অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

কে এই কাসেম সোলেমানি? তিনি কেন এতো ক্ষমতাধর

0
.

যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরান রেভ্যুলশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) অভিজাত বাহিনী কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলেমানি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। এর আগেও বেশ কয়েকবার তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও জঙ্গি সংগঠন আইএস।

কাসেম সোলেমানি ইরান সাম্রাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তার নেতৃত্বাধীন কুদস ফোর্স সরাসরি দেশটির সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির প্রতি অনুগত। সোলেমানিকে জাতীয় বীর বলে মানে ইরানিরা।

১৯৫৭ সালে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরমান শহরের উপকণ্ঠে জন্মগ্রহণ করেন কাসেম সোলেমানি। ১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইরানে ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর আইআরজিসিতে যোগ দেন তিনি।

১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরান-ইরাক যুদ্ধে জেনারেল সোলেমানি কেরমানের ৪১ ‘সারুল্লাহ’ ডিভিশনের নেতৃত্ব দেন। ওই যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি ইরানের পূর্ব সীমান্তে মাদক চোরাচালান ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৭ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তাকে আইআরজিসির কুদস (পবিত্র) বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দেন। সেসময় ইরানের পূর্ব সীমান্তে তালেবান যে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল তার অবসান ঘটাতে সক্ষম হন তিনি।

২০১১ সালের ২৪ জানুয়ারি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন কাসেম সোলেমানি। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বাশার আল-আসাদের ইরান সমর্থিত সরকারকে সহযোগিতা ও ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

আইএসবিরোধী যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় বহুবার জেনারেল সোলেমানিকে হত্যার চেষ্টা করেছে জঙ্গিরা। গত অক্টোবরেও তাকে হত্যাচেষ্টা বানচাল করার কথা জানিয়েছিল ইরান।

চলতি সপ্তাহে ইরানপন্থি বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের পর তাকে হত্যার নির্দেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, মধ্যপ্রাচ্যে লেবাননের হিজবুল্লাহ অভিযান ও ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদের মতো যুক্তরাষ্ট্রের চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা ও সমর্থন করে ইরানের কুদস ফোর্স। এসব সংগঠনকে তারা অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের। গত এপ্রিলে আইআরজিসি ও তাদের অধীনস্থ কুদস ফোর্সকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে কালো তালিকাভুক্ত করে তারা।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে ইরাকের বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় নিহত হন কাসেম সোলেমানি। তার মৃত্যুর পর মার্কিন পতাকার একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেন ট্রাম্প। তবে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

জেনারেল কাসেম সোলেমানি নিহত হওয়ার ঘটনায় আমেরিকার ওপর ‘তীব্র প্রতিশোধ’ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেন, সোলাইমানি শহীদ হলেও তার কাজ বন্ধ থাকবে না। কিন্তু, যারা নিজেদের হাতে সোলেমানি ও অন্য শহীদদের রক্ত লাগিয়েছে তারা যেন তীব্র প্রতিশোধের অপেক্ষায় থাকে।