অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘাতের ঘটনা চবি কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি

0
.

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যকার সংঘাতের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যে কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তীকে আহবায়ক, তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হোসাইনকে সচিব এবং সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবির পলাশকে সদস্য করে গঠিত এ কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এ কমিটি গঠন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নুর আহমদ  বলেন, ‘গত ৩০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুর রব হলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদর মধ্যকার মারামারির ঘটনা, ১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীর এগারমাইল এলাকায় দুই শিক্ষার্থী (একজন প্রাক্তন) আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এবং পরবর্তীতে ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদর মধ্যকার উত্তেজনার সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর চারটি গাড়ি, প্রক্টরর একটি গাড়ি ও জিরো পয়েন্টে ওয়াচ-টাওয়ার ভাংচুরের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

এর আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৩০ নভেম্বর রাত থেকে তিন দিনে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ ‘চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) ও ভার্সিটি এক্সপ্রেসের (ভিএক্স) নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে গত ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হাটহাজারী উপজেলার এগারো মাইল এলাকায় সিএফসি উপগ্রুপের নেতা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নাসির উদ্দিন সুমন ও ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান রাফিকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা। এ খবরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় পুলিশ কাদানো গ্যাস নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার করে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে থাকা পুলিশের চারটি গাড়ি, প্রক্টরের একটি গাড়ি ও ওয়াচ-টাওয়ারে ভাংচুর চালানো হয়। পরে দুই ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার মদদদাতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের (ছাত্র উপদেষ্টা) পরিচালক অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌলাহকে দায়ী করে তাঁর পদত্যাগ, হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের দাবিতে অবরোধের ডাক দিয়েছিল সিএফসি উপগ্রুপের নেতাকর্মীরা। পরে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপতির সফর উপলক্ষে অবরোধের প্রথম দিন গত সোমবার সকালেই অবরোধ শিথিল করা হয়েছে। তবে একই দাবিতে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছিল সিএফসি উপগ্রুপের নেতাকর্মীরা। এছাড়া নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় গত মঙ্গলবার হাটহাজারী মডেল থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে ছাত্রলীগের বিবাদমান পক্ষ দুটি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবসে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের এই দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছিলেন সিএফসি কর্মী ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাপস সরকার। বিবাদমান পক্ষ দুটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ ‘চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি)’ ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক মিজানুর রহমান বিপুলের অনুসারী ‘ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স)’। এর মধ্যে রুবেল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এবং বিপুল নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।