অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ঈদের ছুটিতে ফতেপুর সিক্রি, আগ্রা

0

আগ্রার ৩৭ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে ১৫৬৯ সালে আকবর এখানেই তার রাজধানী স্থানান্তরিত করেছিলেন। সম্ভবত জলাভাবের কারণে। বছর পনেরো বাদে এই নতুন রাজধানী পরিত্যক্ত হয়। জনশ্রুতি এই যে সন্তানহীন আকবর ফতেপুরের ফকির সেলিম চিশতির শরণাপন্ন হয়ে পুত্রসন্তান লাভ করেন। ফকিরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ফতেপুরের শৈল্যশিখরে হিন্দু ও মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর সমম্বয়ে গড়ে তোলেন দুর্গ ও একাধিক প্রাসাদ। আকবরের গুজরাত বিজয়ের স্মৃতিতে ১৫৭৫ সালের এপ্রিলে সমাপ্ত হয় ১৭৬ ফুট (৫৪ মিটার) উঁচু এশিয়ার উচ্চতম প্রবেশদ্বার ‘বুলন্দ দরওয়াজা’।

আগ্রা থেকে সম্রাট আকবরের নতুন রাজধানী ফতেপুর সিক্রির দূরত্ব ছিল ৩৬ কিলোমিটার। সুউচ্চ প্রাচীর ঘেরা পরিত্যক্ত নগরীটি যেন স্থাপত্য ও শিল্পকর্মের অনন্য সংগ্রহশালা। এখানের দুর্গ ও প্রাসাদগুলো লাল রঙের বেলেপাথরে তৈরি। প্রধান তোরণদ্বার ৫৪ মিটার উঁচু।

পাথুরে উঠানের চারপাশে আছে পরিখা। ভিতরে জলাধার, অট্টালিকা, উদ্যান, গোসলখানা, মসজিদ, স্মৃতিসৌধ আরো কতো কী! এখানে আছে দেওয়ান-ই-আম, সম্রাটের সিংহাসন এবং সবচেয়ে কারুকার্য খচিত তুরস্ক সুলতানের বাসগৃহ।

বৌদ্ধ অনুকরণে নির্মিত পাঁচতলা ভবন। ফতেপুর সিক্রির সবচেয়ে বড় প্রাসাদের নাম যোধাবাঈ প্রাসাদ এবং বীরবল প্রাসাদ। এসব প্রাসাদের জলাশয়ের তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ১৮ মিটার উঁচু ‘হিরণ মিনার’। এই মিনারে বসেই সম্রাট শিকার করতেন।

ইতমৎউদ্দোলার সমাধি:

যমুনার অপর পাড়ে তাজমহল থেকে প্রায় ৭ কিমি দূরে দুধ সাদা মার্বেলের অসাধারণ এই সমাধি সৌধ জাহাঙ্গিরের প্রধানমন্ত্রী ও সাম্রাঞ্জী নুরজাহানের পিতা গিয়াসউদ্দিন বেগমের স্মৃতিতে নির্মিত। এখানে নুরজাহানের মাকেও সমাধিস্থ করা হয়েছিল। সৌধের ভেতরে শ্বেতপাথরের সূক্ষ্ম জালির কাজ তাজমহলের অন্দর ভাগের থেকে কোনও অংশে কম নয়। এটি ভারতের তৈরি প্রথম সমাধি সৌধ যাতে পারস্য থেকে আনা মোজাইক ব্যবহার করা হয়েছিল।

 

চিনিকা রোজা:

এটি ইতমৎউদ্দৌলা থেকে মাত্র ১ কিমি. দূরে শাজাহানের প্রধানমন্ত্রী তথা প্রখ্যাত ফার্সি কবি আফজল খাঁর সমাধি সৌধ। নিজের মৃত্যুর আগেই আফজল খাঁ এই সৌধটি তৈরি করিয়েছিলেন। এখনে তাঁর বেগমকেও সমাধিস্থ করা হয়।

আরো যা যা দেখতে পাবেন :

দেওয়ান-ই-খাস, শাহজাহানের তৈরি দেওয়ান-ই-আম, মোতি মসজিত, মচ্ছিভবন, হামাম, শিশমহল, খাসমহল, জাহাঙ্গির প্রাসাদ, সেলিম চিন্তার শ্বেতপ্রাসাদের সমাধি সৌধ, দেওয়ান-ই-আম, দেওয়ান-ই-খাস, যোধাবাই প্রাসাদ, মারিয়ামের প্রাসাদ, পচিশি কোট, হাওয়ামহল, বীরবলের প্রাসাদ, পঞ্চমহল, জামা মসজিদ, কারাভানসরাই, হাতি পোল, হামাম, হিরণ মিনার, আকবরের প্রাসাদ (Tomb of Akbar the Great)

যেভাবে যাবেন:

দিল্লি থেকে আগ্রা মাত্র ২০০ কি.মি.। চাইলে আপনি ট্যাক্সি ভাড়া করে দিল্লি থেকে আগ্রা যেতে পারেন। ৭ সিটের জাইলো গাড়ী পেয়ে যাবেন ২৫০০-৩০০০ রুপির মধ্যে। চাইলে বাস/ট্রেনেও যেতে পারেন।

কলকাতা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে দিল্লি। ভাড়া এসি থ্রী-টায়ার ৩০০০ রুপি। (তৎকাল)। দিল্লি থেকে জাইলোতে আগ্রা। আগ্রাতে প্রচুর দালাল আপনার পেছনে লাগবে। কাউকে পাত্তা দিবেন না। আগ্রা পৌঁছে নিজে হোটেল ঠিক করুন এবং ঘোরার জন্য গাড়ীও নিজে ঠিক করুন।