইলিশের এটাই শেষ জো। এরপর ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। গত মাসে সীতাকুণ্ডে ৬১০ মেট্রিকটন ইলিশ ধরা পড়েছিল। ছলিমপুর, ভাটিয়ারি, সোনাইছড়ি ও কুমিরা ইউনিয়ন অংশে বেশি ইলিশ ধরা পড়েছে।

14572208_853605648108582_1887035295720151068_n
সাগর থেকে ধরে আনার পর সংরক্ষণ করতে না পেরে এভাবে পচা ঝটকা ইলিশ সাগর পাড়ে ফেলে দিচ্ছে জেলেরা।

কুমিরা এলাকার পাইকার নুরুল আমিন সওদাগর বলেন, তাঁরা নৌকা ভর্তি ইলিশ কিনে নেন। প্রতি নৌকায় ৪ থেকে ১৪ মণ পর্যন্ত ইলিশ থাকে। তাঁরা মাছগুলো কিনে বরফ ও লবণ দিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠান। এ বছর মাছ সহজলভ্য হলেও বরফ ও লবণের দাম বেশি হওয়ায় এবং শ্রমিক–সংকটের কারণে ইলিশ সংরক্ষণ করতে পারছেন না।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, সংরক্ষণের উপাদান–সংকটের কারণে জেলেরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। তা সত্ত্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর তাঁরা খুশি। অনেক জেলেই তাঁদের ঋণ এবার পরিশোধ করতে পেরেছেন। সুত্র: প্রথম আলো।

১০ মন্তব্য
  1. Mustafa Nayeem বলেছেন

    আঁরার লাই থোড়া কিনি রাখনা।

    1. Anowarul Kabir Nantu বলেছেন

      যশোর আসো, এক ঝুড়ি বরিশালের ইলিশ দেব।

  2. Kazi Zahed Imam বলেছেন

    এরপরও দাম কমছে না। বিশেষ করে বড় ইলিশগুলো ৫০০/৬০০ টাকা।

    1. Mustafa Nayeem বলেছেন

      না শোকর মানুষ। এক কেজ সাইজের ইলিশ ৫ শ/ ৬ শ। আরো কমে চায় উনি। কয় কি। গত বছর এমাছ ১১ শ থেকে ১৪ শ টাকায় এবং বৈশাখ উপলক্ষে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

  3. Alamgir Apu বলেছেন

    আঁরা কিনিবারল্লাই আছিত।

  4. এস আই সৈকত বলেছেন

    আমরা পাইনা চট্টগ্রাম শহরে বাসা না থাকলে ইলিশ নামটাও ভুলে যেতাম,

  5. Oli Ahmed বলেছেন

    ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। আর এমন ভাবে ধ্বংস হতে থাকলে একসময় আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যেতে পারে সুন্দর রূপসী জাতীয় ইলিশ। আমাদের সকলের উচিৎ জাতীয় সম্পদকে ধ্বংস না করে রক্ষা করা।

  6. Anowarul Kabir Nantu বলেছেন

    তোমাদের ইলিশ খাওয়া যায় নাকি?

  7. Saiful Islam Shilpi বলেছেন

    আপনি খাইতে পাবেন কই..?