অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে শিক্ষা, উন্নয়ন ও রাজনীতিতে সফল মানুষ নূর আহমদ চেয়ারম্যান

0
10698523_279514548912634_7798702059859307362_n
সোহেল মো. ফখরুদ-দীন
nur-ahmed-chairman
নূর আহমদ চেয়ারম্যান

চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও শিক্ষা বিস্তারে যে কজন মনীষী কাজ করে উদ্ভাসিত মানুষের স্থানে নিজেদের যোগ্যতাকে প্রমাণ করতে পেরেছেন তাঁদের মধ্যে নূর আহমদ চেয়ারম্যান অন্যতম। রাজনীতি, সমাজনীতি, সমাজ উন্নয়ন, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা চালু, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, সাহিত্য-সাংবাদিকতায় সর্বোপরি চট্টগ্রাম নগর উন্নয়নে এ মনীষীর ভূমিকা অপরিসীম। তিনি চট্টগ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালে এই অবহেলিত চট্টগ্রামে যে কাজ করেছেন তা আজও মানুষের মুখে মুখে। অসাধারণ সমাজ ও দেশ উন্নয়ন, মানবতাবাদী দেশপ্রেমিক নূর আহমদ চেয়ারম্যানের ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। তাঁর জীবন কর্মগুলো বর্তমান প্রজন্মের উদ্দেশ্যে এই প্রবন্ধে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। নূর আহমদ চেয়ারম্যান এর পিতা ছিলেন হাজী আমজাদ আলী। চট্টগ্রাম নগরীর আলকরণে স্থায়ী বসবাস করতেন। তাঁর পিতার আদিনিবাস ছিলেন নোয়াখালী। নুর আহমদ চেয়ারম্যানের জন্ম ১৮৯০ সালে। তাঁর পিতা চট্টগ্রামে ব্যবসা করতেন। তিনিও পরোপকারী সমাজকর্মী ছিলেন। নূর আহমদ চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী পরিবার থেকে বিবাহ করেন। ছাত্র হিসেবে ছিলেন জ্ঞানী ও মেধাবী। এনায়েত বাজার প্রাইমারী স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। ১৯০৭ সালে তাঁর পিতার মৃত্যু হলে তখন পড়ুয়া অবস্থায় পারিবারিক কারণে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন চট্টগ্রামের প্রথিতযশা ব্যবসায়ী, দানবীর হাজী চাঁন্দমিয়া সওদাগরের কন্যার সাথে। ১৯১০ সালে নূর আহমদ মিউনিসিপ্যাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেলা বৃত্তি নিয়ে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯১২ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিভাগীয় বৃত্তি নিয়ে প্রথম বিভাগে আইএ পাশ করেন। ১৯১৪ সালে তিনি বিএ পাশ করেন। ১৯১৬ সালে নূর আহমদ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ পাশ করেন। ১৯১৭ সালে তিনি প্রথম শ্রেণি নিয়ে বিএল ডিগ্রি লাভ করেন। কলকাতায় অবস্থান কালেই তিনি চট্টগ্রামের কৃতিপুরুষ মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী প্রতিষ্ঠিত আনজুমান এ ওলামার সদস্যভুক্ত হন। কলকাতায় শিক্ষাজীবন শেষ করে চট্টগ্রামে ফিরে এসে তিনি স্বাধীনভাবে আইন ব্যবসায়ে যোগ দেন। ১৯১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত আনজুমানে ওলামা, মুসলমান শিক্ষা সমিতি এবং মুসলমান সাহিত্য সমিতির সম্মেলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এ সূত্রে অবিভক্ত বাংলার পণ্ডিতজনদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাব অনুসারে তাঁকে চট্টগ্রাম প্রতœতত্ত্ব উদঘাটন সমিতির সদস্য মনোনীত করা হয়। তিনি চট্টগ্রাম এসোসিয়েশনের সদস্য এবং অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। রাজনৈতিক দিক দিয়ে তিনি কংগ্রেস দলের সদস্য এবং