অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

জঙ্গি নির্মূল করতে পেরেছি, সেই দাবি করবো না- তথ্যমন্ত্রী

0
.

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,তথ্যমন্ত্রী  বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার জঙ্গি দমন করার ক্ষেত্রে অনেক দেশের চেয়ে অনেক বেশী সফলতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। আমরা জঙ্গি নির্মূল করতে পেরেছি, সেই দাবি আমরা করবো না। তবে জঙ্গি দমন করা সম্ভবপর হয়েছে। জঙ্গি নির্মূল করাও সম্ভব হতো যদি বিএনপি-জামায়াত তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিত।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের জন্য জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল করা যাচ্ছে না।  ২০০৫ সালের এ দিনে দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে ৫শ’র বেশি জায়গায় বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াত সরকার তখন ক্ষমতায় ছিল। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে জঙ্গিরা শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছিল, জঙ্গিরা শক্তিশালী হয়েছিল। জঙ্গিরা সেই শক্তি প্রদর্শন করার লক্ষেই তখন ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছিল।

মন্ত্রী আজ সোমবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর ফয়’স লেক এলাকার বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে “কোভিড কেবিন ব্লক” উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকরা ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে একযোগে বোমা হামলার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

জঙ্গিদের প্রতি বিএনপি-জামায়াতের সেই আশ্রয়-প্রশ্রয় এখনো আছে অভিযোগ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ৫০০ জায়গায় একযোগে যারা বোমা হামলা চালিয়েছিল, তাদের দোসররা বিএনপির জোটের মধ্যে আছে। যারা স্লোগান দেয়, আমরা সবাই তালেবান, বাংলাদেশ হবে আফগান, তারা কিন্তু ২২ দলীয় ঐক্যজোটের মধ্যেই আছে।’

তিনি বলেন, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় যদি জঙ্গিদের না থাকতো তাহলে জঙ্গি নির্মূল করা সম্ভব হতো। যখন কোন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হতো তখন বেগম খালেদা জিয়া এমন কথাও বলেছিলেন, ‘কিছু লোককে ধরে এনে আটকে রাখা হয়, যখন চুল-দাঁড়ি লম্বা হয়, তখন তাদেরকে জঙ্গি বলা হয়।’ এই ধরনের দায়িত্বহীন কথাও তিনি বলেছেন। এভাবে জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা দিচ্ছে।

দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যতটুকু সম্ভব করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। সেটিকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। শুরুতে যেভাবে আশংকা করা হয়েছিল, করোনা ভাইরাসে হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে, রাস্তায় মানুষের লাশ পড়ে থাকবে, হাসপাতালে শয্যা পাওয়া যাবে না- এ ধরনের অনেক আশংকার কথা বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন। কথায় কথায় যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তারাও বলেছিলেন। কিন্তু আল্লাহর রহমতে সেই পরিস্থিতি হয়নি।

চট্টগ্রামের হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় যে পরিমাণ শয্যা আছে, তার অর্ধেকের বেশি খালি আছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরেও একই অবস্থা। করোনায় আমাদের মুত্যুর হার ইউরোপের চেয়ে তো বটেই, এমনকি ভারত-পাকিস্তানের চেয়েও কম রাখতে সক্ষম হয়েছি। যেখানে ভারত ও পাকিস্তানে প্রায় ২ শতাংশ মৃত্যু হার সেখানে আমাদের দেশে ১ দশমিক ২৫ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে উঠানামা করছে। অর্থাৎ আমরা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা আরও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবো আমরা।

‘তবে অনেক দেশে করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার পর দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের শিকার হচ্ছে জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নিউজিল্যন্ডে করোনা শুন্য হয়ে যাওয়ার পর আবার সংক্রমণ শুরু হয়েছে। চীনের উহান ও বেইজিংয়ে করোনা শুন্য হওয়ার পর আবার দেখা দিয়েছে। সুতরাং এ নিয়ে স্বস্তির জায়গায় যাওয়া ঠিক হবে না বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’

চট্টগ্রামে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ যারা নিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে চট্টগ্রামের সন্তান ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জামে সমৃদ্ধ ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল। হৃদরোগের চিকিৎসায় এ রকম বিশেষায়িত হাসপাতাল দেশে আর একটিও নেই। ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল করোনা ইউনিট চালু করায় আমি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। করোনা চিকিৎসায় চট্টগ্রামের অবস্থা এখন অনেক ভালো, ঢাকার চেয়ে খারাপ নয়। এখন যে পরিমাণ আইসিইউ শয্যা আছে সে পরিমাণ রোগী নেই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন, বোর্ড সদস্য ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী, প্রফেসর মো. নুরুল আমিন, জাহাঙ্গীর আলম খাঁন, ডা. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী প্রমূখ।