অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বড়ুয়া ভবনে বিস্ফোরণঃ জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শিক্ষিকা তিশা

0
তিশা গোমেজ।

দু্ইদিন কেটে গেলেও নগরীর পাথরঘাট বড়ুয়া ভবনের ভয়াবহ বিস্ফোরণের রহস্য উদঘাটন হয়নি। ঘটনার পর থেকে গ্যাস লাইনের লিকেজ হয়ে বিস্ফোরণের কথা বলা হলেও কর্ণফুলি গ্যাস কর্তৃপক্ষ তার স্বীকার করতে রাজি নয়।  প্রতিষ্ঠানটি একাধিক কর্মকর্তা গত দুইদিন ধরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে জোরালো ভাবেই দাবী করেছে এটি গ্যাস লাইনের বিস্ফোরণ নয়। অন্য কোন কারণে বিস্ফোরণ হকে পারে।

রবিবার দুর্ঘটনার পর ঘটিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহত নিহতদের স্বজন এবং প্রতক্ষ্যদর্শীদের সাথে কথা বলেও ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটন করতে পারেনি। এ ঘটনায় ৭টি জীবন্ত প্রান চলে গেছে। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আরো ৯জন।

.

তাদের মধ্যে জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে রয়েছেন বিস্ফোরণে আহত স্কুল শিক্ষকা তিশা গোমেজ। হাসপাতালে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় কাটছে স্বজনদের সময়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে তিশা গোমেজ নামে ওই শিক্ষিকাকে। ঘটনার দুইদিন পেরিয়ে গেলেও জ্ঞান ফেরেনি পাথরঘাটা সেন্ট জনস গ্রামার স্কুলের শিক্ষিকা তিশা গোমেজের। বিস্ফোরণের সময় স্কুলে যাওয়ার পথে দেয়াল চাপায় গুরুতর আহত হন তিশা।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আইসিইউতে থাকা প্রত্যেকের মাথা ও বুকে গুরুতর আঘাত রয়েছে। বাঁচা-মরা সৃষ্টিকর্তার উপর নির্ভর করছে। দুই মেয়েকে শিক্ষিত করার স্বপ্ন ছিল তিশার বাবা অনল গোমেজের। বড় মেয়ে তিশা পড়ালেখার পাশাপাশি সেন্ট জনস গ্রামার স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি নগরীর ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বি.কম এর দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া ছোট মেয়ে এশা মারিয়া গোমেজ এবার জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

তিশার বাবা অনল গোমেজ বলেন, ‘আমার স্বপ্নটা বুঝি আর পূরণ হলো না। আগামী ২৪ নভেম্বর তিশার বিকম ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। সৃষ্টিকর্তা যদি তাকে বাঁচায়, সে কীভাবে লেখাপড়া করবে। তার তো ডান হাতই ভেঙ্গে গেছে! ’

আইসিইউতে থাকা অপর দুইজন হলেন, নজির আহম্মদ (৫৫) ও আবদুল হামিদ (৩৫)। এরমধ্যে নজির আহম্মদ ঘটনার সময় রিক্সা চালিয়ে এবং আবদুল হামিদ পথচারি হিসেবে হেঁটে যাচ্ছিলেন। বিস্ফোরণের দেয়াল চাপায় তারা আহত হন।

আইসিইউ’র দায়িত্বে থাকা সহযোগী অধ্যাপক ডা. হারুনুর রশীদ বলেন, আইসিইউতে থাকা তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কারো জ্ঞান ফেরেনি। তাদের মাথা ও বুকে গুরুতর আঘাত রয়েছে। এরমধ্যে আবদুল হামিদ নামে রোগী কিছুটা রেসপন্স করছে। তবে জ্ঞান পুরোপুরি ফেরেনি।

এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত নয়জনের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ ১ জনকে রবিবার বিকেলেই ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। তার নাম অর্পিতা নাথ (১৫)। অর্পিতা নগরীর অর্পণাচরন সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিস্ফোরণে তার মুখমন্ডল এবং শ্বাসনালী পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।