চট্টগ্রামের অপর বিখ্যাত নেতা দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের সহযোগী ছিলেন। ১৯১৯-২০ সালে তিনি অসহযোগ-খিলাফত আন্দোলনে যোগদান করেন এবং পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন। প্রকৃতপক্ষে, খিলাফত আন্দোলনের সময় থেকেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯২০ থেকে ১৯৪৭ সাল এই সমগ্র সময়ে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯২১ সালে চট্টগ্রামের পৌরসভার নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মাত্র একত্রিশ বছর বয়সে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে নূর আহমদ সবচেয়ে কম বয়সে চেয়ারম্যান হবার রেকর্ড সৃষ্টি করেন। চট্টগ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে ১৯২১ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত একাধিক ক্রমে তিনি ৩৩ বছর এ সম্মানজনক দায়িত্ব পালন করেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি বিভিন্ন প্রকারের সমাজ উন্নয়ন কাজে ব্রতী হন। ১৯২৮ সালে তিনি চট্টগ্রাম শহরে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করেন। কেবলমাত্র চট্টগ্রাম শহরে নয় চট্টগ্রামের গ্রামাঞ্চলেও প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করবার জন্য তিনি উদ্যোগী হন। ১৯৩৭ সালে তিনি চট্টগ্রামে পূরবী সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। ১৯৩৯ সালে প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভায় তিনি এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ডা. খাস্তগীর গার্লস স্কুলের ভবন সম্প্রসারণের জন্যও তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। চট্টগ্রামে নারী শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য একটি সিনিয়র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভায় সরকারের প্রতি দাবি জানান। চট্টগ্রামের প্যারেড গ্রাউন্ড ময়দানটিকে নাগরিকদের নিকট উন্মুক্ত করে দেবার জন্যও তিনি সরকারের নিকট দাবি রাখেন। মিউনিসিপ্যালটির পূর্ববর্তী চেয়ারম্যান খান বাহাদুর আবদুস সাত্তারের উদ্যোগে চট্টগ্রাম শহরে মুসলিম ইন্সস্টিটিউট স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। চট্টগ্রাম শহরে শিশু মঙ্গল ও মাতৃসদন স্থাপন তিনি প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রতিবন্ধী বালক-বালিকার জন্য চট্টগ্রামে একটি উবধভ ধহফ উঁসন ঝপযড়ড়ষ প্রতিষ্ঠারও তিনি প্রয়াস চালিয়েছিলেন। ১৯৩৮ সালে চট্টগ্রামের ক্রীড়া জগতের উন্নয়নের জন্য তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রাম এথলেটিক ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩৮ সালে চট্টগ্রাম সাহিত্য পরিষদ চেয়ারম্যান নূর আহমদকে চট্টগ্রাম শহরের একটি রাস্তার নাম কবি শশাঙ্ক মোহন সেনের নামে নামকরণ করার জন্য অনুরোধ জানালে তিনি সানন্দে তাতে সম্মতি দেন। চট্টগ্রাম শহরে বিদ্যুতায়ন, রাস্তাঘাটের সংস্কার ও উন্নয়ন, জলের সরবরাহ বৃদ্ধি করে তিনি নাগরিক জীবনে আধুনিকীকরণের বিস্তৃতি ঘটান। চট্টগ্রামের পল্লী অঞ্চলে দাতব্য চিকিৎসালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য তিনি ব্যবস্থাপক সভায় সরকারের নিকট দাবি জানান। ১৯২৯ সালের ১লা নভেম্বর চট্টগ্রাম জেলা মুসলিম লীগ সম্মেলনে তিনি যোগদান করেন এবং তাঁকে সম্মেলনের অন্যতম সহকারী সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত করা হয়। ১৯২৯ সালে ভারত সম্রাটের জন্মদিন উপলক্ষে সরকার কর্তৃক তাঁকে প্রদত্ত ‘খান সাহেব’ উপাধি তিনি প্রত্যাখান করেন। তিনি গভর্নর জেনারেলকে পত্রযোগে সসম্মানে জানান যে, “উপাধি প্রকৃত দেশ সেবার অন্তরায়।” এ প্রসঙ্গে ‘বাংলা গেজেট’ লিখছেন, “পাঠ্য জীবনে আমরা তাঁহাকে যেরূপ দেশ ও সমাজসেবায় অগ্রণী দেখিয়াছি, ব্যবহার জীবনে তাহা হইতে কোনরূপ পশ্চাৎপদ দেখি নাই। দেশ তাঁহার গুণে একান্ত মুগ্ধ… তিনি খাঁ সাহেব উপাধি বর্জন করিয়া দেশের গৌরব বর্দ্ধন করিয়াছেন। … নিষ্কাম দেশ সেবকের পক্ষে মৌলবী ছাহেবের এই নীতি অবশ্য গ্রহণীয়।” ১৯৩০ সালে চট্টগ্রামে রাজনৈতিক দল সমূহের সম্মিলিত অধিবেশনে অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতিত্ব করবার জন্য তাঁর নাম প্রস্তাব করা হয়। তাঁর অপারগতায় মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী এই পদ গ্রহণ করেন। চট্টগ্রামে যুব বিদ্রোহের প্রতি তাঁর সহানুভূতির অভাব ছিল না। ১৯৩৬ সালে তিনি সরকার প্রদত্ত করোনেশন মেডেল প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৩৭ সালে চট্টগ্রাম পল্লী এলাকার মুসলিম পক্ষ থেকে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান হিসেবে চট্টগ্রাম শহরের এবং ব্যবস্থাপক সভার সদস্য হিসেবে পল্লী অঞ্চলের উন্নয়নে তিনি আত্মনিয়োগ করার সুযোগ পান। ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম দমননীতি বিরোধী ও রাজনৈতিক বন্দী সাহায্য সমিতির তিনি পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ১৯৩৭ সাল থেকে প্রস্তাবিত যুক্তরাষ্ট্র (ঋবফবৎধষ এড়াবৎহসবহঃ) বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪০ এর দশকে তিনি মুসলিম লীগ (ছাত্রলীগ শাখা) দলের সভাপতির পদ গ্রহণ করেন। তিনি বরাবরই মুসলিম লীগকে সাম্প্রদায়িকতা ও কংগ্রেস বিদ্বেষ থেকে দূরে রাখবার চেষ্টা করতেন। ১৯৪৩ এর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সময়ে তিনি প্রাদেশিক সংসদে দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ অবস্থা বর্ণনাপূর্বক এর আশু প্রতিকারের জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। দেশ বিভাগের পর তিনি পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান এর পদাধিকার বলে তিনি বার্ষিক চট্টগ্রাম কৃষি, শিল্প ও স্বাস্থ্য প্রদর্শনী সমূহের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। পদাধিকার বলে তিনি চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরিরও সভাপতি ছিলেন। ১৯৫১ সালে তিনি গঈঅ (গবসনবৎ ড়ভ ঃযব ঈড়হংঃরঃঁবহঃ অংংবসনষু) ছিলেন। সম্ভবত, পাকিস্তার সৃষ্টির পরেই তিনি এই পদ লাভ করেন। এজন সুবক্তা ও সাংসদ হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল। কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। চট্টগ্রাম পৌরসভার নির্বাচনেই হোক আর প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচনেরই হোক তিনি কোনদিনই পরাজিত হননি। প্রকৃতপক্ষে, প্রতিপক্ষ বলতে তাঁর কেউই ছিল না। