অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

প্রকৌশলীগণ দেশের উন্নয়নের কারিগর- চুয়েটে রাষ্ট্রপতি (ভিডিও)

0
.

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনাময় দেশ। এদেশের রয়েছে বিপুল মানব সম্পদ, উর্বর কৃষিভূমি এবং সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সম্পদ। জনবহুল এ দেশকে সমৃদ্ধশালী করতে হলে প্রয়োজন পরিকল্পিত উপায়ে বিদ্যমান সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার। প্রকৌশলীগণ উন্নয়নের কারিগর। তাদের মেধা, মনন ও সৃজনশীল চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসে টেকসই উন্নয়নের রূপরেখা। তাই প্রকৌশলীদের চিন্তা ও চেতনায় থাকবে দূরদৃষ্টির সুস্পষ্ট প্রতিফলন।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এর ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আগামী ২০৫০ সালে বা ২১০০ সালে বাংলাদেশের উন্নয়ন কেমন হওয়া উচিত বা বাংলাদেশের অবস্থান কোন্ স্তরে পৌঁছাবে তা বিবেচনায় রেখেই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকেও যথাযথভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্বায়নের এই যুগে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আমাদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা আজ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের আত্ম-মর্যাদা সমুন্নত রাখতে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। আমি আশা করি, আজকের নবীন প্রকৌশলীরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উপলব্ধি করবে এবং তাদের সৃজনশীল চিন্তা ও লব্ধ জ্ঞানকে এ লক্ষ্যে কাজে লাগাবে।

.

এবারের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গত চার বছরের সর্বোচ্চ সিজিপিএ ধারী ৪ জনকে “বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক” প্রদান করা হয়। তাঁরা হলেন- ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ই.এম.কে. ইকবাল আহমেদ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়া আবসার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্চয় বড়ুয়া এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ রাশেদুর রহমান।

এছাড়া সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ২ হাজার ১৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট এবং ৮৩ জন পোস্ট-গ্র্যাজুয়েটসহ মোট প্রায় ২ হাজার ২৩১ জন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সমাবর্তন ডিগ্রী প্রদান করা হয়।

রাষ্ট্রপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত চ্যান্সেলর মোঃ আবদুল হামিদ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

এতে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক মাননীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ.কে. আজাদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
এছাড়া ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী।

এদিকে আগামীকাল ৬ ডিসেম্বর, চুয়েটের গৌরবময় পথচলার ৫০ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এম.পি মহোদয়।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন, বাংলাদেশ রেলপথ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সংসদ সদস্য এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

উক্ত সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের ভিভিআইপিগণ, মন্ত্রী পরিষদ সদস্যগণ, এমপিগণ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত বিপুল প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, চুয়েট পরিবারের বর্তমান সদস্যগণ মিলে প্রায় ১০ হাজার লোকের মিলনমেলা বসতে পারে।

সুবর্ণজয়ন্তীর জমকালো আয়োজনে থাকবে- আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে নগরজুড়ে আনন্দ র‌্যালি, সন্ধ্যায় আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাতে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান, আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসে যাত্রা, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান, চুয়েটের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আমন্ত্রিত শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, নৈশভোজ, ফায়ারওয়ার্কস, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী জেমস ও নগর বাউলের জমজমাট কনসার্ট প্রভৃতি।