অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ফটিকছড়ির রুস্তম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহপরিচালিকাকে হত্যার অভিযোগ

0
shirin-pic-01
নিহত শিরিন।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাগান বাজার ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহপরিচারিকাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহ পরিচারিকা শিরিন আক্তার (২৯) এর পিতা তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে কোর্টে মামলা (১৫২/১৬) দায়ের করেছেন। মামলায় চেয়ারম্যান রুস্তম আলী ও তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলামসহ ১১ জনকে আসামী করা হয়েছে।

বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে তা এফআইআর হিসেবে নথিভূক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ওসি ভূজপুরকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। গত ৩ নভেম্বর চীফ জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুন্সি মো. মশিউর রহমান এ আদেশ প্রদান করেন। গত ২৭ অক্টোবর রাতে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলেও তা এতদিন গোপন করে রাখে ঘটনার সাথে জড়িতরা।

মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবি এড.ইমরানুল করিম পারভেজ অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালতে দায়ের করা বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়,২০১১ সালে একই ইউনিয়নের ফুলছড়ি গ্রামের নুরুল আমিনের সাথে বিয়ে হয় শিরিনের। কিছুদিন সংসার করার পর তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এর পর নিহত শিরিন বাগান বাজার ইউপি চেয়ারম্যান রুস্তম আলীর বাড়ীতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতে থাকে।

এর মধ্যে ১নং অভিযুক্ত ব্যক্তি রুস্তম আলীর স্বভাব চরিত্র ভাল না লাগায় সেখান থেকে কাজ ছেড়ে চলে আসতে চায়। কিন্তু রুস্তম আলী প্রভাবশালী হওয়ায় সে সময় শিরিনকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তার বাড়ীতে থাকতে বাধ্য করে। বিষয়টি মাকে অবহিত করেছিলেন শিরিন।

এর কিছু দিন পর রুস্তম আলীর স্ত্রী মারা যাওয়ার পর শিরিনের সাথে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক শুরু করেন রুস্তম। এসময় শিরিনকে স্ত্রীর মর্যাদায় রাখবেন বলেও আশাস্ত করেন।

%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%ae-%e0%a6%86%e0%a6%b2%e0%a7%80-%e0%a6%9b%e0%a6%ac%e0%a6%bf-%e0%a7%a6%e0%a7%a7
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান রুস্তম আলী।

মামলার অভিযোগে আরো জানা যায়,শিরিনকে সেখান থেকে নিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বাদী এবং তাঁর স্ত্রী। কিন্তু তাতেও বাধা দেন চেয়ারম্যান রুস্তম। এরই মধ্যে গত ২৮ অক্টোবর বাদী তার সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে চিকনছড়া এলাকায় গেলে লোক মুখে শুনে যে তার মেয়ে মরে গেছে। লোক মুখে এ খবর শুনার পর নিজের স্ত্রীকে নিয়ে মেয়ের খোজে রুস্তম আলীর ঘওে গিয়ে শিরিনের খোজ করতে থাকে। এসময় রুস্তম আলী বাদীর স্ত্রীকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে বাদী এবং তার স্ত্রীকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় খোয়।

এর পর তার বাইরে বের হলে রুস্তম আলীর কাজের ছেলে মুরালী স্থানীয় চা দোকানে বলতে থাকে যে শিরিন ২৭ অক্টোবর রাতে মারা গেছে। এর পর রুস্তম আলী, তার ছেলে সাইফুল ও অন্যান্য আসামীরা মিলে স্থানীয় আন্দারমানিক বাজারের আলম টেইলার্স থেকে কাপনের কাপড় কিনে রাতের তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে অজ্ঞাতস্থানে শিরিনের লাশ গুম করে ফেলে।

মামলার বাদী শিরিনের সৎ পিতা তাজুল ইসলাম বলেন, শিরিনের স্বাভাবিক মৃত্যু হলে আমরা তার অভিভাবক হিসেবে আমাদেরকে জানানোর কথা। কিন্তু তারা বিষয়টি সম্পূর্ন গোপন রেখে তার মেয়ের লাশ গুম করে। তিনি বলেন, তার মেয়েকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে।

এদিকে এ ব্যাপারে ভূজপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল লতিফ এ ধরনের কোন আদেশের কপি পাননি বলে জানালেও সোমবার চট্টগ্রাম চীফ জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের ৮৪৫ নং স্মারক এবং ভূজপুর থানার জিআরও’র ১৪৬২ নং এমসিসি মুলে উক্ত থানার কনস্টেবল মাঈনুদ্দিন উক্ত মামলার কোটর্ আদেশের কপিটি বুঝে নেন।