অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ম্যাক্স হাসপাতালের পরিচালকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আইনজীবির মামলা

0
.

এবার মাতৃগর্ভে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রামের আলোচিত সেই ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে মামলা হয়েছে। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি করেন এক আইনজীবী।

রবিবার (০৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহানের আদালতে ওই মামলা করেন আইনজীবী ইউসুফ আলম মাসুদ। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সন্ধ্যায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে- ম্যাক্স হাসাপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী খান, চিকিৎসক ডা. আফরোজা ফেরদৌস এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফির চিকিৎসক ডা. এইচ এম রাকিবুল হককে। এদের মধ্যে আফরোজা ফেরদৌস চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (অবস অ্যান্ড গাইনি) এবং এইচ এম রাকিবুল হক সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড আল্ট্রাসাউন্ডে কর্মরত আছেন।

মামলার বাদীর আইনজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, সম্প্রতি ওই হাসপাতালে এক প্রসূতির আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে গর্ভের শিশুর অবস্থা ‘স্বাভাবিক’ উল্লেখ করা হলেও ৩ ডিসেম্বর অস্ত্রোপচার করার পর জানানো হয়, শিশুটি গর্ভেই মারা গেছে। তাই অবহেলাজনিত মৃত্যু এবং দুষ্কর্মে সহযোগিতার অভিযোগে তিনজনকে আসামি করে দণ্ড বিধির ৩০৪ (ক)/১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। আদালত আমার অভিযোগ আমলে নিয়ে তা সহকারী পুলিশ সুপার বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। সেই সঙ্গে একজন নিরপেক্ষ স্ত্রী, প্রসুতি ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞের মতামত এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।

মামলার আরজিতে বাদী ইউসুফ আলম মাসুদ উল্লেখ করেছেন, আমার স্ত্রীর (মামলার বাদী ইউসুফ আলম মাসুদ) পূর্ব নির্ধারিত ডেলিভারির তারিখ ছিল ১৭ ডিসেম্বর। ডা. আফরোজা ফেরদৌসের অধীনে তার নিয়মিত পরিচর্যা চলছিল। গত ১ ডিসেম্বর পেটে ব্যথা অনুভব করায় তাকে ওই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। ডা. আফরোজা ফেরদৌস আমার স্ত্রীকে দেখে ও রিপোর্ট দেখে বলেন, ১৭ তারিখেই ডেলিভারির ডেট ঠিক আছে। এই ব্যথা, সেই ব্যথা না। ব্যথা কমাতে তিনি ওষুধও দেন। আরেকটি আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে বললেন। সেদিন রাত পৌনে দশটায় ম্যাক্স হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাই। সেদিন আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা ডা. এইচ এম রাকিবুল হকও বলেন, সব ঠিক আছে। পরে ২ ডিসেম্বর রাতে গিয়ে ডা. আফরোজা ফেরদৌসকে রিপোর্ট দেখাই। তখনও তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে ডেলিভারি হবে। এরমধ্যে ওষুধ খাওয়ার পর ব্যথাও কমেছে। এরপর ৩ ডিসেম্বর আবার তীব্র ব্যথা শুরু হয়। স্ত্রীকে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার ডাক্তার জানান, বাচ্চা গর্ভাবস্থায় মারা গেছে। পরে আমার মেয়ের গলিত দেহ দেখতে হয়েছে।

এর আগে গত ২১ নভেম্বর ম্যাক্স হাসপাতালে ‘অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায়’ জিহান সারোয়ার প্রিয় নামের ১৩ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ করে তার পরিবার। গত বছরের ২৮ জুন সাংবাদিক রুবেল খানের চার বছর বয়সী মেয়ে রাইফার মৃত্যুর পর এই ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতি, অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। সেই মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।