অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

৪২ টাকায় পেঁয়াজ কিনে বিক্রি ১১০ টাকাঃ খাতুনগঞ্জে ৪ আমদানীকারককে একলাখ৩০ হাজার টাকা জরিমানা

1
.

মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ ৪২ টাকা দরের কিনে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে ১০০-১১০ টাকা দামে। রবিবার ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেটের হাতে এমন প্রতারণা ও কাসাজি ধরা পড়েছে পেঁয়াজ আমদানীকারণ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। এজন্য ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রবিবার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত নগরীর পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের শতাধিক আড়তে এ অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।

যে সব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে সেগুলো হল- বেঙ্গল ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা, মেসার্স সৌমিক ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা, মেসার্স হাজী অছি উদ্দিন সওদাগরকে ৪০ হাজার টাকা ও মেসার্স খাতুনগঞ্জ ট্রেডিংকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এর আগের অভিযানে মেসার্স হাজী অছি উদ্দিন সওদাগরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল ভ্রাম্যমান আদালত।

চট্টগ্রামে পেঁয়াজের বাজারমূল্য মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের নির্দেশে দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে আজ চতুর্থ দফায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম অভিযানে খাতুনগঞ্জের শতাধিক আড়ত পরিদর্শন করা হয়। এসব আড়ত পরিদর্শন করে পেঁয়াজের দামে কারসাজির প্রমাণ পাওয়া যায়।

আমদানিকারক, কমিশন এজেন্ট ও আড়তদাররা বাজারে পর্যাপ্ত পেয়াজ মজুদ থাকা সত্ত্বেও দামে কারসাজি করছে। জেলা প্রশাসন এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পুলিশ ও র‍্যাব-৭ সহযোগিতায় পরিচালিত হয়। এসময় দেখা যায়, মিয়ানমার থেকে যেসব পেয়াজ ৪২ টাকা দরে আমদানি হয়েছে সেগুলো মাত্রাতিরিক্তভাবে ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আড়তদার, কমিশন এজেন্ট ও আমদানিকারকদের কারসাজিতে খুচরা বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে।

তিনি বলেন, খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা মিয়ানমারের পেয়াজ বেশি দামে বিক্রির জন্য প্রতারণার কৌশল নিয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালীন মূল্যতালিকায় মিয়ানমারের পেয়াজের দাম ৬০-৬৫ টাকা লিখে রাখলেও বেশ কয়েকটি দোকানের বিক্রয় রেজিস্টার পরীক্ষা করে দেখা যায়, মিয়ানমারের পেয়াজ ৯৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি করেছে। সিলেট গামী একটি পেয়াজ ভর্তি ট্রাকের চালান ঘেটে দেখা যায়, অছি উদ্দিন ট্রেডার্স তাদের নিজেদের আড়তে মূল্যতালিকায় মিয়ানমারের পেয়াজের দাম ৬০-৭০ টাকা লিখলেও সিলেটগামী ট্রাকের চালানে মূল্য লেখা ১১০ টাকা। প্রতারণামূলকভাবে মূল্য তালিকা থেকে অধিক দামে পেয়াজ বিক্রি করার অপরাধে অছিউদ্দিন ট্রেডার্সকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

খাতুনগঞ্জে এখন সবচাইতে বেশি পেয়াজের মজুদ আছে মেসার্স খাতুনগঞ্জ ট্রেডিংয়ে। এই আড়তটিও ব্যাপকভাবে মিয়ানমারের পেয়েজের দামে প্রাতারণা করছে। এই আড়তের সামনেও কুমিল্লা-ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া গামী ট্রাকে পেয়াজ ভর্তি অবস্থায় দেখা যায়। এসব ট্রাকে তাদের আড়ত থেকে মিয়ানমারের পেয়াজ ১১০ টাকা দরে বিক্রি করে বোঝাই করা হচ্ছে। কিন্তু ঐ আড়তে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম যখন র‍্যাব-৭ ও পুলিশ সহযোগে প্রবেশ করেন তখন আড়তে সংরক্ষিত মূল্য তালিকায় দেখা যায় বার্মা পেয়াজের দাম ৬০-৬৫ টাকা।

দোকানে সংরক্ষিত কাগজপত্র পরীক্ষা করে মিয়ানমারের পেয়াজের দামে কারসাজি ও প্রতারণার প্রমাণ পাওয়ায় মেসার্স খাতুনগঞ্জ ট্রেডিংকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সৌমিক ট্রেডার্স ও বেঙ্গল ট্রেডার্সকে মিয়ানমারের পেয়াজ আমদানি মূল্যের চাইতে মাত্রাতিরিক্তভাবে ১০০-১০৫ টাকা কেজি প্রতি দরে বিক্রি করায় ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। মোট চারটি মামলায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অভিযানের পর মিয়ানমারের পেয়াজ তাৎক্ষণিকভাবে ৭০-৭৫ টাকা দরে নেমে এসেছে।

জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের ভ্রাম্যমাণ আদালতের খবর পেয়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজ নিয়ে নতুন উপায়ে কারসাজির সাথে জড়িত কমিশন এজেন্টরা গা ঢাকা দিয়ে মার্কেট থেকে পালিয়ে যায়। এদের ব্যাপারে সরেজমিনে খাতুনগঞ্জ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অধিক নজরদারির জন্য র‍্যাব ও পুলিশকে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

১ টি মন্তব্য
  1. Manna Mazumder বলেছেন

    কোটি ইনকাম একলাখ ত্রিশ হাজার জরিমানা মাত্র???? কোথায় জেলে থাকার কথা সেই জায়গায়,,,,,,