অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

শিল্পকলায় হাসান জাহাঙ্গীরের গানে মুগ্ধ দর্শক

0
গান পরিবেশন করছেন শিল্পী হাসান জাহাঙ্গীর।

চট্টগ্রামে আধুনিক গানের জনপ্রিয় শিল্পী হাসান জাহাঙ্গীরের একক সঙ্গীতানুষ্ঠান “যদি নীল দাও” অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০ জানুয়ারি (শুক্রবার) জাগরণ সঙ্গীত দলের আয়োজনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্ত মঞ্চে হাসান জাহাঙ্গীরের একক সঙ্গীতানুষ্ঠান মাতিয়ে রাখে দর্শক শ্রোতাদের।

বেতারের অনুষ্ঠান ঘোষক আব্দুল্লাাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় শিল্পী হাসান জাহাঙ্গীর প্রথমে ভাষা শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধাদের আত্মার প্রতি সম্মান জানিয়ে শুরু করেন তার পরিবেশনা।

শিল্পী তার সুরেলা কন্ঠে প্রথমে গেয়ে শুনান ফজল-এ-খোদা রচিত ও মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার সুরাপিত “সালাম সালাম হাজার সালাম” গানটি। এই গানটির পরে নিজের লেখা ও সুরে “যদি নীল দাও আমি আকাশ হব”, “তোর কারণে প্রেম মাজারে” শিরোনামের গানগুলোতে শিল্পীর সাথে দর্শক শ্রোতাও একাত্ম হয়ে পড়েন।

.

পরে অসাধারন দরাজ কন্ঠে একে একে পরিবেশন করেন “পাখিরে তুই দূরে থাকলে, আমি সাম্পানে বাধিব ঘর, হাওয়ার ওপর চলে গাড়ী, তুমি বিনে আকুল পরাণ, সুয়া উড়িল উড়িল জিবের ও জীবন”। গান নির্বাচনে শিল্পী মুন্সিআনার পরিচয় দিয়েছেন বিখ্যাত গীতিকার-ও সুরকারদের জনপ্রিয় গানগুলো নির্বাচন করে। বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হাসান জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন ধরে মঞ্চ-টেলিভিশনে সঙ্গীত পরিবেশন করছেন। এ ৮টি গানের পরে শুরু হয় আলোচনা অনুষ্ঠান।

সঙ্গীতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরস্রষ্টা শেখ সাদী খান এবং বাংলাদেশ গীতিকবি সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি স্বনামধন্য গীতিকার সাফাত খৈয়াম।

অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় ড. অনুপম সেন বলেন, “শিল্পের যে কয়টি মাধ্যম মানুষকে মানবিক করে তোলে তার মধ্যে সঙ্গীত অন্যতম। আজ যার একক সঙ্গীত পরিবেশনা উপভোগ করলাম সে জীবন শিল্পী, হাসান একাধারে যেমন দক্ষ সঙ্গীতশিল্পী, গুনীআবৃতি শিল্পী তেমনি নাট্যাভিনেতা ও নাট্য নির্দেশক। এতে তার সাধক মন ও অনন্য মেধার পরিচয় মেলে। ইতিমধ্যে বেরিয়েছে তার ৩টি একক গানের অ্যালবাম।

এসবের অধিকাংশ গানের কথা ও সুর শিল্পী নিজের। হাসান তার অঙ্গীকার, অনন্য মেধা ও সাংগঠনিক দক্ষতার মাধ্যমে চট্টগ্রামের সংস্কৃতিকে উজাড় করে দিয়েছে।

সুরকার শেখ সাদী খান বলেন “ হাসান জাহাঙ্গীর ইতিমধ্যেই একজন প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছেন। শিল্পের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম আবৃতি, নাটক, সংবাদ উপস্থাপনা, সঙ্গীত রচনা ও সুর সৃষ্টিতেও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। “যদি নীল দাও” এই অনুষ্ঠানেও শিল্পীর নিজের লেখা ও সুর করা গান এবং দেশের জনপ্রিয় গীতিকার-সুরকারের গানগুলো অপূর্ব সুর মাধুর্য্যে কন্ঠে উপস্থাপন করেছেন।

গীতিকার সাফাত খৈয়াম বলেন, “ শিল্পী হাসান জাহাঙ্গীরের অন্যন্য সঙ্গীত পরিবেশনায় আমি মুগ্ধ হয়েছি। খুব ভাল লেগেছে বিখ্যাত গানগুলো তিনি অসাধারন গায়কীতে কন্ঠে ধারন করেছেন। তার নিজের লেখা ও সুর করা গানগুলো আশা করি সারা দেশের শ্রোতার মনে ভাল লাগার পরশ বুলিয়ে দিবে। বিশেষ করে সদ্য প্রকাশিত “ যদি নীল দাও” অ্যালবামের গানগুলো শ্রোতাদের বেশ ভাল লাগবে”।

পরে শিল্পী একে একে গেয়ে শোনান- “আমার এ দু’ টি চোখ, তুমি মোর জীবনের ভাবনা, এখানে দু’জনে নিরজনে, বকুল ফুল বকুল ফুল, আমার যমুনার জল, সোনা বন্ধু তুই আমারে, বাঁশখালী মঈশখালী, চল্ চল্ চল্, প্রভৃতি জনপ্রিয় গানগুলো। অনুষ্ঠানে মোট ১৬টি গান পরিবেশন করেন। শিল্পীকে যন্ত্রানুসঙ্গে সহযোগীতা করে ভাইব্রেশান মিউজিশিয়ান টীম। যন্ত্রসঙ্গীতে যারা ছিলেন, তবলায় লিটন মিত্র ও পিকলু দাশ, কিবোর্ডে সৃজিত রায়, অক্টোপ্যাডে জুয়েল দাশ, বেজ গীটারে সজল সরকার, এ্যাকুষ্টিক গীটারে সৌরভ দাশ হারমোনিয়ামে সৈয়দুল হক, বাঁশীতে বিকাশ নন্দী।