অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

দুর্ঘটনায় কবলিত জাহাজের দুটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশকে চিঠি দিয়েছে বন্দর

0
.

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে দুই জাহাজের সংঘর্ষের কারণে একটি অয়েল ট্যাংকারের তলা ফুটো হয়ে নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল মারাত্মক পরিবেশ দুষণ করছে মর্মে অভিযোগ এনে পরিবেশ অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এতে অভিযুক্ত জাহাজ দুটি লাইটার জাহাজ ‘সিটি ৩৮’ ও অয়েল ট্যাংকার ‘দেশ-১’ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

একই সাথে আটক জাহাজ দুটির মালিক ও সারেং (মাস্টার) দের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম বন্দরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বরাবরে আবেদন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারবেটর ক্যাপ্টেন মো. ফরিদুল আলম পাঠক ডট নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

.

এদিকে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক জানিয়েছে, কর্ণফলী নদীতে জ্বালানী তেল ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশ ও জলজ প্রাণীর ক্ষতির বিষয়ে প্রমাণ পাওয়ার পর দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজ দুটির মালিক পক্ষকে আজ রবিবার পরিবেশ আদালতে হাজির হতে নোটিশ জারি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর দায়িত্বশীল সুত্রে জানাগেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) গভীর রাতে কর্ণফুলী নদীর ৩ নম্বর ডলফিন জেটি এলাকার মাঝ নদীতে লাইটার জাহাজ ‘সিটি ৩৮’ ও অয়েল ট্যাংকার ‘দেশ-১’ এর সংঘর্ষ ঘটে। এতে অয়েল ট্যাংকার ‘দেশ-১’ এর তলা ফেটে গিয়ে প্রায় ১২০০ টন ডিজেল কর্ণফুলী নদীতে পড়ে যায়। এতে কর্ণফুলি চ্যানেল ও জলজ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে বলে জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, দুর্ঘটনার পরপরই পরিবেশ ও নদী দুষণের কথা বিবেচনায় রেখে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা নদীতে নিঃসরিত জ্বালানি তেল ৮০ ভাগ তুলে নেয়ার কাজ শেষ করেছি। আর দুর্ঘটনাটির জন্য দায়ী ওই দুটি জাহাজের মালিকের কাছ থেকে এর জন্য ক্ষতিপূরণও আদায় করা হবে।

.

তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব জাহাজ বে ক্লিনার-১ ও ২, কান্ডারী ১০ ও ১১ এবং দুটি লেবার বোট নদীর থেকে পানি মিশ্রিত পড়ে যাওয়া তেল সংগ্রহ করেছে। গতকাল শনিবার (২৬ অক্টোবর) পর্যন্ত এ দলটি নদী থেকে পানিসহ প্রায় ৮ হাজার লিটার তেল তুলে নিতে সক্ষম হয়েছে।

বন্দরের ডেপুটি কনজারবেটর ক্যাপ্টেন মো. ফরিদুল আলম সাক্ষরিত চিঠিতে (নং ১৮.০৪.০০০০.৭১১.২৭.৫৫.১৯) পরিবেশ অধিদপ্তরকে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) অয়েল ট্যাংকার ‘দেশ-১’।বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল খুলনায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।  আনুমানিক ৩টার দিকে মাঝ নদীতে লাইটার জাহাজ ‘সিটি ৩৮’ ধাক্কা দিলে ফুটো হয়ে যায় অয়েল ট্যাংকার ‘দেশ-১’। এরপর নদীতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল। এতে প্রচুর পরিমাণে তেল কর্ণফুলি নদীতে ছড়িয়ে পড়ে কর্ণফুলি চ্যানেল ও জলজ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে।

চবকের বজ্য ও পরিস্কারক জাহাজ বে-ক্লিনার-১, বে ক্লিনার-২, স্কীমার-১, স্কীমার-২, ট্যাগ কান্ডারী-৮, কান্ডারী-১০, কান্ডরী-১১ তেল সংগ্রহে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিত্যাক্ত তেল সংগ্রহ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। সংঘর্ষের ফলে নিঃসৃত তৈল পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে বলে প্রতিয়মান হয়। এ অবস্থায় ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে জাহাজ দুটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা হল।

.

এদিকে বন্দর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দেয়া বন্দরের পাইলট (ইএমইউ) ক্যাপ্টেন সাঈদ মো. কামরুল আলম সাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়- তৈল দুষণ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যাক্তিগণ মো, নাসির উদ্দিন, (মাস্টার- দেশ-১) থানা গোসাই হাট, ফরিদপুর, জামশেদ হোসেন (মাস্টার-সিটি-৩৮) বেলজিয়া আয়ারা, নড়াইল লোহাগাড়া। জাহাজ মালিক ১/মেসার্স অগ্রগামী শিপিং লাইনস (দেশ-১) প্রযত্মে মো. নাসির উদ্দিন, সোনামিয়া মার্কেট, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ।

২/মেসার্স সিটি এডিবল অয়েল লিঃ, (সিটি-৩৮), প্রযত্নে ফজলুল হক, সিটি হাউজ, রোড নং-৫১, গুলশান-২, ঢাকা। দের বিরুদ্ধে ইনল্যান্ড শিপিং অডিন্যান্স ১৯৭৬ এর ৫৬ (ক)/৬১ (ক) ধরার আওতায় দন্ড প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হল।