অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সব কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এলে কার্বন বিস্ফোরণ হবে: টিআইবি

0

সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশে ৩০টি বড় বড় কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। যা থেকে ৩৩ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। এসব প্রকল্প নির্মাণ হলে দেশে কার্বন বিস্ফোরণ ঘটবে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রামপালসহ সব ধরনের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়েছে।

স্পেনের মাদ্রিদে আসন্ন কপ-২৫ (কনফারেন্স অব দ্যা পার্টিজ) জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে জলবায়ু অর্থায়নে দূষণকারী শিল্পোন্নত দেশের প্রতিশ্রুতির বাস্তব অগ্রগতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করে টিআইবি।

এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংস্থাটির ক্লাইমেট ফিন্যান্স গভর্নেন্সের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার জাকির হোসেন খান ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহফুজুল হক।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশের প্রায় ২ হাজার ৮২৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে কার্বন গ্যাস কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ। অথচ কার্বন গ্যাস নিঃসরণকারী কয়লা বিদ্যুতের একের পর একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। যা স্ববিরোধিতা। এতে জলবায়ু তহবিলের অর্থ পেতে আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলাদেশের দর কষাকষির সুযোগ কমতে পারে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকার প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করে কয়লা বিদ্যুতের নির্ভরতা তৈরি করছে বাংলাদেশে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্তরে পরিবেশ দূষণকারী দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে বাংলাদেশ। অথচ আমরাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সুন্দরবন বিনাশকারী রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ এর আশপাশে গড়ে ওঠা সব শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাজ বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চলে সব ধরনের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ স্থগিত করে নিরপেক্ষ সংস্থা দ্বারা পরিবেশ প্রভাব সমীক্ষা করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে সেই প্রতিবেদন স্বীকৃত হতে হবে। আমরা বিদ্যুতের বিপক্ষে নই। তবে দূষণের বিপক্ষে। এ সময় নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে সরকারকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মাদ্রিদ সম্মেলনে বাংলাদেশের জন্য উত্থাপনযোগ্য কিছু দাবির কথাও বলেছে টিআইবি।

সেগুলো হলো- ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে ঋণ নয়, প্রতিশ্রুত অর্থের অনুদান আদায়, যথাসময়ে অর্থ ছাড় পেতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো জলবায়ু কূটনীতির মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে প্রতিশ্রুতি আদায়, তহবিল প্রদানে সময়াবদ্ধ রোডম্যাপ তৈরি ও বাস্তবায়ন করা, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্বার্থ নিশ্চিতে উন্নত দেশগুলোর প্রয়োজনীয় সম্পদ সরবরাহ, জিসিএফের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতে সুশীল সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করে ট্রাস্টি বোর্ড গঠনসহ বেশ কিছু।