বিয়ের নাটক সাজিয়ে ভারত থেকে এনে হত্যা মামলার দুই আসামী গ্রেফতার
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামে ৮ বছর আগে সংগঠিত একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার দুই আসামীকে কৌশলে ভারত থেকে বাংলাদেশে এনে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মূলত বিয়ের নাটক সাজিয়ে চট্টগ্রামের বোয়ালখালি থানা পুলিশ চাঞ্চল্যকর অন্তর হত্যা মামলার অন্যতম আসামী জেসমিন ও সঞ্চয়কে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায় ভাইয়ের বিয়ের এ নাটক সাজাতে তাদের বেশ কৌশল এবং সময় লেগেছে।
পুলিশ বলছে, জেসমিনের ঘর থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল সিমের সূত্র ধরে তার ভাই মোবিনের বিয়ের নাটক সাজায় পুলিশ। গতকাল শনিবার ছিলো বিয়ের দিনক্ষণ। সে বিয়ে নামক পুলিশি ফাঁদে যোগ দিতে ভারতের আগতলা থেকে সঞ্জয়, শিশু নিপাসহ ছুটে আসে জেসমিন। এরপর তাদের গ্রেফতার করে আজ রবিবার আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়।
বোয়ালখালী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক রবিউল হোসেন জানান, গতকাল শনিবার বিকেলে সাড়ে ৪টায় নগরীর পাহাড়তলী থানার সহযোগিতায় অলঙ্কার মোড় থেকে জেসমিন আকতার খুকুমনি (৩১) ও সঞ্জয়কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার সাথে নিপা আকতার নামে এক শিশু ছিল।
তিনি জানান, ৮ বছর আগে এ হত্যাকা-ের পরপরই জেসমিন ও সঞ্জয় ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল। ৮ অক্টোবর শনিবার তারা দেশে আসে। গ্রেফতারের পর পরই তাদের বোয়ালখালী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হলে তাকে জেল হাজতে নেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। জেসমিনের সাথে থাকা তার দশ বছরের মেয়ে নিপা আকতারকে নিকট আত্মীয়র জিম্মায় দেয় আদালত ।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগরীর নগরীর লিটল জুয়েলস ফ্লাওয়ার স্কুলের ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী অন্তর দাশ (৭) কে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর অন্তরের পিতার কাছে মুক্তিপণ দাবি করা।
এ ব্যাপারে ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর অন্তরের মা লাকী দাশ বাদী হয়ে ৭জনকে আসামী করে নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে কানুনগোপাড়া বিদগ্রাম জেসমিনের বাপের বাড়ীর পেছনের একটি পুকুর পাড়ে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় অন্তরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় জেসমিনের ভাই মোবিনকে পুলিশ গ্রেফতার করলে সেসময় মোবিন আদালতে ঘটনার দায় স্বীকারে ১৬৪ জবানবন্দি প্রদান করেন। এতে তিনি হত্যাকা-ের জড়িত জেসমিন ও সঞ্জয়ের নাম প্রকাশ করে।
নিহত শিশু অন্তর পটিয়া উপজেলার ছনহরা এলাকার কাঞ্চন দাশের বড়ছেলে। কাঞ্চন দাশ পরিবার নিয়ে নগরীর দেওয়ানজী পুকুরপাড় মাছুয়া ঝর্ণা এলাকার ভাড়াবাসায় বসবাস করতেন।
আসামীদের গ্রেফতারে বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সালাহ উদ্দিন চৌধুরী, পাহাড়তলী থানার অফিসার ইনচার্জ রনজিত কুমার বড়ুয়া সহযোগিতায় নেতৃত্ব দেন বোয়ালখালী থানার এএসআই রবিউল হোসেন।
গ্রেফতারকৃত জেসমিন বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়া বিদগ্রামের নুরুল ইসলাম প্রকাশ ওহাব মিয়ার মেয়ে।
এদেরকে ফাঁশি দেওয়া হোক