অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বিশ্বের গণতান্ত্রিক নেতাদের যেভাবে মুক্ত করেছে খালেদা জিয়াকেও সেভাবে মুক্ত করতে হবে

0
.

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মানুষ এখন বিয়ে বাড়ীতে উপহার নিয়ে যায় না। উপহার হিসেবে পিয়াজ নিয়ে যাচ্ছে। পেঁয়াজের দাম এখন আড়ইশ টাকা ছাড়িয়েছে। ঘন্টায় ঘন্টায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজের ব্যাপারে একটা সমাধান দিয়েছেন। তিনি মানুষকে পেঁয়াজ খেতে মানা করেছেন। কারণ তার তো মানুষের ভোটের প্রয়োজন নেই। তিনি মানুষকে তোয়াক্কা করেন না। চট্টগ্রামে কৃষকদলের উদ্যোগে পেঁয়াজের উপর একটা সেমিনার আয়োজন করতে হবে। ৩০ টাকার পেঁয়াজ আড়াইশ টাকা কিভাবে হতে পারে এটার ইতিহাস মানুষ জানাতে হবে। তিনি বিশ্বের গণতান্ত্রিক নেতাদেরকে যেভাবে মুক্ত করেছে বেগম খালেদা জিয়াকেও সেভাবে মুক্ত করার আহবান জানান।

তিনি আজ ১৬ নভেম্বর শনিবার বিকালে নগরীর কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল চট্টগ্রাম উওর জেলা শাখার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

এতে তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন আগে দু’টি ট্রেন মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। অথচ মন্ত্রী বলছে এর পিছনে নাকি নাশকতা আছে। এই মন্ত্রীরা জীবনেও ভোটে নির্বাচিত হয়নি। এরা জনবিচ্ছিন্ন, এরা ভোট ডাকাত। মানুষের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেছে শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছে তা অন্য কোন নেতা পারেনি। তারা ক্যাসিনো উৎপাদন করতে পারে। শেয়ার বাজার লুট করতে পারে। মানুষের শ্রম দিয়ে উৎপাদনের মধ্যে যে আনন্দ, হালাল আয়ের মাধ্যমে একটি দেশ কোথায় যেতে পারে শহীদ জিয়া তা চিন্তা করেছিলেন। সেজন্য তিনি কৃষক দল গঠন করেছিলেন। নির্বাচিত নতুন কমিটিকে শহীদ জিয়ার সে স্বপ্ন পূরণ করতে হবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন বলেন, দেশে যে অবস্থা চলছে তাতে কেউ শান্তিতে
নেই। বর্তমানে কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসলের মূল্য না পেয়ে আগুন দিচ্ছে। সাম্প্রতিক বন্যায় সরকার কৃষকদের পাশে ছিল না। কৃষক দলের পক্ষ থেকে বন্যার্থদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। শহীদ জিয়া কৃষক দল গঠন করেছিলেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। তিনি বলেন, বুয়েট ছাত্র আবরারকে
পিঠিয়ে হত্যায় ছাত্রলীগের পঁচিশজন জড়িত ছিল। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসের কারাখানায় পরিণত হয়েছে। টর্চার সেল গঠন করে নেতাকর্মীদের নির্যাতন চালিয়েছে সেজন্য ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা: শাহাদাত হোসেন বলেন, যারা বলছেন পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করা যায়, পেঁয়াজ না খেলে কি
হয় অথচ তারা পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ করেনি। তারা জনগণের সমস্যা সমাধান না করে পেঁয়াজ না খাওয়ার যে পরামর্শ দিয়েছেন তা তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। এক সময় চালের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় বলেছে ভাত না খেয়ে আলু খেতে। এখন বলছে পেঁয়াজ না খেতে, দেশে পর পর ট্রেন দূর্ঘটনা হচ্ছে এর প্রতিকার কি ট্রেনে যাতায়াত না করা? তিনি ভোটের অধিকার ও বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে স্বতস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে বর্তমান সরকার দেশে এক অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। লুটেরা সরকারের সিন্ডিকেটের কাছে দেশের মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। জনবচ্ছিন্ন সরকার কৃষি নির্ভরতা থেকে আমদানী নির্ভর অর্থনীতি চালু করায় দেশে খাদ্য উৎপাদন কমেছে। তার সুযোগ নিচ্ছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি হওয়া সিন্ডিকেট।

তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক লায়ন আসলাম চৌধুরীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, শহীদ জিয়ার দূরদর্শীতায় দেশে উৎপাদনমূখি অর্থনীতি চালুর মাধ্যমে আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। এই জন্য তিনি দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে কৃষক দলের প্রয়োজনীতা অনুভব করেছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম উওর জেলা বিএনপি নেতা চাকসু ভিপি মো: নাজিম উদ্দীন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা মিথ্যা ও
বানোয়াট। দেশে বিদেশের এর কোন ভিত্তি নেই। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে গণতন্ত্রের কোন মূল্য নেই।

কৃষকদল চট্টগ্রাম উওর জেলা শাখার সভাপতি ইসহাক কাদের চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম লতিফির পরিচালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কৃষক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক এম এ হালিম। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আলহাজ্ব সালাহ উদ্দিন, কর্ণেল (অব:) আজিম উল্লাহ বাহার। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলম, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, শাহেদ বক্স, সামশুল হক, বিএনপি নেতা আজম খান, এড. আবু তাহের, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, মনজুর রহমান চৌধুরী, কাজী সালাহ উদ্দিন, সোলায়মান মঞ্জু, মো. ইদ্রিস আলী, আবদুল হাই, মোস্তফা কামাল পাশা, মোরসালিন, দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের সভাপতি সৈয়দ সাইফুদ্দিন, মহানগর কৃষকদলের মনিরুল ইসলাম মনু, কৃষকদল নেতা নাছিরুল কবির মনির, নাছির উদ্দিন, নুরুল আমিন তালুকদার, আবিদ হোসেন মানিক, নুরুল আলম মেম্বার, এড. আবু সাঈদ, আজিজুল হক, ডা. মিজানুর রহমান, নাসিম উদ্দিন সিকদার, মো. মহিউদ্দিন, জুলফিকার আলী ভুট্টো, কাউসার কমিশনার প্রমুখ।

সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন উত্তর জেলা কৃষক দলের কমিটি ঘোষণা করেন। অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম লতিফিকে সভাপতি ও বদিউল আলম বদরুলকে সাধারণ সম্পাদক করে উত্তর জেলা কৃষকদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়।