অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পরীমণিকে না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে চলে গেলেন সাধু!

0
.

গতকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে অপূর্ণ রুবেল নামে এক সাংবাদিকের পোস্ট। ১৪ ঘন্টা আগে দেয়া সেই পোস্টে তিনি শোক জানিয়েছেন প্রয়াত অভিনেতা পরিচালক হুমায়ূন সাধুকে নিয়ে। সাথে লিখেছেন চিত্রনায়িকা পরীমণির সাথে হুমায়ূন সাধুর দেখা না হওয়ার আক্ষেপের কথা। ১৪ ঘন্টায় পোস্টটিতে ১ হাজার ৭শ জন রিয়াক্ট করেছেন শেয়ার হয়েছে প্রায় দেড়শবারের বেশি। তার বর্ণনার সাথে অধিকাংশই সহমত প্রকাশ করে, নায়িকা পরীর নিন্দা করেছেন। রাজনীতি খ্যাত পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস পোস্টটি শেয়ার দিলে এটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পাঠক ডট নিউজের পাঠকদের জন্য পোস্টটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

অপূর্ণ রুবেল লিখেছেন,
‘এ বছর ফারুকী ভাইয়ের জন্মদিনে কয়েকজন মিলে তার নিকেতন অফিসে গিয়েছি। গিয়ে দেখি হুলস্থল কারবার। অনেকেই এসেছেন। ছিলেন ছবিয়ালের বেশিরভাগ সদস্য। নানা কথায় আড্ডা চলছে। টুং করে কলিং বেল বাজলো।

ঢুকলেন নায়িকা পরীমনি। হাতে বিরাট উপহারের বাক্স।

নায়িকা ঢুকলে যা হয়! পুরো পরিবেশ বদলে গেল। নায়িকা তার দিকে টেনে নিলেন সবাইকে। জন্মদিনের কদিন আগে ভাইয়ের বানানো বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন। পুরা গরম গরম স্মৃতি নায়িকার এবং জন্মদিনে আসা অতিথিদের।

ফারুকী ভাই সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিলেন পরীমনির সঙ্গে।

ভাগ্যচক্রে এবং পেশার কারনে এই নায়িকার সঙ্গে আমার আগে থেকেই পরিচয় ছিলো। ভাই আমার দিকে তাকাতেই নায়িকা আগ বাড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিলেন। হাত মেলালাম।

কে জানতো সবার সঙ্গে হ্যালো আর আমার সঙ্গে হাত মেলানোটাই আমার কাল হবে। এমনকি হুমায়ুন সাধুর চোখে সেটা হবে ‘বিরাট’ ব্যাপার।

এই ঘটনার কদিন পর সাধুজির ফোন। দেখা করে একটা ব্যপারে আলাপ করবেন। চলে এলেন আমার অফিসে। সাধুজীর সঙ্গে সময় কাটানো আমার কাছে লোভনীয় ব্যাপার।
লোভীর মতো আমরা গল্প শুরু করলাম। সবশেষে এলেন আসল আলাপে।
ভাই, একটা সিনেমা বানাবো। প্রোডিউসার রেডি। কিন্ত ছবির গল্পে আমার নায়িকা পরীমনিকে লাগবো। আপনে শুধু আমার লগে তার একবার বসার ব্যবস্থা করে দেন।

আমি আকাশ থেকে পরি। আমি তো পেশাগত কাজের বাইরে কাউকে ফোন করিনি কখনো! কেমনে কি!

