রাজশাহীতে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে পুকুরে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ রবিবার সকাল ১০টা দিকে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির গেটে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান দেন।
এদিকে এঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক ২৫ জনের মধ্যে ৫ জনকে ভিডিও ফুটেজ ও অধ্যক্ষের তথ্যে চিহ্নিত করে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চন্দ্রিমা থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, গ্রেফতারকৃতরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত।
এর আগে শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার সময় কলেজ ক্যাম্পাসে তাকে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে সাঁতার জানার কারণে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন। পরে এই ঘটনায় রাতেই অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ৫০ জন অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেন।
ছাত্রলীগের গুটিকয়েক নেতাকর্মী অপরাধ করবে বলে যারা পুরো ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানায় তারা আসলে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে যে সংগঠনগুলো বাংলাদেশ প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত হতে চাইছে তাদের হয়ে কাজ করছে।পুরো বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে ছাত্রলীগ কে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে সেটা তো আমরা বুঝতে পারছি আর এই কাজ করছে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির দ্বারা পরিচালিত সংগঠন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা কর্মীরা।
ছাত্রলীগের গুটিকয়েক নেতাকর্মী অপরাধ করবে আর সেজন্য ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য যারা আন্দোলন করে তারা অপরাধীদের বিচার চাওয়ার পরিবর্তে কেন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন করছে? এর পেছনে অবশ্যই কোন না কোন উদ্দেশ্য রয়েছে সেটা তো এই ধরনের একটি ঘটনাকে পুঁজি করে আন্দোলন করার মাধ্যমেই বোঝা যায়। আবরার হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচারের দাবি জানানোর পাশাপাশি যখন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিও তোলা হয়েছিল তখন আমরা বুঝতে পেরেছিলাম একটি গোষ্ঠী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে জামায়াত শিবিরের রাজনীতিকে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থানে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
কিছু ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর জন্য সম্পূর্ণ সংগঠনকে দায়ী করা কখনও উচিত নয়। সেই কথাটা আপনাদের বোঝা দরকার, তাছাড়া এক হাতে কখনো তালি বাজে না। অধ্যক্ষ নানান ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে রাগের মাথায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ ধরনের কাজ করেছে। কিন্তু এক কাজকে আমরা কখনো সমর্থন করছি না। তারপরেও শুধুমাত্র ছাত্রলীগকে দোষী হিসেবে দেখলে হবে না। সেই সাথে কিসের জন্য ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধরনের কাজ করতে বাধ্য হয়েছে সেই বিষয়টা আগে সকলের সামনে তুলে ধরতে হবে।
ঘটনার সম্পূর্ণ না জেনে কাউকে দোষারোপ করা কখনও উচিত নয়। অধ্যক্ষের কাছে নানান দাবি তোলার পরেও তিনি সেই দাবিগুলো পূরণ করেন নাই। একসাথে নানা শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার মধ্যে অকৃতকার্য করেছেন ইচ্ছাপূর্বক ভাবে। তাই ছাত্রলীগ এ ধরনের একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে।আর জড়িতদের বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তাই বিষয়টি সম্পূর্ণ তদন্ত না করে ছাত্রলীগের ওপর এককভাবে দোষ চাপিয়ে দেওয়া মেনে নেওয়ার মতন নয়।
অধ্যক্ষকে যারা পুকুরে ফেলে দিয়েছে তাদের মধ্যে দুইজন ছাত্রলীগ নেতা ছিল সেটা পরিচয় পাওয়া গিয়েছে কিন্তু বাকি চারজন যে ছাত্রদলের সন্ত্রাসী তা উল্লেখ করেনি কেউ। অথচ ঘটনাটা হল সাধারণ ছাত্র ও অধ্যক্ষের মধ্যে, কিন্তু আপনারা এখানেও রাজনীতি নিয়ে আসলেন। আর যারা ছাত্রলীগই নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে, তাদের মধ্যে যারা ছিল তারা সকলেই জামায়াত পন্থী লোকজন সুতরাং তাদের কথায় কোনো কিছু যায় আসে না।