অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

উদ্বোধনের অপেক্ষায় চট্টগ্রামে নির্মিত আন্তর্জাতিক সুইমিং পুল

0
.

শীঘ্রই “নীল জলে ঢেউ তুলবেন চট্টগ্রামের সাঁতার প্রেমিরা”। খুব শীঘ্রই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামে নির্মিত আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং পুলটি।

এক বছর আগেও নগরীর আউটার স্টেডিয়ামের পাশের এই এলাকাটি কতটা জঞ্জালে ভরা ছিল। নেশাখোর, ভবঘুরে আর ভাসমানদের দখলে থাকা আউটার স্টেডিয়ামের দক্ষিণাংশ ছিল অপরাধের আঁখড়া। রাত হলেই সে এলাকা দিয়ে হেঁটে যেতে ভয় পেত মানুষ।

আর এখন সে এলাকাটি আলো ঝলমলে এক দর্শনীয় স্থান। কারণ সেখানে যে নির্মিত হলো আন্তজার্তিক মানের এ্কটি সুইমিং পুল।

.

দেশের অনেক ছোট শহরেও স্টেডিয়ামের পাশে সুইমিং পুল থাকলেও চট্টগ্রামে কোনো সুইমিং পুল ছিল না। চট্টগ্রামবাসীর অনেক দিনের দাবি পূরণ হলো। আর এ দাবি পূরণে এগিয়ে আসে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় আউটার স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পার্শ্বে এক একরেরও বেশি জায়গার উপর নির্মিত এই সুইমিং কমপ্লেক্সে পুলের সাইজ ১১০০ বর্গ মিটার। যার দৈর্ঘ ৫০ মিটার ও প্রস্থ ২২ মিটার, রয়েছে ৮টি লেইন। প্রায় ২০ লাখ লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পুলের গড় গভীরতা ২ মিটার। যা সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক মানের একটি সুইমিং পুল। পুলটির মূল প্রবেশ পথ পূর্ব দিকে। যার পূর্ব ও পশ্চিম দুই পাশে রয়েছে গ্যালারি। যেখানে বসতে পারবে দেড় হাজার দর্শক। নিচে রয়েছে ডিপ টিউবওয়েল, ফিল্টেশন প্লান্ট এবং ২৫০ কেভি সাবস্টেশন। এছাড়া পশ্চিম পাশে রয়েছে ওয়াটার রিজার্ভার।

.

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থায়নে ১১ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সুইমিং পুলটির কাজ আরও আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০১৭ সালে যখন এই সুইমিং পুল নির্মাণের কাজ শুরু করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, তখন কত বাধা বিপত্তি আর প্রতিবন্ধকতা ছিল। সব বাধা ডিঙিয়ে সুইমিং পুল এখন নীল জলে ঢেউ তোলার অপেক্ষায়। পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে স্বপ্নের সুইমিং পুল এখন বাস্তবে রূপ ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে।

চট্টগ্রাম শহরে সাঁতারুদের জন্য কোনো সুইমিংপুল ছিল না। ফলে সাঁতারুদের অনুশীলন করারও কোনো সযোগ ছিল না। এবার সাঁতারুদের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় তারা খুশি।

সাঁতারু মিজান, রাসেলের প্রত্যাশা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেন এই সুইমিং পুল চালু করে দেয়া হয়।

.

অবশ্য ইতোমধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল এসে সিটি মেয়র এবং সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রতিনিধি দল সুইমিং পুলের সবশেষ অবস্থা পরিদর্শন করে গেছেন।

তারা জানিয়েছেন, কিছু সমস্যা কাটিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই সুইমিং পুল চালু করা হবে।

জানা গেছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সুইমিং পুলটি নির্মাণ করলেও এর পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এক কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, সুইমিং পুলের পানি প্রসেসিং সিস্টেমে রয়েছে ডিপ টিউবওয়েল থেকে প্রথমে পানি যাবে রিজার্ভারে। তারপর ফিল্টেশন প্লান্ট হয়ে বিশুদ্ধ পানি যাবে সুইমিংপুলে। পুল থেকে আবার ওভারফ্লো হয়ে ড্রেনের মাধ্যমে সে পানি যাবে ব্লেনচিং ট্যাংকে। পরে সে পানি আবার রিসাইক্লিং হয়ে যাবে পুলে।

.

পুলের পশ্চিম পাশে রয়েছে ড্রেসিং রুম, অফিস কক্ষ এবং টয়লেট ব্লক। সবমিলিয়ে আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এই সুইমিং পুল একেবারে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রকৌশলীরা।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, সুইমিং পুলের উত্তর এবং দক্ষিণ পাশটা খালি রাখা হয়েছে। সেখানে একটি নৌকার মতো করে গড়ে তোলা হয়েছে। যেটিকে আরও সুন্দর করে সাজানো যাবে। পুলের বিভিন্ন জায়গায় ফ্লাওয়ার বিট রয়েছে। এছাড়া পুল এরিয়ায় প্রবেশ পথ এবং পুলের চারপাশে সৌন্দর্য বর্ধনের অনেক সুযোগ রয়েছে। রয়েছে বাগান করার সুযোগও। একটি পরিপূর্ণ সুইমিং কমপ্লেক্স হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে এই কমপ্লেক্সটিকে। এখন কেবল বাকি আরও কতটা সুন্দর করা যায়।

.

প্রকল্প প্রকৌশলী জাহিদ হোসেন জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা সদরে সুইমিং কমপ্লেক্স থাকলেও চট্টগ্রাম তার আওতার বাইরে ছিল। সুইমিংপুলের কাজ শেষ, আশা করছি শিগগিরই এর উদ্বোধন করা যাবে।

তিনি জানান, অন্যান্য শহরের সুইমিং কমপ্লেক্সের সঙ্গে চট্টগ্রামের সুইমিং কমপ্লেক্সটির কিছু পার্থক্য আছে। এটি দেশের সর্বাধুনিক এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সুইমিং কমপ্লেক্স। পানির পিউরিফিকেশন ফিল্টারের কারণে এটি অনন্য।###