ওপাশের মানুষটা যখন সাধুজী, তখন এইটুকু করতে পারি। তাকে বসিয়ে পরীমনি কে ফোন করি। ধরেন না।

ফেসবুকে নক করি। রাতে রিপ্লাই আসে। বিস্তারিত ইনবক্সেই বলি। বসবেন জানান।

তারপর বহুদিন খবর নাই। সাধুজী বার বার আসেন অফিসে। তাগাদা দেন। আমি নায়িকাকে তাগাদা দিই। নায়িকা মূল্যবান ত্রিশ মিনিট সময় বের করতে পারেন না সাধুজীর সঙ্গে বসার।

নায়িকাকে না পেয়ে একদিন আমাকেই সিনেমার গল্প শোনান সাধু। কি মুগ্ধকর গল্প এমন ছোট্ট মাথায় বয়ে বেড়াচ্ছেন এসময়ের সত্যিকারের রাজা হুমায়ূন।

নায়িকাকে আবার ফোন দিই। মেসেজ দিই। নাহ, তিনি বসার মতো সময় দিতে পারেন না। মাঝে তার ব্রেকআপ হয়ে যায়। সাধুজী জেনে বলেন, কদিন সময় দেন ওনাকে, মানসিকভাবে নিশ্চয় এখন ভালো নাই।

আমি কদিনের জন্য নিস্তার পাই। তারপর আবার তাড়া দেন। সবাই তো তার সঙ্গে দেখা করে ছবি তুলছে। আপনি….!

আমি প্রমান দেওয়ার জন্য নায়িকার সঙ্গে আলাপের স্ক্রিনশট পাঠাই। সাধু ঠান্ডা হন। আমি কি অবিশ্বাস করছি আপনাকে, কিন্তু আমার প্রোডিউসারকে কি বলব?

নায়িকার আবার ব্রেকআপ হয়েছে এটা বলেন।
সাধুজী আগ্রহ নিয়ে জানতে চান এবার কার সাথে?
আমার সাথে! শুনে হেসে ওঠেন সাধুজী।

এভাবে আমাদের নায়িকা, ডিরেক্টর ও সাংবাদিকের চোর পুলিশ খেলা চলে। সবশেষ নায়িকা এ মাসের ৫ তারিখের পর বসার জন্য সময় দেন। সাধুজী জেনে খুশী হন, বলেন এবার না বসলে কিন্তু অসুস্থ হয়ে যাবো আমি।

৫ তারিখ পর নায়িকাকে নক করি। তিনি ইমো পাঠান। এ ইমোর মানে আমি বুঝিনা। শুধু বুঝি নায়িকা এ যাত্রায়ও সময় দেবেন না। কদিন পর দেখি তার ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভ। সাধুজীরওও অসুস্থ হওয়ার খবর পাই।

নায়িকাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক করি। সাড়া দেন। বলি ওই ডিরেক্টরের জন্য দোয়া করতে, তিনি সুস্থ হয়ে ফিরলে যেন একটু সময় দেন। যিনি তাকে নিয়ে গল্প ভেবে নিজের সঙ্গে অঙ্গীকার করেছেন প্রথম ছবিটা পরীমনি নিয়ে বানাবেন।

কিন্তু সাধুজী ফেরেন না।

গতকাল যখন নায়িকা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ব্যস্ত সম্ভবত ঠিক তখন স্কয়ার হাসপাতালে হুমায়ূন সাধুর একটা একটা করে হার্টবিট কমছিলো।

একটা সিনেমা প্রেমী, সিনেমা বানানোর স্বপ্ন দেখা সাধু জানলোও না, অসাধু মানুষে ভরপুর এই দেশে সিনেমা বানানোর স্বপ্ন দেখতে নেই।

এই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে আমি সাধুজী নয়, আদতে পরীমনির কাছে ক্ষমা চাই। গত কয়েক মাসে নানা মাধ্যমে তাকে বিরক্ত করেছি। সময় চেয়েছি। আশা করছি ওনার মহানুভবতা দিয়ে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।

সাধুজীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কিছু নাই। কিছু মানুষ এই পৃথিবীতে আসেই ভালোবাসা আর কাছে টানার জন্য।
সাধুজী আমার কাছে সেরকমই একজন।’

সুত্রঃ ব্রেকিং নিউজ।