অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

পটিয়ায় শেষ মূহুর্তের বেচাকেনায় জমজমাট কোরবানির পশুর হাট

0
.

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

শনিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঈদুল আযহা। শেষ মূহুর্তে পটিয়ার বেচাকেনায় জমজমাট হয়ে উঠেছে পশুর বাজার। পাশাপাশি পটিয়ার বিভিন্ন স্হানে, পৌরসভা, পাড়া, মহল্লায় জমে উঠেছে ছোট বড় অনেক পশুর বাজার। এর মধ্যে অনেকেই বাজার থেকে কিনে নিয়েছেন নিজেদের পছন্দের কোবানির পশু। শুরুতে বাজার না জমলেও এবার কিন্তু জমে উঠেছে বাজার। হাট বাজারের পাশাপাশি এবার গরুর দেখা মিলছে খামারে, পাড়া এবং মহল্লায়ও ।

আগে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েক জন পশু বেচাকেনায় জড়িত থাকলেও এখন লাভের আশায় কোরবানিকে টার্গেটকরে উঠতি বয়সের ছেলেরাও সিন্ডিকেট করে পাড়া, মহল্লা এবং এলাকায় পশু ব্যবসায় নেমেছেন। প্রতিবছরই এরকম ছোট ছোট সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। এরা উত্তরবঙ্গ ও পার্বত্য জেলাগুলো থেকে দেশি গরু সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন উপজেলায় নিয়ে আসছে। তাছাড়া পটিয়ার বিভিন্ন উপজেলায় বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামে খামারি, ব্যবসায়ী ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত পশু মওজুত করেছেন। প্রায় প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় ছোট ছোট তাবু খাটিয়ে পশু জড়ো করা হচ্ছে। ফলে কোরবানিতে পশুর সংকট থাকবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া পর্যাপ্ত পশু দেশে থাকায় দামও ক্রেতাদের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

ভারত, মিয়ানমার ও দেশের উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, বগুড়া, কুষ্টিয়া এবং টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের করিডোর দিয়ে ঢুকছে কোরবানির পশু।

পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে এখনো ট্রাকে করে আসছে কোরবানি দেয়ার উপযোগী বিভিন্ন সাইজের গরু। স্থানীয় মৌসুমী পশু ব্যবসায়ীরা এসব গরু সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন বিভিন্ন জেলা থেকে।

.

জানা যায়, পটিয়ায় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে অস্থায়ী তাবু করে মৌসুমী গরু ব্যবসায়ীরা বিক্রয় কেন্দ্র খুলেছেন। প্রতিটি তাবুতে রাখা আছে ২০ থেকে ২০০টি পর্যন্ত গরু। এলাকার অনেকেই হাটবাজারে গিয়ে পশু কেনার ঝামেলা এড়াতে এসব তাবু থেকে দেখে শুনে পছন্দের পশুটি কিনে রাখছেন।

উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সর্বাধিক অস্থায়ী তাবু খাটিয়েছেন পটিয়া পৌরসভার বিভিন্ন ওযার্ডে, উপজেলার হাইদগাও, কেলিশহর, খরনা, কচুয়াই, দক্ষিণ ভূর্ষি, জঙ্গলখাইনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের পাড়া মহল্লায়। এসব তাঁবুতে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সাইজের পশু। মৌসুমী এই ব্যবসায় জড়িতরা বলেছেন পাঁচ সাত জনের সিন্ডিকেট করে তারা এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। কেউ কেউ ঋণ নিয়ে পুঁজি দিয়েছেন। তাদের দাবি এবার তাবুগুলোতে রেখেছেন দেশীয় জাতের গরু।

পটিয়া পৌরসভার নতুন থানার হাটে জমজমাট গরু, মহিষ ও ছাগলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের গরু উঠেছে। এতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বাজারে সবচেয়ে বড় গরুটির মালিক গোবিন্দারখীল এলাকার মোহাম্মদ ইসমাইল তার গরু’র দাম হাকিয়েছিলেন ৩ লাখ টাকা। পরে সেই গরুটি উপজেলার ধলঘাট ইউপির এক সদস্যের কাছে বিক্রি করেছেন আড়াই লাখ টাকা দিয়ে।

পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। তবে অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাদের মুখে মাস্ক নেই, সামাজিক দূরত্বও উধাও। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। গত দুই দিন জেলার কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট থানার হাট, শান্তির হাট। চট্টগ্রাম কক্সবাজার আরকার মহাসড়কের সংযোগস্থল হওয়ায় শান্তির হাটের আজ বৃহস্পতিবার ঘুরে দেখা যায়, সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ছাড়াই হাটে এসেছেন। দু’একজনের মাস্ক থাকলেও কথা বলার সুবিধার্থে মুখ থেকে নামিয়ে রেখেছেন। হাটের প্রবেশ দরজায় রাখা হয়নি হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। হাট কমিটির পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চোখে পড়েনি।

হাটে গরু কিনতে আসেন আবুল কালাম মুখে মাস্ক নেই কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘পকেটে আছে।’

এ হাটে গরু কিনতে আসেন শহিদুল ইসলাম তিনি বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই হাটে কেনাবেচা করতে আসেন। তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোন চিহ্ন নেই তাই নিজেও সর্তক আছি।

শান্তির হাটের ইজারাদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা আছে। কিন্তু মানুষ তা মানছে না। আসলে গ্রামের মানুষ সচেতন না, তাই স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা যাচ্ছে না।

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা বলেন, হাট বাজারের ইজারাদারদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।