ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘বিগত সংসদ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি- এ কথা আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি। ভবিষ্যতেও জনগণ ভোটাধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এ কথা আমি বলেই যাব। এ কথা আমি সংসদে ও সংসদের বাইরে এবং সভা-সমাবেশ ও সেমিনারে বলছি। মন্ত্রিত্ব না পাওয়ার কারণে আমি জনগণের ভোটাধিকার হরণের কথা বলছি- বিষয়টি ঠিক নয়।’
আজ রোববার একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। মেননের ওই মন্তব্য ফেসবুকে ‘লাইভ’ করে ওই চ্যানেল।
ক্ষমতাসীন চৌদ্দ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি। রাশেদ খান মেনন বিগত মহাজোট সরকারের সময় পাঁচবছর মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এবারও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ঢাকা-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ছিটকে পড়েন মন্ত্রিসভা থেকে।
গতকাল ওয়ার্কার্স পার্টির এক অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমি সাক্ষী, এই নির্বাচনে (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) আমিও নির্বাচিত হয়েছি। আমি সাক্ষ্য দিয়ে বলছি, জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) পারে নাই, উপজেলায় পারে নাই।’
রাশেদ খান মেননের এ বক্তব্যের পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় সরকার ও আওয়ামী লীগের ভেতরে। সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার দুটি প্রশ্ন মেনন সাহেবের কাছে। এক. আপনি মন্ত্রী হলে এ কথা বলতেন কি না? দুই. এমপি হয়েও এত দিন পরে এ অভিযোগ কেন তুললেন?’
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘সরকার বা দলের পক্ষ থেকে এ বিষয় নিয়ে তাঁর (রাশেদ খান মেনন) সঙ্গে আলাপ হয়নি। তিনি যদি বলেই থাকেন, তাহলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে এত দিন পরে এই সময়ে কেন তিনি হঠাৎ করেই এ অভিযোগ তুললেন? নির্বাচন অনেক আগে হয়ে গেছে। মন্ত্রী হলে কি তিনি এ কথা বলতেন?’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ক্যাসিনো ঘটনায় তাঁর নাম আছে কি না বা তিনি নিজেকে এসব ঘটনা থেকে মুক্ত রাখতে এ অভিযোগ করেছেন কি না—এ প্রশ্ন আপনারা (সাংবাদিকরা) তাঁকে করুন।’
এসব প্রশ্নের জবাব দেন রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ‘ভোটাধিকারের জন্য আমরা সেই এরশাদ সরকারের আমল থেকে লড়াই শুরু করি। বিএনপি- জামায়াত সরকারের সময় আমাদের এ লড়াই আরো তুঙ্গে উঠে। এখন আমাদের সময়ে এসে যদি জনগণ ভোট দিতে না পারে, সেটা হবে সত্যিকার অর্থেই দুঃখজনক ঘটনা।’
ভোটাধিকারের কথা আপনি এখন হঠাৎ করে বলছেন কেনো? এমন প্রশ্নের জবাবে মেনন বলেন, ‘আমি হঠাৎ করে বলিনি। আমি সংসদেও এ অভিযোগ করেছি। সংসদের বাইরে সভা সমাবেশ ও সেমিনারেও একই অভিযোগ করে আসছি। জনগণ ভোটাধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এ কথা আমি বলেই যাব।’
আপনি এখন এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আপনি এর দায় এড়াতে পারেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘না আমি এর দায় এড়াতে পারি না। আমি এর দায় নিয়েই ভোটাধিকারের কথা বলছি। ভেতরে থেকেই আমি এ কথা বলছি।’
এর আগে আপনি গত দশ বছরে ৯ লাখ কোটি টাকা পাচারের কথা বলেছেন। এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মেনন বলেন, ‘গত দশ বছরে ৯ লাখ কোটি টাকা পাচারের কথা আমি সংসদেও বলেছি। অর্থমন্ত্রীও টাকা পাচারের কথা বলেছেন। টাকা পাচার না হলে দেশ আরো সমৃদ্ধ হতো এ কথা তিনি বলেছেন।’
চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানকে আপনি কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শুধু ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযানই দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি ব্যাংকখাত থেকে যে টাকা লুট হয়েছে তার বিরুদ্ধেও অভিযান চালাতে হবে। বড় বড় প্রকল্পগুলোতে অতি মূল্যায়নের মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে। এর বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো উচিত।’
এইসব কথা তখন কেন বলেন নি যখন আপনি ক্ষমতায় ছিলেন ? এখন যখন আপনি মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন এখন কেন এইসব কথা বলছেন । আসলে মেনন সাহেব এখন যে কথা গুলো বলে বেড়াচ্ছেন তার মুল কারণ হলো তিনি যে তার দুর্নীতির কারণে মুন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন সেটাকে তিনি এখন ধামা চাপা দিতে তিনি নির্বাচ্ন নিয়ে নানা ধরনের বাজে কথা বলে যাচ্ছেন ।
এখন মেনন সাহেব এর এইসব কথার মুল কারণ হলো এখন যে তাকে ক্ষমতা থেকে দূর করা হয়েছে তার দুর্নীতির কারনে সেটা মেনে নিতে না পেরে এখন তিনি এই ধরনের কথা বলে বেড়াচ্ছেন । আসল মেনন যে একটা দুর্নীতি বাজ নেতা সেটা আওয়ামীলীগ বুঝতে পেরেছেন যার কারণে তাকে দল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে ।
এক মুখে কত কথা বলেন আপনি সেটাই বুঝি না।এখানে বড় বড় কথা বলে কাল আবার বলছেন আপনার ভাষণটা বাড়িয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।আমরা অনেক ভালো ভাবে জানি ক্যাসিনো বিষয়ে আপনার নাম উঠে আসাই আপনি এই কথাগুলো বলে নিজকে দেশপ্রেমীক বুঝানোর চেষ্টা করছেন।কিন্তু এই নাটক আমাদের কাছে করে কোন লাভ নাই।আপনি কতটা দেশপ্রমীক সেটা আমাদের জানা আছে।
ইসমাইল হোসেন সম্রাট পুলিশের কাছে যে ব্যক্তিগুলোর নাম বলেছে তার মধ্যে মেনন সাহেবের নামটিও রয়েছে আর মেনন সাহেব জানেন অল্প কিছুদিনের মধ্যে দুর্নীতির দায়ে তাকেও আটক করতে পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর সেইজন্য মেনন সাহেব এ ধরনের কথাগুলো বলে নিজেকে সাধু প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তিনি যদি এ কথাগুলো বলে মনে করেন বেঁচে যাবেন সেটা তার ভুল ধারণা। প্রতিদিন 15 লক্ষ টাকা করে ক্যাসিনো থেকে যেটা পেয়েছেন আর তার ফলে যে বিলাসী জীবন-যাপন করেছেন তার শাস্তি অবশ্যই আপনার পেতে হবে সেটা আপনি মনে রাখবেন।
রাশেদ খান মেনন হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ একজন ব্যক্তি, সময় যাকে সৎ ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করতাম আজ যখন তার দুর্নীতির তালিকা প্রকাশ হতে যাচ্ছে তখনই সে নিজের স্বার্থে নির্বাচনের ভোট দেয়া নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বাঁচার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কারণ তার সকল দুর্নীতি তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পৌঁছে গিয়েছে এবং সে গ্রেপ্তার হবে বলেই এই নোংরা পদ্ধতি অবলম্বন করে মুক্তি পেতে চাইছে।