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টি হলে এর প্রথম গণপরিষদে নূর আহমদ চেয়ারম্যান সাত বছর ধরে সক্রিয় সদস্য ছিলেন। একজন সুবক্তা ও দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে তিনি পূর্ব বাংলা থেকে নানা অভাব-অভিযোগ তুলে ধরতেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি কেন্দ্রের অসমনীতির প্রেক্ষিতে তিনি সমাধানের পথ হিসেবে কতকগুলো বাস্তব প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন। বাংলা ভাষাকেও পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি প্রদানের জন্যে তিনি সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেন। পাকিস্তান গণপরিষদে নূর আহমদ চেয়ারম্যান এত বেশি প্রশ্ন উত্থাপন করতেন যার দরুণ তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান মন্তব্য করেছিলেন, “মি. নূর আহমদ, মনে হয় অধিবেশন তো শুধু আপনার জন্যেই ডাকা হয়েছে।” ১৯৫৪ সালে নূর আহমদ চেয়ারম্যান স্বেচ্ছায় পৌরসভার সর্বোচ্চ পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর অবসর জীবন প্রধানত গ্রন্থ রচনার কাজে ব্যয় হয়। তিনি মুসলমানদের পুনর্জাগরণের জন্যে তাঁদের অতীত গৌরবকে তুলে ধরেছেন। ইতিহাসে তাঁর সুগভীর পাণ্ডিত্য ছিল। তাঁর লিখিত গ্রন্থসমূহ হলো, ঞযব জরংরহম ড়ভ ওংষধস, এষড়ৎরড়ঁং জড়ষব ড়ভ ওংষধস, অ ংযড়ৎঃ ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ঞড়ি ঐঁহফৎবফ গঁংষরস ঐরংঃড়ৎরধহ, ওংষধস ধহফ রঃং ঐড়ষু চৎড়ঢ়যবঃ ধং লঁফমবফ নু ঘড়হ গঁংষরস চবৎংড়হং, অ ইড়ড়শ ড়ভ টংবভঁষ কহড়ষিবফমব, ঋড়ৎঃু এৎবধঃ গবহ ধহফ ডড়সবহ ড়ভ ওংষধস, ঐড়ষু ছঁৎধহ, ঝপরবহপব ধহফ গড়ফবৎহ কহড়ষিবফমব, ঝড়সব এষরসঢ়ংবং রহঃড় ঃযব ষরাবং ধহফ ঈযধৎধপঃবৎং ড়ভ এৎবধঃ গবহ ড়ভ ওংষধস. খিলাফত আন্দোলনে দৃঢ় বিশ্বাসী হওয়ায় তাঁর গ্রন্থ সমূহে ইসলামের অতীত গৌরব ও ইসলামি ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটেছে। ইংরেজিতে বইলেখার কারণ হলো অবাঙালিদের নিকট তাঁর বক্তব্য পৌঁছে দেওয়া। চট্টগ্রাম জনপ্রিয় নেতা নূর আহমদ চেয়ারম্যান অত্যন্ত সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন। অনেক সময় তিনি পায়ে হেঁটে তাঁর আলকরণের বাসা থেকে আন্দরকিল্লা অফিসে যাতায়াত করতেন। বিলাসিতা, আরাম-আয়েস তাঁকে কখনো স্পর্শ করতে পারেনি। এই মাটির মানুষটি যে মাটির ঘরে জন্মগ্রহণ করে সে মাটির ঘরেই আমৃত্যু কাটিয়ে দেন। ১৯৬৪ সালে ২২ অক্টোবর চট্টগ্রামসহ পূর্ব বাংলার এই বিখ্যাত মনীষী পরলোক গমন করেন। ২২ অক্টোবর ২০১৬ তাঁর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। বর্তমান প্রজন্মের রাজনীতিক নেতাকর্মী ও সমাজ সচেতন মানুষ ন্যূনতম যদি নূর আহমদ চেয়ারম্যানের মতো অবদান রেখেই সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করতেন তাহলে আমাদের এ দেশটা আরো উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতো। আমাদের এই প্রজন্মের সকলের কাছে নূর আহমদ চেয়ারম্যানের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জীবনকর্মগুলো ছড়িয়ে পড়ুক দেশের মানুষের কল্যাণে মানুষ এগিয়ে আসুক এই প্রার্থনা।

সহায়ক গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা: (১) হাজার বছরের চট্টগ্রাম, দৈনিক আজাদী; (২) চট্টগ্রাম চরিতাভিধান, সুনীতিভূষণ কানুনগো; (৩) কিরাত বাংলা, সোহেল মো. ফখরুদ-দীন; (৪) প্রবন্ধ, দৈনিক আজাদী; (৫) বঙ্গীয় আইন পরিষদের ইতিহাস; (৬) বাংলা গেজেট, কলকাতা; (৭) ইতিহাস প্রসঙ্গ, সোহেল মো. ফখরুদ্দীন; (৮) সাপ্তাহিক কোহিনুর।

লেখক: ইতিহাস গবেষক ও সংগ্রাহক, সভাপতি, চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র